একইসঙ্গে এই গণহত্যার জন্য সু চি ও মিয়ানমারের সেনা কমান্ডারদের জবাবদিহিতার আহ্বানও জানান তারা।
এক যৌথ বিবৃতিতে সু চির প্রতি এই আহ্বান জানায় তারা।
বিবৃতিতে তারা বলেন, শান্তিতে নোবেল বিজয়ী হিসেবে আমরা রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে সংঘটিত হওয়া গণহত্যাসহ অপরাধগুলো প্রকাশ্যে স্বীকার করার জন্য নোবেলজয়ী অং সান সু চির প্রতি আহ্বান জানাই। আমরা গভীরভাবে উদ্বিগ্ন যে, এই নৃশসংসতায় নিন্দা জানানোর পরিবর্তে সেটা অস্বীকার করেছেন সুচি।
এর আগে রোহিঙ্গাদের প্রতি নৃশংসতার অভিযোগে ২০১৯ সালের নভেম্বরে নেদারল্যান্ডসে অবস্থিত জাতিসংঘের সর্বোচ্চ আদালত ‘ইন্টারন্যাশনাল কোর্ট অব জাস্টিস’-এ (আইসিজে) মিয়ানমারের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করে পশ্চিম আফ্রিকার দেশ গাম্বিয়া।
আন্তর্জাতিক আদালতে ৪৬ পৃষ্ঠার এক অভিযোগপত্র দেয় দেশটি। সেখানে তারা মিয়ানমারের বিরুদ্ধে রোহিঙ্গাদের গণহত্যা, ধর্ষণ ও উচ্ছেদের অভিযোগ আনে।
মঙ্গলবার (১০ ডিসেম্বর) শুরু হয় ওই মামলার শুনানি। যা চলবে বৃহস্পতিবার (১২ ডিসেম্বর) পর্যন্ত। মিয়ানমার ও গাম্বিয়া, দুই দেশের প্রতিনিধিদলই এতে অংশ নেয়। প্রথম দিনে (মঙ্গলবার) আদালতে হাজির ছিলেন মিয়ানমারের স্টেট কাউন্সিলর অং সান সু চিও। বুধবার (১১ ডিসেম্বর) দ্বিতীয় দিনের মতো চলছে মামলার শুনানি।
নোবেলজয়ীরা বলেন, রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে গণহত্যা চালানোর ঘটনায় মিয়ানমারকে দায়ী করার জন্য এই পদক্ষেপ গ্রহণে আমরা গাম্বিয়ার প্রশংসা করি।
বিবৃতিতে আরও বলা হয়, শান্তির মানুষ হিসেবে আমরা রাখাইন রাজ্যে রোহিঙ্গাদের নিয়মতান্ত্রিক বৈষম্য মোকাবিলা ও রোহিঙ্গাদের জাতীয়তা, ভূমির মালিকানা, আন্দোলনের স্বাধীনতা এবং অন্যান্য মৌলিক অধিকার নিশ্চিত করার আহ্বান জানাই। আমরা সু চিকে নৈতিক দায়িত্ব পালনের এবং তার নজরদারির অধীনে সংঘটিত গণহত্যার স্বীকৃতি ও নিন্দা জানাতে অনুরোধ করছি।
বিবৃতিতে সই করেছেন, শান্তিতে নোবেলজয়ী ইরানের শিরিন ইবাদি, লাইবেরিয়ার লেমাহ গবোই, ইয়েমেনের তাওয়াক্কুল কার্মান, উত্তর আয়ারল্যান্ডের মাইরেড মাগুয়ের, গুয়েতেমালার রিগোবার্টা মেনচ তুম, যুক্তরাষ্ট্রের জোডি উইলিয়ামস, ভারতের কৈলাশ সত্যার্থী ও বাংলাদেশের ড. মুহাম্মদ ইউনূস।
রাখাইনে মিয়ানমার সেনাবাহিনীর অত্যাচারের মুখে ২০১৭ সালের আগস্টে বাংলাদেশে পালিয়ে আসে প্রায় সাড়ে সাত লাখ রোহিঙ্গা। এরও আগে থেকে কয়েক ধাপে বাংলাদেশে আশ্রয় নেয় চার লাখেরও বেশি রোহিঙ্গা।
তবে ২০১৭ সালে মিয়ানমার সেনাবাহিনী যে অভিযান চালায় সেটাকে ‘জাতিগত নিধন’ ও ‘হত্যাযজ্ঞ’ আখ্যা দেয় জাতিসংঘ, অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনালসহ বেশকিছু আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থা।
বাংলাদেশ সময়: ১৫৫০ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ১১, ২০১৯
এসএ/