বাংলানিউজকে কথাগুলো বলছিলেন, সামাজিক উন্নয়ন সংস্থা রিথিংকের পরিচালক লুলু আল মারজান। তিনি বলেন, দেশের ভাষাশহীদদের প্রতি ওই ছোট্ট শিশুদের ভালোবাসা আর আবেগটা দেখার মতো ছিল।
হ্যাঁ, গল্পটা খুব ছোট। তবে সেই গল্পটাই ছোট্ট শিশুদের হৃদয়ে এঁকে দিল এক বিশালতার স্বপ্ন। এক টুকরো শহীদ মিনার আর তার ইতিহাসের উজ্জ্বল আলোর অনুরণনে ঋদ্ধ হলো রাজধানীর ইন্দিরা রোডের পথশিশুরা।
বুধবার (২০ ফেব্রুয়ারি) এই পথশিশুদের জন্য একটি শহীদ মিনার গড়ে দেয় সামাজিক উন্নয়ন সংস্থা রিথিংক। তবে তা ওই শিশুদের আগ্রহের ফল বলেই জানান তারা। আর এ শহীদ মিনারেই ফুল দিয়ে এবং অমর একুশের গল্প শুনে নিজেদের আরও বড় করার প্রত্যয় নাফিস, রিফাত, জিয়া আর রনির মতো শিশুদের।
বিকেলে শিশুদের চাঁদা তোলার ঘটনায় অনুপ্রাণিত হয়ে তাদের জন্য একটি প্রতীকী শহীদ মিনারের ব্যবস্থা করে দেয় রিথিংক। একুশের প্রথম প্রহরে বুধবার রাতে ছোট্ট শিশুদের সঙ্গেই ওই শহীদ মিনারে ফুল দিয়ে ভাষাশহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানান রিথিংকের সদস্যরা। এসময় তারা শিশুদের ৫২’র একুশে ফেব্রুয়ারি আর প্রভাত ফেরির গল্পও শোনান তারা। শিশুদের সঙ্গে তাদের অভিভাবকেরাও অংশ নেন।
একুশের প্রথম প্রহরেই শহীদ মিনারে ফুল দিতে পেরে আনন্দ প্রকাশ করে ছোট্ট নাফিস বলে, আমরা এভাবে এর আগে কখনো রাতে শহীদ মিনারে ফুল দিতে পারিনি। এবার দিতে পেরে খুব ভালো লাগছে।
রনি বলে, আমরা পথে পথে ঘুরি দেখে আমাদের এখানে কেউ আসতে চাই না। আবার শহীদ মিনারে গেলেও ফুল দিতে দেয় না। তবে আর এমন ফুল দিয়ে আর গল্প শুনে ভালো লাগছে খুব। আমারও ইচ্ছে হচ্ছে ওমন শহীদ হতে, শহীদের মতো বড় হতে, যেনো আমি মরে গেলেও সবাই আমাকে ফুল দিতে আসে!
রিথিংকের পরিচালক লুলু আল মারজান বলেন, একুশ আমাদের সবসময়ই নতুন প্রজন্মকে বড় করার প্রেরণা দেয়। কিন্তু ওরা পথে পথে ঘুরে বা বস্তিতে থাকে বলে ওদের দিকে কেউ এগিয়ে আসে না, এ শিশুদের আবেগের মূল্যায়নটাও হয় না। কিন্তু আমাদের তো একেবারে শুরু থেকেই আসতে হবে। সেখানে সব শিশুই সমান। সবাইকেই আমাদের ইতিহাস ঐতিহ্য সম্পর্কে জানানো উচিত। বাংলা বলা, লেখার জন্য অনুপ্রাণিত করা উচিত। আর এভাবেই তো বাংলার চর্চা বাড়বে, প্রজন্ম এগিয়ে নিয়ে যাবে।
বাংলাদেশ সময়: ০২৪৪ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ২১, ২০১৯
এইচএমএস/ওএইচ/