ঢাকা: করোনা ভাইরাস প্রতিরোধী টিকার সময়ে প্রবেশ করেছে বাংলাদেশ। দেশে টিকা আসার শুরু থেকেই নানামুখী আলোচনা চলছে।
এর মধ্যেই বুধবার (২৭ জানুয়ারি) দেশে প্রথমবারের মতো কয়েকজনের শরীরে টিকা প্রয়োগ করা হলো। প্রথম দিনে রাজধানীর কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতালে বাছাইকৃতদের মধ্যে টিকাদান কার্যক্রমের উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
প্রথম দিনে টিকা নিয়ে ইতিহাসের সাক্ষী হলেন একজন গণমাধ্যমকর্মী। এনটিভি অনলাইনের অপরাধ বিষয়ক প্রতিবেদক মাসুদ রায়হান পলাশ দেশের প্রথম গণমাধ্যমকর্মী হিসেবে করোনার টিকা নিয়েছেন।
টিকা নেওয়ার পর নিজের শারীরিক অবস্থার বিষয়ে তিনি বাংলানিউজকে জানান, সবকিছুই স্বাভাবিক আছে। করোনার টিকা নেওয়ার আগে ও পরের কোনো পার্থক্যই তিনি বুঝতে পারছেন না।
বুধবার বিকেলে কুর্মিটোলা হাসপাতালে টিকা নেওয়া শেষে তিনি অফিসে গেছেন। রাত সাড়ে আটটায় তিনি অফিসেই আছেন জানিয়ে বলেন, অফিসেই আছি, কাজ করছি।
তিনি বলেন, টিকা নেওয়ার সময় পিঁপড়ার কামড়ের মতো যে সামান্য ব্যথা অনুভূত হয় সেটাই হয়েছে। পরে কিছুক্ষণ মাংসপেশীতে সামান্য ব্যথা ছিল, যেটা সুচের জন্যই হয়েছে। কিছুসময় পরে সেটাও ঠিক হয়ে গেছে।
এখন শরীরে টিকা নেওয়ার ফলে আলাদা কোনো পার্থক্য বুঝতে পারছি না। সবকিছু একইরকম স্বাভাবিক আছে। টিকা নেওয়ার আগে সকাল থেকে কাজ করছিলাম। টিকা নেওয়ার পর আবার অফিসে কাজে ফিরছি, যোগ করেন এই সাংবাদিক।
প্রথম টিকা নেওয়ার বিষয়ে জানতে চাইলে সংবাদিক পলাশ বলেন, আমি টিকাদান কার্যক্রমের সংবাদ সংগ্রহ করতেই কুর্মিটোলা হাসপাতালে এমনিতেই যেতাম। কিন্তু টিকা নিতে ইচ্ছাপ্রকাশ করায় আজ সকালেই আমার সঙ্গে যোগাযোগ করা কয়। আমাকে জানানো হয়, আজই টিকা দেওয়া হবে। পরে সংবাদ সংগ্রহের পাশাপাশি নিজেও টিকা নিয়েছি।
তিনি আরও বলেন, দেশে টিকা আসার পর থেকেই নানা ধরনের বিশেষ করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বিভিন্ন নেতিবাচক সমালোচনা লক্ষ্য করা যাচ্ছে। আসলে টিকা না নিলে তো বোঝার উপায় নেই এটার প্রতিক্রিয়া কী হবে? ধরুন আপনার হয়ে বা সকল সংবাদকর্মীদের হয়ে আমি প্রথম টিকা নেওয়ার ইচ্ছা প্রকাশ করেছি এবং টিকা নিয়েছি।
দেশের ইতিহাসের অংশ হতে পারার অনুভূতি জানতে চাইলে উচ্ছ্বাস প্রকাশ করে পলাম বলেন, এক কথায় অসাধারণ!
বুধবার বিকেলে গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে টিকাদান কর্মসূচির উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
প্রথমে কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতালের নার্স রুনু ভেরোনিকা কস্তাকে করোনা ভাইরাসের টিকা দেওয়ার মধ্য দিয়ে টিকাদান কার্যক্রম শুরু হয়।
এরপর পর্যায়ক্রমে চিকিৎসক হিসেবে প্রথম টিকা নেন মেডিসিন কনসালট্যান্ট ডা. আহমেদ লুৎফর মবিন, তারপর স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক (প্রশাসন) অধ্যাপক অধ্যাপক ডা. নাসিমা সুলতানা, ট্রাফিক পুলিশের সদস্য দিদারুল ইসলাম এবং সেনাবাহিনীর ব্রিগেডিয়ার জেনারেল ইমরান হামিদ টিকা নেন।
বাংলাদেশ সময়: ২১১৯ ঘণ্টা, জানুয়ারি ২৭, ২০২১
পিএম/এমজেএফ