ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় মেয়র সাঈদ খোকন পুরান ঢাকায় কেমিক্যাল ব্যবসা বন্ধ এবং গুদাম উচ্ছেদের কথা বলেছেন। অন্যদিকে শিল্পমন্ত্রী নুরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ুন বলেছেন, পুরান ঢাকার কেমিক্যাল ব্যবসা বংশ পরম্পরা।
২০১০ সালের ৩ জুন পুরান ঢাকার নিমতলীতে রাসায়নিক গুদামে আগুন ধরে ১২৪ জনের মর্মান্তিক মৃত্যু হয়। ওই ঘটনার ১০ বছর না পেরুতেই বুধবার (২০ ফেব্রুয়ারি) রাতে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডে কমপক্ষে ৭০ জন পুড়ে মারা গেছেন। চকবাজারের নন্দকুমার দত্ত রোডের শেষ মাথায় চুড়িহাট্টা শাহী মসজিদের পাশে ৬৪ নম্বর হোল্ডিংয়ের ওয়াহিদ ম্যানশনে অগ্নিকাণ্ডের সূত্রপাত হয়। আবাসিক ভবনটিতে কেমিক্যাল গোডাউন থাকায় আগুন দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে।
বৃহস্পতিবার (২১ ফেব্রুয়ারি) দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে চকবাজারের অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় উদ্ধার অভিযান শেষ ঘোষণা করে ডিএসসিসি মেয়র সাঈদ খোকন বলেন, পুরান ঢাকা থেকে কেমিক্যাল গোডাউন উচ্ছেদ অভিযান অব্যাহত থাকবে। কোনোভাবেই আর এখানে কেমিক্যাল গোডাউন রাখতে দেবো না।
তিনি বলেন, পুরান ঢাকায় দাহ্য পদার্থের গোডাউন থাকতে দেওয়া হবে না। এজন্য কঠোর থেকে কঠোরতম পদক্ষেপ নেওয়া হবে।
অন্যদিকে বৃহস্পতিবার দুপুরে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের (ঢামেক) বার্ন ইউনিট পরিদর্শন শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে শিল্পমন্ত্রী নুরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ুন বলেন, ‘পুরান ঢাকার কেমিক্যাল ব্যবসা বংশ পরম্পরা। এটাতো বন্ধ করা যাবে না। এরসঙ্গে অনেক কিছু জড়িত। আমি পুরান ঢাকার মানুষ। আমি জানি। ’
নিমতলির ঘটনার প্রায় ১০ বছর পরও কেমিক্যাল গোডাউন সরানো গেলো না কেনো, এমন প্রশ্নর জবাবে মন্ত্রী বলেন, আপনারা কি ভীনগ্রহ থেকে এসেছেন নাকি? আমরা কি ঢাকা শহর গুড়িয়ে দেবো?
তিনি বলেন, ‘তারা (ব্যবসায়ীরা) যেতে চায় না। আমরা শিল্পনগরী গড়ে তুলছি। এটা দেখতে আরো ১০ বছর অপেক্ষা করতে হবে না। আমাদের বাস্তবতা বুঝতে হবে। অর্থনৈতিক প্রবাহ বন্ধ করা যাবে না’।
আবাসিক এলাকায় কেমিক্যাল ব্যবসা বন্ধ হবে কিনা, এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, না। আমরা কাউকে উচ্ছেদ করবো না। তবে তাদের নির্দ্দিষ্ট এলাকায় নেওয়া হবে।
চকবাজারের অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা একদমই ভিন্ন মন্তব্য করে শিল্পমন্ত্রী বলেন, নিমতলির ঘটনা আর চকবাজারের ঘটনা একদম ভিন্ন। এটা কেমিক্যাল সম্পর্কিত কিছুই না। সিলিন্ডার থেকে এটা হয়েছে।
শিল্পমন্ত্রী বলেন, আজকের ঘটনা ভিন্ন। এটা কেমিক্যাল সম্পর্কিত কিছুই না। আমি সরেজমিনে দেখে এসেছি। দিস ইজ ডিফারেন্ট স্টোরি।
মন্ত্রী আরো বলেন, ‘যেখানে ঘটেছে সেটা ছিল একটি রেস্টুরেন্ট। এটা হচ্ছে সিলিন্ডার ব্লাস্ট। ওই এলাকায় গ্যাস স্বল্পতা ছিল। হোটেলে সিলিন্ডারের গ্যাস ব্যবহার করতো। যেখানে ঘটনাটি ঘটেছে সেটা কেমিক্যাল অ্যারিয়া না, এখানে কেমিক্যালের কোনো অস্তিত্ব নেই, কোনো গোডাউনও ছিল না’।
এর আগে সকালে ঘটনাস্থল পরিদর্শনে এসে পুলিশের মহাপরিদর্শক জাবেদ পাটোয়ারীও বলেছেন, পুরান ঢাকা থেকে কেমিক্যাল কারখানা ও গুদাম সরিয়ে ফেলা হবে।
বাংলাদেশ সময়: ১৭২০ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ২১, ২০১৯
জেডএস