ঢাকা, শুক্রবার, ১৪ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৯ নভেম্বর ২০২৪, ২৭ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

‘টাকা লুটের উদ্দেশেই মিসবাউলকে ছুরিকাঘাত করে হত্যা’

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২৩০৪ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ২৪, ২০১৯
‘টাকা লুটের উদ্দেশেই মিসবাউলকে ছুরিকাঘাত করে হত্যা’

সিলেট: ব্যবসার টাকা লুটের উদ্দেশেই সৈয়দ মিসবাউল হোসেনকে বুকে ছুরিকাঘাত করে হত্যা করেছেন রমজান মিয়া (২৪)। তিনি একাই হত্যাকাণ্ড ঘটানোর পর নগদ ১৭ হাজার ৫০০ টাকা নিয়ে পালিয়ে যান। পালিয়ে যাওয়ার সময় আশপাশের দোকানিরা তাকে দেখলেও কেউ আটক করতে পারেননি।

রোববার (২৪ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে সিলেট মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট দ্বিতীয় আদালতের বিচারক মামুনুর রহমান সিদ্দিকীর কাছে নিজেকে জড়িয়ে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দেন তিনি। রমজান কিশোরগঞ্জের নিকলী উপজেলার কারপাশা গ্রামের ওসমান মিয়ার ছেলে।

আদালতে রমজানের স্বীকারোক্তির সত্যতা নিশ্চিত করে সিলেট মেট্রোপলিটন পুলিশের (এসএমপি) শাহপরান (র.) থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আখতার হোসেন বলেন, মিসবাউল হত্যার ঘটনায় দুপুরে আদালতে প্রায় তিন ঘণ্টা স্বীকারোক্তি দিয়েছেন রমজান। ছিনতাইয়ের উদ্দেশে তিনি একাই হত্যার পরিকল্পনা করে বলে আদালতে স্বীকার করেছেন।

রমজানের স্বীকারোক্তির বরাত দিয়ে আদালত ও পুলিশ সূত্র জানায়, খরাদিপাড়া জাপানি বাসার সামনের একটি কলোনীতে ভাড়াটিয়া হিসেবে থাকতো রমজান। মাঝে মধ্যে সে রাজমিস্ত্রির কাজ করতো। কখনো বা রিকশা চালিয়ে দিনাতিপাত করতো। বাকি সময়টুকু বন্ধুদের সঙ্গে আড্ডায় কাটাতো। লিটন নামে এক বন্ধুর সঙ্গে চুরি, ছিনতাইসহ ছোটখাটো অপরাধের পথে জড়িয়েছিল রমজান।

রমজান আদালতকে জানায়, গত বুধবার (২০ ফেব্রুয়ারি) ঘটনার রাতে শহরের খরাদিপাড়া সিদ্দিক কটনমিলে বসে ব্যবসার হিসাব নিকাশ করে টাকা গুণছিলেন মিল ম্যানেজার মিসবাউল। ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের পাশ দিয়ে হেঁটে যাওয়ার সময় তাকে টাকা গুণতে দেখেন। এরপর ছিনতাইয়ের পরিকল্পনা সাজান একাই। ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে ঢোকে টাকা ছিনতাইয়ের চেষ্টাকালে মিসবাউল বাধা দিলে তাকে গলা কেটে ও বুকে ছুরিকাঘাত করে হত্যা করে সাড়ে ১৭ হাজার টাকা নিয়ে পালিয়ে যান।

স্বীকারোক্তিতে রমজান আরও জানায়, ছিনতাইয়ে বাধা দেওয়ায় কটনমিল ম্যানেজার মিসবাউলকে নিজ হাতে খুন করেছেন। হত্যাকাণ্ডের পর পালিয়ে যাওয়ার সময় আশপাশের কয়েকজন ব্যবসায়ী দেখেছেন। তবে তারা তাকে ধরতে পারেননি। তার দেখানো মতে পুলিশ হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত রক্তমাখা ছোরাটি জব্দ করেছে।  

গত বুধবার মধ্যরাতে শহরের শিবগঞ্জ খরাদিপাড়ায় সিদ্দিক কটনমিলে খুন হন প্রতিষ্ঠানটির ম্যানেজার মিজবাউল। তিনি ওই এলাকার মৃত সৈয়দ মোস্তাক হোসেনের ছেলে। তাকে গলা কেটে হত্যার পর ব্যবসার টাকা লুটে নেওয়া হয়।

এ ঘটনায় নিহতের মা মাহবুবা খাতুন বাদী হয়ে অজ্ঞাত আসামি করে থানায় মামলা দায়ের করেন। শাহপরান থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) রাজিব কুমার রায় তাকে আটকের পর জিজ্ঞাসাবাদে হত্যাকাণ্ডের কথা স্বীকার করেন। পরে তাকে হত্যা মামলায় গ্রেফতার দেখিয়ে আদালতে জবানবন্দির জন্য হাজির করা হয়। জবানবন্দি রেকর্ডের পর বিকেল ৩টার দিকে আদালতের নির্দেশে তাকে কারাগারে পাঠানো হয়।

বাংলাদেশ সময়: ১৭৫৭ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ২৪, ২০১৯
এনইউ/আরবি/

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।