ঢাকা: ‘ঢাকার শীর্ষ সন্ত্রাসী সেভেন স্টার গ্রুপের নামে বিভিন্ন ব্যবসায়ীদের কাছে মোটা অংকের চাঁদা আদায় করতেন গ্রেফতার হওয়া আসামিরা। তবে, তারা মূলত প্রতারক চক্রের সদস্য।
শনিবার (১৬ জানুয়ারি) দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান ডিএমপির উপ-কমিশনার (ডিসি) মো. ওয়ালিদ হোসেন।
তিনি বলেন, ভুক্তভোগীদের অভিযোগের ভিত্তিতে শুক্রবার (১৪ জানুয়ারি) রাত পর্যন্ত রাজধানীর যাত্রাবাড়ী, মতিঝিল, তুরাগ ও পল্টন থানা এলাকায় অভিযান চালিয়ে ছয় প্রতারককে গ্রেফতার করে ডিএমপির গোয়েন্দা সাইবার অ্যান্ড স্পেশাল ক্রাইম বিভাগ।
গ্রেফতার হওয়া আসামিরা হলেন- বেল্লাল খান, রাকিব খান টিটুল, আব্দুল হান্নান, দেলোয়ার হোসেন, সোহাগ ও খোরশেদ আলম। এ সময় তাদের কাছ থেকে চাঁদাবাজির কাজে ব্যবহৃত মোবাইল ফোন সিমকার্ড, ব্যবসায়ীদের ফোন নাম্বার সম্বলিত ডিরেক্টরি ও নথিপত্র উদ্ধার করা হয়। উপ-কমিশনার মো. ওয়ালিদ হোসেন বলেন, গ্রেফতার আসামিরা শীর্ষ সন্ত্রাসী সেভেন স্টার গ্রুপের নামে সমাজের প্রতিষ্ঠিত ব্যবসায়ীদের কাছে মোটা অংকের চাঁদা দাবি করতেন। কিন্তু গ্রেফতার হওয়া আসামিদের কারও এই সন্ত্রাসী গ্রুপের সঙ্গে সংশ্লিষ্টতা নেই। তারা মূলত প্রতারক চক্র। তারা চাঁদা আদায়ের সময় ব্যবসায়ীদের পরিবারের সদস্যদের অপহরণ করে হত্যার হুমকি দিয়ে আসছিলেন। সর্বশেষ এক ব্যবসায়ীকে চাঁদার দাবিতে বিভিন্ন মোবাইল নম্বর থেকে ফোন দিয়ে অপহরণ ও হত্যার হুমকি দেয়। ভুক্তভোগী ব্যবসায়ী বিভিন্ন মোবাইল ব্যাংকিং একাউন্টে সর্বমোট ৩৫ হাজার টাকাও দেয়। এরপর ভুক্তভোগীর দেওয়া অভিযোগের ভিত্তিতে চাঁদাবাজি চক্রের প্রধানসহ ছয় জন গ্রেফতার করেছে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের গোয়েন্দা সাইবার অ্যান্ড স্পেশাল ক্রাইম বিভাগ।
তিনি বলেন, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেফতার হওয়া আসামিরা জানিয়েছেন, তারা দীর্ঘদিন ধরে রাজধানীর বিভিন্ন এলাকা থেকে ব্যবসায়ীদের ডিরেক্টরি সংগ্রহ করে। এছাড়া বিভিন্ন ব্যবসায়ী সমিতির বার্ষিক সদস্য পরিচিতি (ঠিকানা ও মোবাইল নম্বরের তালিকা) বই সংগ্রহ করে সমাজের প্রতিষ্ঠিত ব্যবসায়ী ও চাকরিজীবীদের মোবাইলে ফোন করে নিজেদের শীর্ষ সন্ত্রাসী দাবি করে অপহরণ ও হত্যার হুমকি দিয়ে চাঁদা দাবি ও আদায় করে আসছিলেন।
পুলিশের এই কর্মকর্তা বলেন, চক্রটি তিনভাগে কাজ করে। প্রথমে, একটি দল ব্যবসায়ী ডিরেক্টরি সংগ্রহ করে। বাছাই করা বয়বসীদের নাম্বার দ্বিতীয় গ্রুপের কাছে সরবরাহ করে। দ্বিতীয় গ্রুপটি ফোন করে শীর্ষ সন্ত্রাসী সেভেন স্টার গ্রুপের প্রধান কথিত বড় ভাই জিসানের কথা বলতে ফোন ধরিয়ে দেয়। কথিত সন্ত্রাসী জিসান নানাভাবে চাঁদা দাবি ও অপরহণ ও হত্যার হুমকি দিতেন।
এক প্রশ্নের জবাবে ডিসি ওয়ালিদ হোসেন বলেন, যদিও ঢাকার শীর্ষ সন্ত্রাসী সেভেন স্টার গ্রুপের সঙ্গে এই চক্রের কোনো যোগাযোগ নেই। এই গ্রুপের সদস্যরা মূলত মাদারীপুর, নারায়ণগঞ্জ ও বরিশাল কেন্দ্রিক। ওই অঞ্চলে তাদের তৎপর বেশি। এক সময়ের আন্ডারগ্রাউন্ড জগতের প্রভাববিস্তার করা শীর্ষ সন্ত্রাসী সেভেন স্টার গ্রুপের নাম ভাঙিয়ে প্রতারণামূলকভাবে চাঁদাবাজি করে আসছিল।
বাংলাদেশ সময়: ১৫০০ ঘণ্টা, জানুয়ারি ১৬, ২০২১
এসজেএ/এএটি