শহীদ বেদীতে শ্রদ্ধা জানানোর দলে ছিলেন ভিন্ন ভাষাভাষির বিদেশি নাগরিকেরাও। ভাষাশহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে কালো পাঞ্জাবি পরে বেদীতে ফুল দিতে এসেছেন ফ্রান্স, ইতালি, জার্মানি, চীনা, ভারতের পশ্চিমবঙ্গের নাগরিকসহ বিভিন্ন দেশের নাগরিক।
তারা জানান, মাতৃভাষার প্রতি এদেশের মানুষের শ্রদ্ধাবোধ তাদেরকে মুগ্ধ করেছে। এতোটা ধৈর্য নিয়ে নারী, শিশু ও প্রতিবন্ধীরা দাঁড়িয়ে আছে শুধু ফুল দেওয়ার জন্য। ভাষার প্রতি এতোটা শ্রদ্ধা আর কোনো জাতির আছে বলে তাদের জানা নেই। বাংলা ভাষাকে নিজেদের অবিচ্ছেদ্য অংশ মনে করা পশ্চিমবঙ্গের মানুষেরাও আসেন মায়ের ভাষার অধিকার রক্ষায় আত্মোৎসর্গ করা শহীদদের শ্রদ্ধা জানাতে।
ফ্রান্সের প্যারিস থেকে আসা জেরেমি কোডদ্রং বাংলানিউজকে জানান, গত ২০ বছর ধরে বাংলাদেশে আছেন। বর্তমানে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে থেকে বাংলা ভাষা ও জাতীয়তাবাদ নিয়ে পিএইচডি করছেন এবং ফ্রান্সের একটি বিশ্ব বিদ্যালয়ের ভাষা শিক্ষক।
তিনি জানান, আমি বাংলা ভাষার প্রেমে পরে গেছি। পৃথিবীর কোনো দেশ ভাষার জন্য এতো আমি দেখিনি। প্রতিবছর শ্রদ্ধা জানাতে এখানে হাজার হাজার লোক আসেন। তাদের ভাষার প্রতি ভালোবাসা দেখে আমার গর্ভে বুক ভরে উঠে। ভাষার প্রতি এ শ্রদ্ধা প্রেম ভালোবাসা সারাবিশ্বের জন্য উদাহরণ।
ইতালির নাগরিক ফ্রাঙ্কোয়াকে শহীদ বেদীতে খালি পায়ে দাঁড়িয়ে মিনারের দিকে একদৃষ্টিতে তাকিয়ে ছিলেন। পরিচয় দিতেই স্পষ্ট ও দৃঢ়কণ্ঠে জানান, আমি বাংলা বলতে পারি। বাংলা ভাষা ও এদেশের মানুষকে ভালবাসি।
বাংলাদেশের এতো মানুষ মাতৃভাষার প্রতি অনেক গর্ব করে, শ্রদ্ধা জানাচ্ছে, এটা দেখে আমি অনেক খুশি। সাদা শার্ট ও কালো কোট-প্যান্ট পরে কয়েকজন বিদেশিকে দেখে পরিচয় জানতে চালে তারা জানান, তারা চীন থেকে এসেছেন কয়েকদিন আগে। আজ ভাষা দিবসে শহীদ বেদীতে ফুল দিয়ে বাংলা ভাষাকে শ্রদ্ধা জানাতে পেরে প্রত্যেকের চোখেমুখে দেখা যাচ্ছিল উচ্ছ্বাস। ফুল দেওয়া শেষে তারা শহীদ বেদীতে ওঠেন। তারা স্কাউট ও বিএনসিসির স্বেচ্ছাসেবকদের ফুল দিয়ে সাজানো বিভিন্ন নকশা ঘুরে দেখেন।
বাংলাদেশ সময়: ১১৫৪ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ২১, ২০১৯
জিসিজি/এএটি