ঢাকা, সোমবার, ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ২৩ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

রূপচাঁদার নামে বিক্রি হচ্ছে পিরানহা!

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৯১৫ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ১২, ২০২১
রূপচাঁদার নামে বিক্রি হচ্ছে পিরানহা!

হবিগঞ্জ: হবিগঞ্জ শহরের চৌধুরী বাজারে সমুদ্রের বড় রূপচাঁদা বলে বিক্রি হচ্ছে নিষিদ্ধ পিরানহা মাছ। বাজারে নিয়ে আসা একেকটি পিরানহার ওজন ৫-৬ কেজি।

প্রতি কেজি পিরানহার দাম রাখা হচ্ছে ২০০ টাকা। মাছটি সম্পর্কে ক্রেতারা জ্ঞাত না থাকায় না বুঝেই তারা রূপচাঁদা হিসেবে কিনে নিয়ে যাচ্ছেন।  

রোববার (১২ ডিসেম্বর) এক হাজার টাকায় ৫ কেজি ওজনের একটি পিরানহা নিয়ে যাচ্ছিলেন নূর ইসলাম নামে এক ব্যক্তি। তাকে যখন বলা হলো এটা রূপচাঁদা নয়, রাক্ষুসে পিরানহা। তখন তিনি সে কথায় কান না দিয়ে বাড়ির পথে দ্রুত হাঁটা দেন।
 
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, চৌধুরীবাজারে বিক্রির জন্য হরেক রকম মাছের সঙ্গে ১০টি পিরানহা নিয়ে বসেছেন এক তরুণ। প্রতিটি পিরানহার ওজন ৫-৬ কেজি। মাছের দাঁতগুলো প্রায় প্রাপ্তবয়স্ক মানুষের দাঁতের সমান। মাছের পুরো শরীর মাংসে ভরপুর। প্রতি কেজি ২০০ টাকা দরে বিক্রি করেন তিনি।
 
নিষিদ্ধ হওয়া সত্ত্বেও রাক্ষুসে পিরানহা মাছ কেন বিক্রি করছেন জানতে চাইলে ওই বিক্রেতা বলেন, মাছ তো মাছই। এগুলো সমুদ্রের বড় রূপচাঁদা মাছ। অন্য মাছের তুলনায় দাম কম হওয়ায় বাজারে এগুলোর ভাল চাহিদা। তাই বিক্রি করছি।
 
একই ওজনের আরও কয়েকটি পিরাহান নিয়ে আসা আরেক বিক্রেতা বলেন, জানতে পেরেছি এ মাছ খেলে কারো কোনো ক্ষতি হয় না। তাই বিক্রি করতে নিয়ে এসেছি।
 
হবিগঞ্জ জেলা মৎস্য কর্মকর্তা শাহাজাদা খসরু বলেন, পিরানহা মাছ দেখতে অনেকটা রূপচাঁদা মাছের মতো। বাংলাদেশের জলজ পরিবেশের সঙ্গে পিরানহা সংগতিপূর্ণ নয়। এগুলো রাক্ষুসে স্বভাবের। অন্য মাছ ও জলজ প্রাণীদের খেয়ে ফেলে।
 
পিরানহা মাছ যদি কোনো অবরুদ্ধ জায়গায় চাষ করা হয় এবং সেখানে যদি কোন মানুষ পড়ে যায় তাহলে পিরানহা ঝাঁক বেঁধে সেই জ্যান্ত ব্যক্তিকে এক নিমিষে খেয়ে সাবাড় করে ফেলতে পারবে।
 
দেশীয় প্রজাতির মাছ তথা জীববৈচিত্র্যের জন্য এগুলো হুমকিস্বরূপ। এ কারণে সরকার ও মৎস্য অধিদপ্তর পিরানহা মাছের চাষ, উৎপাদন, বংশ বৃদ্ধিকরণ, বাজারে ক্রয়-বিক্রয় সম্পূর্ণভাবে নিষিদ্ধ করেছে।
 
এ বিষয়ে জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর হবিগঞ্জের সহকারী পরিচালক দেবানন্দ সিনহা বলেন, পিরানহা মাছ বিক্রি বন্ধে নিয়মিত তদারকি করা হচ্ছে। এরপরও কিছু বিক্রেতা লুকিয়ে মাছগুলো বিক্রি করছে।
 
বাংলাদেশ সময়: ১৯০৭ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ১২, ২০২১
এনটি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।