ঢাকা, সোমবার, ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ২৩ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

আসামে জামদানির শো-রুম খোলা হবে

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২০৫২ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ১৩, ২০১৯
আসামে জামদানির শো-রুম খোলা হবে হেরিটেজ উইন্টার কার্নিভালের প্রদর্শনী, ছবি: জিএম মুজিবুর

ঢাকা: বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি বলেছেন, ন্যায্যমূল্যে জামদানি শাড়ি বিক্রি করতে ভারতের আসামের রাজধানী শহরে একটি শো-রুম খোলা হবে। এ বিষয়ে বাণিজ্য মন্ত্রণালয় ইতিমধ্যে কাজও শুরু করেছে।

শনিবার (১৩ ডিসেম্বর) মহান বিজয় দিবস ও জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানে জন্মশতবার্ষিকী উপলক্ষে হেরিটেজ উইন্টার কার্নিভালের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন। রাজধানীর গুলশান লেকপার্কে দুইদিনের এই উৎসবের আয়োজন করে বাংলাদেশ হেরিটেজ ক্রাফট ফাউন্ডেশন।

বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, কিছুদিন আগে আমি আসামের রাজধানীতে গিয়েছিলাম। সেখানে আমাদের কমার্শিয়াল কাউন্সিলর বারবার বলছিলেন এই শহরে (আসাম) ভীষণ জনপ্রিয় জামদানি শাড়ি। খুবই জরুরি এখানে একটি শো-রুম করা।

টিপু মুনশি বলেন, বিভিন্নভাবে যাওয়ার কারণে যে শাড়িটার দাম বাংলাদেশে তিন হাজার টাকা, সেটা এখানকার মানুষ কিনে নয় থেকে ১০ হাজার টাকা দিয়ে। আমরা যদি আসাম শহরে একটি শো-রুম খুলতে পারি, তাহলে সেখানে পাঁচ থেকে ছয় হাজার টাকার মধ্যেই জামদানি শাড়ি দিতে পারব। এ বিষয়ে বাণিজ্য মন্ত্রণালয় পদক্ষেপ নিয়েছে। আসামের রাজধানীতে একটি শো-রুম চালু করতে পারি।

তিনি বলেন, একটি সময় ছিল যখন একটি মসলিন শাড়ি ম্যাচের বাক্সে রাখা যেত। আপনারা যে বিষয়ে কাজ করেন, তার সঙ্গে জড়িয়ে আছে আমাদের বাঙালির ঐতিহ্য ও চেতনা। একটা সময় আমাদের মানুষ হাতের কাজের দক্ষতা দেখিয়েছে। আজও তার ধারাবাহিকতা আছে। তবে সময়ে ব্যবধানে বেশি উজ্জ্বল নয়। আমাদের ফিরে আসা দরকার। যে মানুষ তার ঐতিহ্য ভূলে যায়, তাদের অবসস্থানও নড়বড়ে হয়ে যায়। আমাদের সামনের দিকে এগোতে হবে ঐতিহ্যকে সঙ্গে নিয়ে। ঐতিহ্যের ওপর ভর করেই সামনের দিন চলতে হবে। পুরো ভারতবর্ষজুড়ে হাতের কাজ, মাটির তৈরি নানা রকম জিনিসে বাঙালিদের অবস্থান সবার উপরে রয়েছে। ভারতবর্ষ জুড়েই আমাদের টাঙ্গাইলের শাড়ি।
হেরিটেজ উইন্টার কার্নিভালের প্রদর্শনী, ছবি: জিএম মুজিবুরবিশেষ অতিথি চীনা দূতাবাসের কনস্যুলার ইয়াং হেলান বলেন, বাংলাদেশের সঙ্গে চীনের ৪৫ বছরের সর্ম্পক। উভয় দেশ ব্যবসা-বাণিজ্য ছাড়াও বিভিন্ন সংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডের মাধ্যমে সর্ম্পক বজায় রেখেছে।

গুলশান সোসাইটির সভাপতি সাখাওয়াত আবু খায়ের মোহাম্মদ বলেন, ১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বর আমরা সত্যিকারের স্বাধীনতা পেয়েছি। মসলিন শাড়ি হারিয়ে গেছে। কারণ শাড়ি বুননের টাকা দিয়ে এখন সংসার চলে না। জামদানি, মসলিন শাড়ির ঐতিহ্য বাঁচিয়ে রাখতে সবারই উচিত বছরে একটি শাড়ি হলেও কেনা। এতে আমাদের তাঁতশিল্প টিকে থাকবে।
  
স্বাগত বক্তব্যে বাংলাদেশ হেরিটেজ ক্রাফট ফাউন্ডেশনের সভাপতি টুটলী রহমান বলেন, ৩০ বছর আগে যেসব তাঁতপণ্য পাওয়া যেত, এখন সেটি আর নেই। আমাদের ঐতিহ্যবাহী তাঁতশিল্পকে বাঁচিয়ে রাখতে হলে তাঁতীদের সহযোগিতা ও পুনর্বাসনের ব্যবস্থা করতে হবে।

প্রতিদিন সকাল ১০টা থেকে বিকেল সাড়ে চারটা পর্যন্ত সর্বসাধারণের জন্য উন্মুক্ত থাকবে এই উৎসব। শেষ হবে শনিবার (১৪ ডিসেম্বর)। এর প্রদর্শনীতে চিত্রশিল্পী জামান হোসেন তুলির আঁচড়ে বাংলাদেশের ইতিহাস তুলে ধরেন। এছাড়া প্রদর্শন করা হয়েছে হাতে তৈরি কম্বল, পাটপণ্য, দৃষ্টি প্রতিবন্ধীদের হাতে তৈরি পণ্য, নকশী কাঁথা, বেনারসিসহ বিভিন্ন কারুপণ্য।

বাংলাদেশ সময়: ১৫৫০ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ১৩, ২০১৯
এসই/টিএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।