ঢাকা, শনিবার, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ২৮ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

‘ভাইয়ের লাশটা গুম করতে চেয়েছিল খুনিরা’

আবাদুজ্জামান শিমুল, সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১০৫৩ ঘণ্টা, নভেম্বর ১৪, ২০২২
‘ভাইয়ের লাশটা গুম করতে চেয়েছিল খুনিরা’ দুরন্ত বিপ্লব

ঢাকা: আমার ভাই দুরন্ত বিপ্লবকে নৃশংসভাবে হত্যা করা হয়েছে। তার লাশটা যেন আমরা খুঁজে না পাই তাই সেটি নদীতে ফেলে দিয়েছে খুনিরা।

ভাগ্যক্রমে আমরা ভাইয়ের লাশটা পেয়েছি।

রোববার (১৩ নভেম্বর) রাতে বাংলানিউজের কাছে এভাবে কথাগুলো বলছিলেন নিহতের ছোট ভাই দুর্জয় বিপ্লব।

নিহতের বাবার নাম মৃত আব্দুল মান্নান। তারা দু’ভাই-একবোন।  ভাই-বোনদের মধ্যে বিপ্লব ছিলেন বড়। বোনের নাম- স্বাশতী বিপ্লব। তাদের গ্রামের বাড়ি নেত্রকোনা পূর্বধলা উপজেলার ছোট ইলাশপুর গ্রামে।

দুরন্ত বিপ্লবের ছোট ভাই দুর্জয় জানান, তার ভাই খামারের কাজের সময় দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ এলাকায় থাকলেও মূলত তিনি এক মেয়ে ও স্ত্রীকে নিয়ে ইস্কাটন এলাকায় থাকেন। আর তাদের মা থাকতেন দুর্জয়ের কাছে। গত ৭ নভেম্বর মায়ের সঙ্গে দেখা করার জন্য কেরানীগঞ্জ থেকে জাপান গার্ডেন সিটির উদ্দেশ্যে রওনা দেওয়ার পর থেকেই নিখোঁজ ছিলেন দুরন্ত বিপ্লব। পরে নৌ পুলিশ সদস্যরা শনিবার (১২ নভেম্বর) বিকেলে বুড়িগঙ্গা নদীর পানগাঁও থেকে মরদেহটি উদ্ধার করে৷ ওইদিন রাত ১২টার দিকে কেরানীগঞ্জ থানা পুলিশের সঙ্গে যোগাযোগ করেন স্বজনরা৷ এরপর রাতে নারায়ণগঞ্জ এসে নিহতের ছবি দেখে মরদেহের পরিচয় শনাক্ত করা হয়৷

দুর্জয় বলেন, আমার ভাইয়ের এমন কোনো শত্রু থাকতে পারে না, যে তাকে নৃশংসভাবে হত্যা করে লাশ গুম করার জন্য নদীতে ফেলে দেবে। কারা হত্যা করেছে, কেন হত্যা করেছে সেটা পুলিশ খুঁজে বের করবে। আমাদের দিক থেকে আপ্রাণ সহযোগিতা থাকবে পুলিশের তদন্তের কাজে।

দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. শাহজামান বলেন, বিপ্লবের সর্বশেষ অবস্থান কামরাঙ্গীরচরের এলাকায় পাওয়া গেছে। আমরা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছি। ৭ নভেম্বর সন্ধ্যায় ওই এলাকায় একটি লঞ্চ ঘোরানোর সময় একটি নৌকায় সঙ্গে ধাক্কা লাগলে এক যাত্রী নদীতে পড়ে যায় বলে শুনেছি। নৌকা থেকে পড়ে যাওয়া ব্যক্তি দুরন্ত বিপ্লব কিনা সেটা তদন্ত সাপেক্ষে বলা যাবে।

নারায়ণগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালে বিপ্লবের ময়নাতদন্ত সম্পন্ন হয়েছে। ময়নাতদন্তকারী এক চিকিৎসক (নাম প্রকাশ করতে অনিচ্ছুক) জানান, ময়নাতদন্তে বিপ্লবের মাথা ও বুকে আঘাতের চিহ্ন পাওয়া গেছে। মরদেহ মোহাম্মদপুর জাপান গার্ডেন সিটিতে নিয়ে গেছেন স্বজনরা। সেখানে জানাজা শেষে সন্ধ্যা রাতে রায়েরবাজার কবরস্থানে তাকে দাফন করা হয়।

মরদেহ উদ্ধারের পর নৌ-পুলিশের পরিদর্শক শাহজাহান আলী বলেন, ৪৮ ঘণ্টা আগে তার মৃত্যু হয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। মরদেহ ফুলে চেহারা বিকৃত হয়ে গেছে।

প্রসঙ্গত, দুরন্ত বিপ্লব একজন কৃষি খামারি ছিলেন৷ জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক বিপ্লব আওয়ামী লীগের কৃষি ও সমবায় উপ-কমিটিরও সদস্য ছিলেন৷ গত ৭ নভেম্বর সন্ধ্যায় কেরানীগঞ্জ থেকে মোহাম্মদপুরে মায়ের সঙ্গে দেখা করার উদ্দেশ্যে বের হওয়ার পরই তিনি নিখোঁজ হন।

বাংলাদেশ সময়: ১০৫৩ ঘণ্টা, নভেম্বর ১৪, ২০২২
এজেডএস/জেডএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।