রাজধানীর চকবাজারের নন্দ কুমার দত্ত রোডের কয়েকটি ভবনে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় মরদেহ নিতে গিয়ে কান্নাভেজা কণ্ঠে এভাবেই বলছিলেন মো. বাবুল নামের এক স্বজন। বাবুল তার ভগ্নিপতি কামাল হোসেনের মরদেহ বুঝে পেয়েছেন।
ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালের মর্গ থেকে বৃহস্পতিবার (২১ ফেব্রুয়ারি) দুপুর ২টার পর থেকে শুরু হয়েছে মরদেহ হস্তান্তর প্রক্রিয়া। তবে শনাক্ত করা মরদেহগুলোর হস্তান্তরের ক্ষেত্রে সরকারি প্রক্রিয়া সম্পন্ন করতে গিয়ে ভোগান্তিতে পড়তে হচ্ছে আহাজারিরত স্বজনদের। মরদেহ বুঝে নিতে দীর্ঘ সময় অপেক্ষা করতে হচ্ছে তাদের।
এদিকে সরকারের পক্ষ থেকে প্রাথমিক পর্যায়ে ২০ হাজার করে টাকা নিহতের পরিবারের সঙ্গে দিয়ে দেওয়ার ঘোষণা এর আগেই দেওয়া হয়েছে। তবে এই টাকার খবর জানেন না মরদেহ গ্রহণকারী স্বজনদের অনেকে। টাকা নিতে আগ্রহীও নন তারা।
নোয়াখালীর সোনাইমুড়ির আব্দুর রহিম দুলালের মরদেহ শনাক্ত করেছেন তার স্বজন বাবু। তবে মরদেহ এখনও পাননি। তিনি জানালেন, প্রাথমিক পর্যায়ে নিহতদের পরিবারকে যে টাকা দেওয়া হচ্ছে সে বিষয়ে তিনি কিছু জানেন না।
রফিকুল ইসলাম শনাক্ত করতে পেরেছেন তার ভাইয়ের মরদেহ। কাঁদতে কাঁদতে প্রায় অজ্ঞান হয়ে যাওয়া রফিকুল ইসলামের স্বাক্ষর ছাড়া মরদেহ হস্তান্তর করবে না। কিন্তু সেখানে রোগীর অন্যান্য স্বজনরা উপস্থিত রয়েছেন। রফিকুল ইসলামের নাম শুরুতে লেখা হয়েছিল বলেই তার স্বাক্ষর দিয়েই নিয়ম অনুসারে মরদেহ নিতে হবে।
এমন পরিস্থিতিতে রফিকুলের আরেক স্বজন বাংলানিউজকে জানান, যার স্বাক্ষর দেওয়ার কথা সে বার বার অজ্ঞান হয়ে যাচ্ছে। তাকে আনতেও পারছি না।
আবার ২০ হাজার টাকা দেওয়া হবে এমন কোনো ঘোষণার কথা তারা জানেনই না। এ বিষয়ে ওই স্বজন বলেন, টাকার ব্যাপারে আমাদের কোনো দাবি নেই। দ্রুত মরদেহ দিলেই হবে।
এদিকে কর্তব্যরত পুলিশরা বলছেন, সরকারি যে নির্দেশনা দেওয়া আছে সে অনুসারেই আমরা কাজ করছি। নিয়ম বহির্ভূত কোনো কাজ করা আমাদের পক্ষে সম্ভব না। আমরাও চেষ্টা করছি দ্রুত মরদেহ হস্তান্তর করতে।
পুরান ঢাকার চকবাজারে ভবনে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় নিহত ৭০ জনের মধ্যে ৪১ মরদেহ শনাক্ত করা হয়েছে। এর মধ্যে দুইজন নারী, দুই শিশু ও ৩৭ জন পুরুষ।
বাংলাদেশ সময়: ১৭১৩ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ২১, ২০১৯
এমএএম/টিএম/আরআর