ঢাকা: ওপরে মাদরাসা আর নিচে দোকানপাট, আইয়ুর্বেদী সেন্টার— এভাবেই দখল করা হয়েছে খাল ও খালপাড়ের সরকারি খাস জমি। রাজধানীর ইব্রাহিমপুর খালের প্রায় সবটুকুই এভাবে দখল করা হয়েছে।
সোমবার (৪ জানুয়ারি) ডিএনসিসি মেয়র আতিকুল ইসলামের সার্বিক তত্ত্বাবধানে খালের অবৈধ দখল উচ্ছেদে অভিযান পরিচালিত হয়।
মিরপুর ১৪ নম্বর কচুক্ষেত প্রধান সড়ক থেকে শেওড়াপাড়াগামী রাস্তার দিকে ঢুকতেই ইব্রাহিম খালের একটি অংশ চোখে পড়ে। প্রধান সড়ক থেকে মাত্র ১০০ গজ দূরত্বেই খাল দখল করে গড়ে তোলা হয়েছে দোকানপাট ও অন্য ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান। খালের উত্তর পাশে অনুমোদিত একটি ভবনের দেয়াল ঘেঁষে বানানো হয়েছে আরেকটি তিনতলা ভবন।
নকশা ও অনুমোদনহীন এ ভবনের তৃতীয় তলায় একটি মাদরাসা স্থাপন করা হয়েছে। দ্বিতীয় তলায় মেডিকো আয়ুর্বেদী সেন্টার এবং নিচতলায় বেশ কয়েকটি দোকান।
স্থানীয়রা জানান, চরমোনাই পীর এবং বাংলাদেশ কুরআন শিক্ষা বোর্ডের তত্ত্বাবধানে এ মাদরাসা পরিচালিত হয়, নাম— মারকাজুল উলুম কারীমিয়া কাফরুল মাদরাসা। ভবনে নাম সম্বলিত একটি ব্যানারও চোখে পড়ে।
ওই এলাকার বাসিন্দা আক্কাস আলী বলেন, ‘এ ভবন আগেও একবার ভাঙা হয়েছিল তবে আংশিক। মাদরাসা থাকায় কখনোই পুরোপুরি ভাঙা হয়নি। অথচ খাল দখল করে গড়ে ওঠায় আমরা যারা এ এলাকায় থাকি, আমাদের ভোগান্তি হয়। বর্ষায় পানি জমে, সুয়ারেজের পানি সরে না, রাস্তায় চলে আসে। ’
সরেজমিন পরিদর্শনে মেয়র আতিকুল ইসলাম খালের বিভিন্ন অংশ ঘুরে ঘুরে দেখেন। প্রায় সব স্থানেই খাল ও খালের অংশ দখল করে অবৈধ স্থাপনা গড়ে উঠেছে এমন চিত্র দেখেন তিনি।
মসজিদ মাদরাসার মতো ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান বানিয়ে অবৈধ দখল নিয়ে প্রশ্ন করা হলে মেয়র আতিক বলেন, ‘আমরা পড়েছি যে, নবীজী কোথাও মসজিদ নির্মাণ করতে হলে সঙ্গে উট নিয়ে যেতেন। কারো জমিতে মসজিদ নির্মাণের আগে সেই জমির মালিকের অনুমতি নিতেন। মসজিদ মাদরাসা যাই হোক না কেন, অনুমতি নিয়ে করতে হবে। সম্প্রতি আমরা শেরেবাংলা নগরে আলাপ আলোচনার মাধ্যমে তিনটি মসজিদ উচ্ছেদ করেছি। কেউ যদি অনুমতি ছাড়া এমন করে সেখানেও আজকের মতো ফলাফল হবে।
অভিযানে ঢাকার জেলা প্রশাসক শহীদুল ইসলামসহ ডিএনসিসি ও ওয়াসার ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা, স্থানীয় কাউন্সিলরসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতারা উপস্থিত ছিলেন।
বাংলাদেশ সময়: ১৬১১ ঘণ্টা, জানুয়ারি ০৪, ২০২১
এসএইচএস/এফএম