তিনি বলেন, আশার কথা হচ্ছে, এ ইস্যুতে রাশিয়া ও চীন তার আগের অবস্থান থেকে অনেকটা সরে এসেছে। সমস্যা সমাধানে দ্বিপাক্ষিক আলোচনার পাশাপাশি আন্তর্জাতিক চাপ প্রয়োগ করতে হবে।
সোমবার (২৪ ফেব্রুয়ারি) বাংলাদেশ চলচ্চিত্র উন্নয়ন করপোরেশন (বিএফডিসি) ডিবেট ফর ডেমোক্রেসি ও এটিএন বাংলা আয়োজিত ইউসিবি পাবলিক পার্লামেন্টে বিতর্ক প্রতিযোগিতার গ্র্যান্ড ফাইনালে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।
অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন ডিবেট ফর ডেমোক্রেসির চেয়ারম্যান হাসান আহমেদ চৌধুরী কিরণ। গ্র্যান্ড ফাইনালে বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটি অব বিজনেস অ্যান্ড টেকনোলজিকে পরাজিত করে বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটি চ্যাম্পিয়ন হয়।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, অনেকেই মনে করেন, জাতিসংঘে কোনও সংকট উত্থাপন করলেই তার সমাধান হয়ে যায়। কিন্তু এ বিষয়ে আমাদের অনেক তিক্ত অভিজ্ঞতা রয়েছে। ১৯৭৮ সালে গঙ্গার পানি বণ্টন নিয়ে আমরা জাতিসংঘে গেলেও ভারত তখন জাতিসংঘের কোনও চাপ ভ্রুক্ষেপ করেনি। ঠিক একইভাবে ইরান, ইরাক ও সিরিয়া সংকটও কিন্তু জাতিসংঘ সুরাহা করতে পারেনি। শান্তিপূর্ণ দেশ হিসেবে আমরা রোহিঙ্গা সংকটের সুন্দর সমাধানে আঞ্চলিক ও আন্তর্জাতিক উভয় ক্ষেত্রে সর্বোচ্চ কূটনৈতিক প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি।
তিনি বলেন, রোহিঙ্গা সংকট নিয়ে আমরা শাখের করাতের মধ্যে আছি। মিয়ানমার মাঝে মধ্যে বিভিন্ন উস্কানি দিলেও আমাদের কথা শোনে। যেমন- তাদের ওয়েবসাইটে আমাদের সেন্টমার্টিন তাদের বলে দাবি করার পর আমরা প্রতিবাদ করলে তা আবার সরিয়ে নেয়। মিয়ানমারকে আমরা একটি ‘সেফ জোন’ তৈরি করার জন্য রাজি করানোর চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি।
সভাপতির বক্তব্যে ডিবেট ফর ডেমোক্রেসির চেয়ারম্যান হাসান আহমেদ চৌধুরী কিরণ বলেন, মিয়ানমার থেকে বাস্তচ্যুত লাখ লাখ রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দিয়ে বাংলাদেশ এক উচ্চ মানবিকতার পরিচয় দিয়েছে। যে গণহত্যার ইতিহাস থেকে লাখ লাখ রোহিঙ্গার জীবনের মুক্তি মিলেছে বাংলাদেশের মানুষের উদারতার কারণে। বাংলাদেশ রোহিঙ্গাদের আশ্রয় না দিলে পৃথিবীতে বড় ধরনের এক ‘গণহত্যা’র ইতিহাস তৈরি হতো। তাই এ সংকট উত্তরণে আমাদের বন্ধুপ্রতীম দেশ ভারত-চীনসহ সার্ক, আসিয়ানভুক্ত দেশগুলোকে নিয়ে পৃথিবীর পরাশক্তি সম্পন্ন দেশগুলোকে একত্রিত করে মিয়ানমারের ওপর আরও চাপ তৈরি করতে হবে।
তিনি বলেন, প্রয়োজনে আন্তর্জাতিক আদালতের মাধ্যমে এ বাস্তচ্যুত মানুষগুলোকে তাদের বাসভূমিতে ফিরিয়ে নেওয়ার আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণের উদ্যোগ নিতে হবে। তবে বাংলাদেশ এখন রোহিঙ্গা সংকট সমাধানে যেভাবে এগুচ্ছে, তা অত্যন্ত সন্তোষজনক। কারণ এ সংকট মোকাবেলা করতে গিয়ে যুদ্ধ-বিগ্রহ হানাহানির পরিবর্তে শান্তিপূর্ণ সমাধানের লক্ষ্যে বাংলাদেশ বিশ্বের বুকে মানবিক রাষ্ট্র হিসেবে পরিচিতি লাভ করেছে।
গ্র্যান্ড ফাইনাল প্রতিযোগিতা শেষে ট্রফি-ক্রেস্টসহ চ্যাম্পিয়ন দল বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটিকে নগদ দুই লাখ টাকা, রানার আপ দল বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটি অব বিজনেস অ্যান্ড টেকনোলজিকে এক লাখ টাকা এবং তৃতীয় স্থান অধিকারী ইস্টার্ন ইউনিভার্সিটি দলকে ৫০ হাজার টাকা পুরস্কার দেওয়া হয়।
উল্লেখ্য, এবারের ইউসিবি পাবলিক পার্লামেন্ট-২০১৮ প্রতিযোগিতায় সরকারি-বেসরকারি মোট ৩২টি বিশ্ববিদ্যালয় অংশগ্রহণ করে।
বাংলাদেশ সময়: ১৯০৩ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ২৪, ২০১৯
টিআর/আরবি/