ঢাকা: খাদ্যমন্ত্রী সাধন চন্দ্র মজুমদার বলেছেন, দুর্ভিক্ষ আসছে এ আতঙ্কে যদি মানুষ তিন থেকে চার গুণ খাদ্য কিনে মজুদ না করে, গ্যারান্টি দিয়ে বলছি, বাংলাদেশে দুর্ভিক্ষ আসবে না, আসবে না, আসবে না।
তিনি বলেন, যে দেশের মাটিতে বীজ দিলেই ফসল হয়, আমনের বাম্পার ফলন হয়েছে, ইরি ও বোরোর জন্য পর্যাপ্ত সার মজুদ আছে, খাদ্যের মজুদ থাকার পরেও আমদানি অব্যাহত রয়েছে, সেখানে দুর্ভিক্ষ প্রশ্নই আসে না।
রোববার (১৩ নভেম্বর) বাংলাদেশ নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষের প্রশিক্ষণ কক্ষে খাদ্য মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগে আয়োজিত ‘গণমাধ্যমকর্মীদের নিরাপদ খাদ্য আইন ও বিধিপ্রবিধি অবহিতকরণ’ শীর্ষক কর্মশালা এবং খাদ্যপণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে স্বাস্থ্য সনদ দেওয়ার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে মন্ত্রী এসব কথা বলেন।
বিএফএসএ’র সদস্য প্রফেসর ড. আব্দুল আলীমের স্বাগত বক্তব্যে শুরু হওয়া অনুষ্ঠানে খাদ্যমন্ত্রী বলেন, আগে খাদ্য রপ্তানি করতে গেলে বিদেশ থেকে কর্তৃপক্ষ এসে সনদ দিত। এখন থেকে আর সেটির প্রয়োজন হবে না। বাংলাদেশই আন্তর্জাতিকমান অনুযায়ী সনদ দেবে। এতে সারাবিশ্ব জানবে, বাংলাদেশে নিরাপদ খাদ্য পাওয়া যায়। যার ফল স্বরূপ রপ্তানি আরও ত্বরান্বিত হবে।
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন খাদ্যসচিব মো. ইসমাইল হোসেন। তিনি বলেন, আন্তঃমন্ত্রণালয়ের কাজের যাতে ওভারলেপিং না হয়, তা আমরা বসে সমাধানের চেষ্টা করবো। তিনি খাদ্যপণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে সর্বজনস্বীকৃত স্বাস্থ্য সনদ দেওয়ার জন্য আস্থা তৈরির ওপর জোর দেন এবং বাংলাদেশ নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষ তাদের ওপর অর্পিত দায়িত্ব যথাযথ ও নির্ভুলভাবে পালন করবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন।
অনুষ্ঠানের সভাপতি ছিলেন বাংলাদেশ নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান মো. আব্দুল কাইউম সরকার। তিনি বলেন, খাদ্যপণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে বিএফএসএ কর্তৃক প্রদেয় স্বাস্থ্য সনদ দেশের সামগ্রিক রপ্তানি বাড়াবে।
এ সময় ইএসএল বাংলাদেশ লিমিটেড ও ট্রাস্ট অ্যান্ড ট্রেড নামে দুটি কোম্পানিকে স্বাস্থ্য সনদ দেওয়ার মাধ্যমে কার্যক্রমের শুভ উদ্বোধন করা হয়।
কর্মশালায় নিরাপদ খাদ্য আইন ও বিধিপ্রবিধি সম্পর্কে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন বিএফএসএ’র সদস্য মঞ্জুর মোর্শেদ আহমদ। তাতে নিরাপদ খাদ্য আইন-২০১৩ এর বিভিন্ন ধারা ও অধ্যায়, খাদ্য দূষণকারী, সংযোজন দ্রব্য ব্যবহার, স্বাস্থ্য সম্মত পরিবেশ সংরক্ষণ, খাদ্য স্পর্শক, ব্যবসায়ীর বাধ্যবাধকতা, দূষণ, টক্সিন ও ক্ষতিকর অবশিষ্টাংশ, ট্রান্স ফ্যাটি এসিড নিয়ন্ত্রণ, বিষাক্ত পদার্থযুক্ত খাদ্যদ্রব্য প্রত্যাহার বিষয়ক প্রবিধানমালা বিষয়ে আলোচনা করা হয়।
কর্মশালায় জানানো হয়, বিশ্বে প্রতিবছর ১০ জনে একজন খাদ্যজনিত অসুস্থতায় ভোগে এবং চার লাখ ২০ হাজার জন মারা যায়। প্রতি তিনজনে একজন শিশু মারা যায় খাদ্যজনিত অসুস্থতায়। দক্ষিণ পূর্ব এশিয়ায় ১৫০ মিলিয়ন মানুষ অসুস্থ হচ্ছে এ কারণে। মারা যায় এক লাখ ৭৫ হাজার, যার মধ্যে ৫০ হাজার শিশু।
কর্মশালা ও স্বাস্থ্য সনদ দেওয়ার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে সরকারের বিভিন্ন দপ্তরের কর্মকর্তা, রপ্তানিকারক প্রতিষ্ঠানসমূহের প্রতিনিধি, গণমাধ্যমের প্রতিনিধি ও নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষের কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
অনুষ্ঠান সঞ্চালনার দায়িত্বে ছিলেন বিএফএসএ’র আইন কর্মকর্তা শেখ মো. ফেরদৌস আরাফাত।
বাংলাদেশ সময়: ১৭৪৩ ঘণ্টা, নভেম্বর ১৩, ২০২২
এমআইএইচ/আরবি