সোমবার (২৫ ফেব্রুয়ারি) দিনগত রাত ২টার দিকে মেহেন্দিগঞ্জে ও মঙ্গলবার (২৬ ফেব্রুয়ারি) ভোরে কুমারখালীতে এ ‘বন্দুকযুদ্ধের ঘটনা ঘটে।
নিহতদের মধ্যে মেহেন্দিগঞ্জে পুলিশের সঙ্গে ‘বন্দুকযুদ্ধে’ মামুন সরদার (২৭) নামে এক ডাকাত নেতা ও কুমারখালীতে দু’দল মাদকবিক্রেতার মধ্যে ‘বন্দুকযুদ্ধে’ ইমদাদ খন্দকার (৩৮) নামে এক মাদকবিক্রেতা নিহত হন।
নিহত মামুন সরদার বরিশালের হিজলা উপজেলার খুন্না এলাকার মালেক সরদারের ছেলে। নিহত ইমদাদ কুষ্টিয়ার ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় থানার রঞ্জিতপুর গ্রামের কটা খন্দকার ওরফে রাফির ছেলে।
বরিশালের কাজীরহাট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি-তদন্ত) আব্দুল খালেক বাংলানিউজকে জানান, গত ৫ ফেব্রুয়ারি কাজীরহাট থানায় স্থানীয় পান্না মীরের বাড়িতে ডাকাতির ঘটনায় একটি মামলা দায়ের হয়। যে মামলার সূত্র ধরে কয়েকদিন আগে রাসেল হাওলাদার নামে একজনকে আটক করা হয়।
পুলিশ ও আদালতে রাসেলের দেওয়া স্বীকারোক্তি অনুযায়ী মামুন নেতৃত্বে ওই ডাকাতি সংগঠিত হয়। ডাকাতির মালপত্রও তার কাছে রয়েছে। এ সূত্র ধরে পুলিশ অভিযানে নেমে সোমবার রাত ৮ টা দিকে মুলাদী ব্রিজ এলাকা থেকে মামুনকে গ্রেফতার করে। পরে তার দেওয়া তথ্যানুযায়ী কাজীরহাট থানা এলাকার কাজীরাবাদ ডিগ্রি কলেজস্থ মনিরের ইটভাটার পশ্চিমপাশে ডাকাতির মালপত্র উদ্ধারের অভিযানে যায় পুলিশ।
রাত ২টার দিকে অভিযানের সময় পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে মামুনের সহযোগীরা পুলিশকে লক্ষ্য করে গুলি চালায়। এ সময় পুলিশ আত্মরক্ষায় পাল্টা গুলি চালায়। এরমধ্যে মামুন পালিয়ে যাওয়ার জন্য দৌড় দিলে তিনি গুলিবিদ্ধ হয়ে গুরুতর হয়। পরে তাকে মুলাদী হাসপাতালে নিলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।
কাজীরহাট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আব্দুল খালেক আরও জানান, ঘটনাস্থল থেকে একটি ওয়ান শুটার, একটি পাইপগান, দুই রাউন্ড রাইফেলের গুলি, দুই রাউন্ড পিস্তলের গুলি, বেশকিছু গুলির খালি খোসা, দুইটি রামদা, একটি শাপল, ছয়টি মুখোশ উদ্ধার করা হয়েছে।
মরদেহ ময়না তদন্ত ও এ ঘটনায় অস্ত্র আইন, পুলিশের ওপর হামলা, মামুন নিহত হওয়ার ঘটনায় তিনটি মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে বলে জানিয়েছেন ওসি।
বরিশালের পুলিশ সুপার (এসপি) সাইফুল ইসলাম বাংলানিউজকে জানান, নিহত মামুনের বিরুদ্ধে বিভিন্ন থানায় ডাকাতিসহ একাধিক মামলা রয়েছে।
এদিকে কুমারখালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এ কে এম মিজানুর রহমান বাংলানিউজকে জানান, মঙ্গলবার ভোরে উপজেলার আদাবাড়িয়া এলাকার চেচুয়া বিলের পাশে দু’দল মাদকবিক্রেতাদের মধ্যে ‘বন্দুকযুদ্ধ’ হচ্ছিল। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গেলে তারা পুলিশকে লক্ষ্য করে গুলি ছোড়েন। এসময় পুলিশও পাল্টা গুলি চালায়। একপর্যায়ে তারা পিছু হটলে ঘটনাস্থলে গুলিবিদ্ধ অবস্থায় ইমদাদকে দেখতে পায় পুলিশ। এ অবস্থায় ইমদাদকে উদ্ধার করে ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালে নিলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন। নিহতের মরদেহ ময়না তদন্তের জন্য ওই হাসপাতালের মর্গে রাখা হয়েছে।
পুলিশের ধারণা, মাদক ব্যবসা নিয়ে জটিলতার কারণে দু’পক্ষের মধ্যে ‘বন্দুকযুদ্ধের ঘটনা ঘটে থাকতে পারে। ইমদাদের বিরুদ্ধে জেলার বিভিন্ন থানায় মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে বেশ কয়েকটি মামলা রয়েছে। ঘটনাস্থল থেকে একটি বিদেশি পিস্তল, তিন রাউন্ড গুলি ও ১শ’ পিস ইয়াবা জব্দ করেছে পুলিশ।
বাংলাদেশ সময়: ১০১৭ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ২৬, ২০১৯
এএটি