ঢাকা, বুধবার, ৯ আশ্বিন ১৪৩২, ২৪ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ০১ রবিউস সানি ১৪৪৭

জাতীয়

বনানী ট্র্যাজেডি: অজ্ঞাত ব্যক্তির কথা শুনলে মরে যেতাম

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৬:৩১, মার্চ ৩০, ২০১৯
বনানী ট্র্যাজেডি: অজ্ঞাত ব্যক্তির কথা শুনলে মরে যেতাম মেসবাহউদ্দিন রুবেল

ঢাকা: রাজধানীর বনানী এফ আর টাওয়ারের অগ্নিকাণ্ডের মৃত্যুকূপ থেকে ফিরে এসেছেন ডার্ড গ্রুপের সিনিয়র এক্সিকিউটিভ (অডিট) মেসবাহউদ্দিন রুবেল।

শুক্রবার (২৯ মার্চ) রাতে রাজধানীর বর্ধিত রূপনগরের নিজ বাসায় বাংলানিউজের সঙ্গে আলাপকালে সেই সময়ের ভয়াবহ পরিস্থিতির কথা বর্ণনা করেছেন রুবেল। শুধু নিজে প্রাণ নিয়ে ফেরেননি, প্রাণ বাঁচাতে সাহায্য করেছেন অনেক সহকর্মীকেও।

 

রুবেল বলেন, ভবনে অন্যদিনের মতোই কাজে ব্যস্ত ছিল‍াম। হঠাৎ করে হৈ-হুল্লোড় শুরু হয়। ততক্ষণে বিদ্যুৎও চলে যায়। চারিদিকে অন্ধকার। শুধু কান্নার শব্দ ভেসে আসছে। আগুন লেগেছে টের পেয়ে সবাই দিকবিদিক ছোটাছুটি করছেন। হঠাৎ অপরিচিত একজন মানুষ এসে বললো, অ‍াপনারা কেউ বের হবেন না, দরজা বন্ধ করে ভেতরে থাকুন, তাহলে আগুন ভেতরে প্রবেশ করবে না।

ঠিক সেই মুহুর্তে সিদ্ধান্তহীনতায় পড়ে গেলাম। ততক্ষণে অফিসের সহকর্মী ইউসুফ বের হয়ে গেছেন। সেই কঠিন পরিস্থিতিতে ইউসুফ ফোন দিলে সে অফিসের ছাদে যেতে বলেন। ইউসুফ ছাদে পৌঁছে গেছেন। তাৎক্ষণিক মোবাইল আর মানিব্যাগ সঙ্গে নিয়ে দ্রুত উপরে যেতে থাকি। অজ্ঞাত ব্যক্তির পরামর্শ শুনলেই মরে যেতাম।  ওই ব্যক্তির কথা মতো অনেকেই রুমের মধ্যে থেকে ছিলেন। তাদের ভাগ্যে কি হয়েছে বলতে পড়বো না। তবে ওই ব্যক্তির কেন এমন পরামর্শ দিলেন কিছুই বুঝলাম না।

১৪ তলা থেকে ১৯ তলায় যাওয়ার পর মানুষের ভিড়ে আর এগোতে পারছিলাম না। অনেক মানুষের কান্নায় তখন আকাশ ভারি হয়ে উঠেছে। একটা পর্যায়ে ছাদে যাই, তখন নারী সহকর্মীরা পাশের আহমেদ টাওয়ারে যেতে পারছিলেন না। তাদের পার হতে সাহায্য করি। পরে আমরা পাশের টাওয়ারের সিঁড়ি দিয়ে নিরাপদে নেমে আসি।

রুবেল বলেন, নিচে এসে অফিসের কিছু সহকর্মীদের সঙ্গে যোগাযোগ করি, যারা অফিসে আটকা পড়েন। তখনও তারা সিদ্ধান্তহীনতায় ভুগছিলেন। তখন আমি তাদের লাফিয়ে না পড়ার পরামর্শ দেই। উদ্ধার কর্মীরা আপনাদের নিরাপদে উদ্ধার করবেন বলে বুঝিয়েছি।

এ কর্মকর্তার ভাষ্য, নিচে এসে তিনি সাউথইস্ট ইউনিভার্সিটির স্বেচ্ছাসেবকদের সঙ্গে শৃঙ্খলা রক্ষায় যোগ দেন। তিনি বলেন, এ দুর্যোগ মুহূর্তে উৎসুক মানুষের ভিড় সামলাতে সাউথইস্ট ইউনিভার্সিটির শিক্ষার্থীরা অনন্য দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন। বিকেল ৫টা পর্যন্ত সেচ্ছাসেবী হিসেবে কাজ করেন বলেও জানান রুবেল।  

রুবেল বলেন, শুকরিয়া, এ জীবন ফিরে পাবো বলে আশা ছেড়ে দিয়েছিলাম। কিন্তু মহান আল্লাহর অশেষ রহমতে জীবন নিয়ে ফিরে এসেছি।

সবশেষ তথ্য অনুযায়ী বৃহস্পতিবার (২৮ মার্চ) দুপুরে এফ আর টাওয়ারে লাগা অগ্নিকাণ্ডে ২৫ জন মানুষ প্রাণ  হারিয়েছেন। আহত হয়েছেন বহুলোক। আহতরা বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছেন।

বাংলাদেশ সময়: ২১০০ ঘণ্টা, মার্চ ২৯, ২০১৯
টিএম/এমএমআই/এমআইএস/ওএইচ/

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

জাতীয় এর সর্বশেষ