সাভার (ঢাকা): সাভারের আশুলিয়ায় একটি পোশাক কারখানার সামনে মৃত স্বামী মো. নজরুল ইসলামের (৫৫) মরদেহ নিয়ে বিচার ও ক্ষতিপূরণের দাবিতে অবস্থান করছেন রহিমা নামে এক মধ্য বয়সী নারী।
রোববার (০৩ জানুয়ারি) সকাল থেকে এখন পর্যন্ত আশুলিয়ার পলাশবাড়িতে অবস্থিত স্কাইল্যান পোশাক কারখানার সামনে অবস্থান করছেন তিনি।
এর আগে ভোর ৪টার দিকে পলাশবাড়ীতে ভাড়া বাসায় মৃত্যু হয় নজরুল ইসলামের। নজরুল ইসলাম শরীয়তপুরের নড়িয়া থানার বাসিন্দা। তিনি স্কাইল্যান গ্রুপে ১২ বছর ধরে গাড়িচালক হিসেবে কর্মরত ছিলেন।
নিহতের স্ত্রী রহিমা বাংলানিউজকে জানান, গত কয়েক মাস ধরে তার স্বামীর বুকে ব্যথা অনুভব হচ্ছিল। চিকিৎসক দেখানো হলে তার বুকে পানি জমেছে বলে প্রথমে ১৫ দিন বিশ্রামে থাকতে বলা হয়। কিন্তু কারখানায় ছুটি চাওয়া হলে তাকে ছুটি না দিয়ে কাজ করতে বলা হয়। পরে গত ২৯ ডিসেম্বর তিনি গুরুতর অসুস্থ হয়ে কারখানা কর্তৃপক্ষের কাছে ছুটির আবেদন করলেও ছুটি পাননি। উল্টো কারখানার কর্মকর্তারা তাকে চাকরি ছেড়ে দিতে বলেন। পরে আজ ভোর ৪টার দিকে বাসার টয়লেটে স্ট্রোক করলে ঘটনাস্থলেই তিনি মারা যান।
রহিমার অভিযোগ, তার স্বামীকে কারখানা থেকে ছুটি দেওয়া হলে ভালোভাবে চিকিৎসা করাতে পারতেন। এছাড়া চিকিৎসক বিশ্রাম নিতে বলেছিলো সেটা করা হলে তার স্বামী হয়তো বেঁচে থাকতেন। এ ঘটনার জন্য পুরো দায় কারখানা কর্তৃপক্ষের।
এসময় তিনি কান্না জড়িত কণ্ঠে বাংলানিউজকে বলেন, আমি এখন বিধবা হয়ে গেলাম। দুই সন্তান নিয়ে কোথায় যাবো কি করবো। তাই কারখানার সামনে লাশ নিয়ে বসে আছি। আমি এর বিচার চাই। আমি আমার স্বামীকে আর পাবো না তবে আর কারো বুক যেন এভাবে খালি না হয়।
এ বিষয়ে কারখানার প্রশাসন বিভাগের জেনারেল ম্যানেজার আরাফাত হোসেন বাংলানিউজকে বলেন, আসলে তার স্বামীর হঠাৎ করেই মৃত্যু হয়েছে। রহিমা কারখানার সামনে আসার পরে আমরা নজরুলের সব পাওনাদি বুঝিয়ে দিয়েছি।
অন্যদিকে কারখানার বড় গাফলতির কথা উল্লেখ করে শ্রমিক নেতা সারোয়ার হোসেন বাংলানিউজকে বলেন, বিষয়টি নিয়ে কারখানা কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আমরা কথা বলেছি তারা সম্পূর্ণভাবে উদাসিনতার পরিচয় দিয়েছে। কারখানা কর্তৃপক্ষ এখানে প্রতারণা করেছে। নজরুল কারখানায় কাজ করেছে বয়স ১২ বছর কিন্তু কারখানা কর্তৃপক্ষ ৫ বছরের পাওনাদি বুঝিয়ে দিয়েছে। যেটা শ্রম আইন লঙ্ঘন করা হয়েছে।
বাংলাদেশ সময়: ১৬৪৩ ঘণ্টা, জানুয়ারি ০৩, ২০২১
আরএ