ঢাকা, সোমবার, ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ২৩ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

উপেক্ষিতই রয়ে গেলেন ধনবাড়ীর শহীদ বুদ্ধিজীবী মুহাম্মদ আখতার

উপজেলা করসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১১৩০ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ১৫, ২০১৯
উপেক্ষিতই রয়ে গেলেন ধনবাড়ীর শহীদ বুদ্ধিজীবী মুহাম্মদ আখতার

মধুপুর (টাঙ্গাইল): গত ৪৮ বছর ধরেই সরকারিভাবে উপেক্ষিত মুক্তিযুদ্ধে শহীদ টাঙ্গাইলের ধনবাড়ির বিশিষ্ট বুদ্ধিজীবী মুহাম্মদ আখতার। বুদ্ধিজীবী দিবসে পারিবারিকভাবে আয়োজিত মিলাদ মাহফিল ও ক্ষুদ্র পরিসরে কাঙালি ভোজের মধ্য দিয়েই তাকে স্মরণ করে আসছে স্বজনরা। 

প্রতিবারের মতো এবারও শনিবার (১৪ ডিসেম্বর) বাদ আছর মুহাম্মদ আখতার স্মরণে এলাকাবাসীদের সঙ্গে করে স্থানীয় মসজিদে মিলাদ ও দোয়ার আয়োজন করে শহীদ এ বুদ্ধিজীবীর পরিবার।  

অন্যদিকে উপজেলা প্রশাসনের উদ্যোগে ধনবাড়ী সরকারি কলেজ মিলনায়তনে শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবসের কর্মসূচি পালিত হলেও সেখানে মুহাম্মদ আখতারকে স্মরণ করা হয়নি।

মুহাম্মদ আখতারকে বছরের পর বছর এভাবে উপেক্ষা করে চলায় অভিমান ও ক্ষোভের শেষ নেই তার পরিবারে।  

শহীদ এ বুদ্ধিজীবির ছোট ভাই আশরাফ হোসেন জানান, সরকারিভাবে বুদ্ধিজীবী দিবস পালনের বিশেষ নির্দেশনা আছে। অথচ প্রশাসনিকভাবে এটি পালনের খবর তাদের জানানো হয় না। এবারও প্রশাসন বুদ্ধিজীবী দিবসের কর্মসূচি পালন করেছে। কিন্তু শহীদ পরিবারের সদস্য হিসেবে আমাদের জানানো হয়নি। গত ৪৮ বছর ধরেই শহীদ বুদ্ধিজীবী মুহাম্মদ আখতার অবহেলিত।  

এ ব্যাপারে ধনবাড়ী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আরিফা সিদ্দিকার দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে তিনি জানান, বুদ্ধিজীবী দিবসের সরকারি নির্দেশনা অনুযায়ী ধনবাড়ী সরকারি কলেজ মিলনায়তনে কর্মসূচি পালিত হয়েছে। তিনি এর সভাপতিত্ব করেছেন।

উত্তর টাঙ্গাইলের একমাত্র শহীদ বুদ্ধিজীবী সাংবাদিক মুহাম্মদ আখতার ময়মনসিংহের আনন্দমোহন কলেজে ছাত্রাবস্থায় ছড়াকার হিসেবে আত্মপ্রকাশ করেন। সে সময়ই তিনি সাংবাদিকতা পেশায় যুক্ত হন। ঢাকায় দৈনিক ইত্তেফাক’র সংশোধনী বিভাগে চাকরিও করেন তিনি। পরবর্তীতে মুহাম্মদ আখতার ইস্টার্ন প্রিন্টিং অ্যান্ড প্যাকেজিং লিমিটেডে ম্যানেজার হিসেবে যোগ দেন। সেখান থেকে তার ব্যবস্থাপনাতেই প্রকাশিত হয় দেশের প্রথম সাপ্তাহিক ম্যাগাজিন ‘ললনা’। একই সময়ে মুনির চৌধুরীর বাংলা টাইপ রাইটারের সংস্কার ও উন্নতি সাধনে তিনি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখেন।  

মুক্তিযুদ্ধের সময় মুহাম্মদ আখতার প্রত্যক্ষভাবে মুক্তিযোদ্ধাদের সহযোগিতা করেন। ১৯৭১ সালের ১০ ডিসেম্বর রাত ৯ টায় রাজাকার ও শান্তি কমিটির লোকজন তাকে ৪২/৪৩ পুরানা পল্টনের বাসা থেকে ধরে নিয়ে যায়। স্বাধীনতার পরপরই ১৮ ডিসেম্বর রায়ের বাজার বধ্যভূমিতে অন্য বুদ্ধিজীবীদের লাশের সঙ্গে গুলিবিদ্ধ ও হাত-পা বাঁধা অবস্থায় তার লাশ পাওয়া যায়। পরের দিন রায়ের বাজার বধ্যভূমিতেই তাকে সমাহিত করা হয়।  

বাংলাদেশ সময়: ০৬২৮ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ১৫, ২০১৯ 
এইচজে 

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।