জ্যেষ্ঠ শিক্ষিকাকে জুনিয়র এক শিক্ষিকা শিক্ষার্থী ও স্থানীয়দের সামনে মারধরের বিষয়টি নৈতিকতার অবক্ষয় বলে দাবি করেছে স্থানীয়রা। এ ঘটনায় তারা বিচার দাবি করেছেন।
এদিকে উপজেলা শিক্ষা কার্যালয়ে বিষয়টি জানানোর সঙ্গে সঙ্গে তদন্ত করে প্রতিবেদন জেলা শিক্ষা কার্যালয়ে জমা দিয়েছে।
বরিশাল উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা রফিকুল ইসলাম বাংলানিউজকে সত্যতা নিশ্চিত করেছেন। আর লিখিত অভিযোগ পাওয়ার পরপরই দোষী ওই শিক্ষিকাকে সাময়িক বরখাস্ত করে, তার বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে বলে জানিয়েছেন জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা মো. আবদুল লতিফ মজুমদার।
জানা যায়, মুলাদী উপজেলার কাজিরচর ইউনিয়নের ৯৩ নম্বর পশ্চিম কমিশনারচর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে গত শনিবার (৭ ডিসেম্বর) বিকেল ৩টার দিকে পরীক্ষা চলাকালীন সহকারী জ্যেষ্ঠ এক শিক্ষিকার সঙ্গে তুচ্ছ ঘটনা নিয়ে বাগবিতণ্ডা হয় অপর এক সহকারী জুনিয়র শিক্ষিকার। এক পর্যায়ে শ্রেণি কক্ষের দরজা বন্ধ করে হঠাৎ করেই জ্যেষ্ঠ শিক্ষিকাকে মারধর করে সহকারী জুনিয়র ওই শিক্ষিকা। জ্যেষ্ঠ শিক্ষিকার চিৎকার শুনে বিদ্যালয়ের শিক্ষিকাসহ আশপাশের লোকজন জড়ো হন। এ সময় পুনরায় সবার সামনে জ্যেষ্ঠ শিক্ষিকাকে মারধর করেন জুনিয়র শিক্ষিকা।
এ ঘটনা স্থানীয় কোনো এক ব্যক্তি তার মোবাইল ফোনে ভিডিও করে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে দেন। সেই ভিডিওতে দেখা গেছে জুনিয়র ওই শিক্ষিকা জ্যেষ্ঠ শিক্ষিকাকে উপুর করে দুই পায়ের মধ্যে আটকে ধরেছেন এবং এক হাত দিয়ে মাথা চেপে ধরে অন্য হাত দিয়ে একের পর এক থাপ্পর দিয়ে যাচ্ছেন। এ সময় অন্য এক নারী এসে তাদের ছাড়িয়ে দেওয়ার চেষ্টা করছেন এবং বিদ্যালয়ের শিশু শিক্ষার্থীরা এ দৃশ্য দাঁড়িয়ে দেখছে।
বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক সিদ্দিকুর রহমান বাংলানিউজকে বলেন, মারধরের ঘটনার পর স্থানীয়রা আহত জ্যেষ্ঠ শিক্ষিকাকে হাসপাতালে নিয়ে যায়। পরে খবর পেয়ে তিনিও হাসপাতালে যান এবং বিষয়টি উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তাকে অবহিত করেন। তিনি সহকারী শিক্ষা কর্মকর্তাকে পাঠিয়ে বিষয়টি তদন্ত করেছেন।
এদিকে, এ বিষয়ে আহত শিক্ষিকা থানায় লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন।
তিনি বলেন, সহকারী জুনিয়র ওই শিক্ষিকা চলতি বছরের মার্চে এ বিদ্যালয়ে আসেন। তার বাড়ি মুলাদী উপজেলায় হলেও থাকেন বরিশালে। তিনি বিদ্যালয়ে এলেও অনেক বিলম্ব করে আসেন। তার ইচ্ছে মতো চলার কারণে শিক্ষা অফিসকে এর আগেও জানানো হয়েছিল। এসব বিষয়ে তাকে কিছু বললে তিনি রেগে যান এবং কারো সঙ্গেই সন্তোষজনক আচরণ করে না। এমনকি এর আগে আমার বিরুদ্ধেও তিনি বিভিন্ন জায়গায় অভিযোগ দিয়েছিলেন। যার তদন্তও শিক্ষা অফিস করেছে।
এ বিষয়ে অভিযুক্ত সহকারী জুনিয়র ওই শিক্ষিকা বাংলানিউজকে বলেন, বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ও জ্যেষ্ঠ শিক্ষিকার অপরাধের বিষয়ে তিনি শিক্ষা অফিসে অভিযোগ করেছেন।
বাংলাদেশ সময়: ১৬০৭ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ১০, ২০১৯
এমএস/আরআইএস/