ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১৩ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৮ নভেম্বর ২০২৪, ২৬ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

খুলনায় আইনজীবীদের নির্বাচনে আ.লীগপন্থিদের নিরঙ্কুশ জয়

 সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট  | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৮৩৫ ঘণ্টা, নভেম্বর ২৮, ২০২২
খুলনায় আইনজীবীদের নির্বাচনে আ.লীগপন্থিদের নিরঙ্কুশ জয় ছবি: বাংলানিউজ

খুলনা: খুলনা জেলা আইনজীবী সমিতির নির্বাচনে আওয়ামী লীগ সমর্থিত বঙ্গবন্ধু আওয়ামী আইনজীবী পরিষদের প্রার্থীরা নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা লাভ করেছেন। ১৪টি পদের মধ্যে এ পরিষদের মনোনীত প্রার্থীরা সবকটিতেই জয়লাভ করেছেন।

রোববার( ২৭নভেম্বর)রাতে ভোট গণনা শেষে এ ফলাফল ঘোষণা করা  হয়। যদিও বিএনপি সমর্থিত সর্বদলীয় আইনজীবী ঐক্য পরিষদ মনোনীত প্রার্থীরা নির্বাচনের একদিন আগে ভোট থেকে সরে দাঁড়িয়েছেন ।

 শনিবার (২৬নভেম্বর) নির্বাচনী আচারণবিধি ভঙ্গের অভিযোগের কোনো প্রতিকার না পেয়ে সর্বদলীয় আইনজীবী ঐক্য পরিষদের সদস্যরা নির্বাচন বর্জন করেন। তারপরও ওই পরিষদের সদস্যরা নির্বাচনে ভোট পেয়েছেন। এ নির্বাচনে ভোটের প্রাপ্ত ফলাফলে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন সর্বদলীয় আইনজীবী ঐক্য পরিষদের নেতারা।

জেলা আইনজীবী সমিতির নির্বাচন পরিষদের চেয়ারম্যানের স্বাক্ষরিত ফলাফলে জানা গেছে, সভাপতি পদে সাইফুল ইসলাম ১০৬০ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হয়েছেন। অপর প্রার্থী  শরিফুল ইসলাম জোয়ার্দ্দার খোকন পেয়েছেন ৭২ ভোট। অপরদিকে সাধারণ সম্পাদক পদে ৯৭৮ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হয়েছেন তারিক মাহমুদ তারা। অপর প্রার্থী অ্যাডভোকেট এ কে, এম শহিদুল আলম শহিদ পেয়েছেন ৯২ ভোট।

বিজয়ী অন্যান্যরা হলেন-সহ সভাপতি এ, কে এম মিজানুর রহমান (৯৬৫ ভোট) ও শিরিন আক্তার পপি (৯৫৪), যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক তমাল কান্তি ঘোষ (৯৮৫), লাইব্রেরি সম্পাদক কাজী সাইফুল ইমরান (৯২৯), সাহিত্য ও সাংস্কৃতিক সম্পাদক মো. আসাদুজ্জামান গাজী মিল্টন (৯৮১) এবং সদস্য পদে ওমর ফারুক রনি (১০১১), সরদার আশরাফুর হমান দিপু (৯৬২), এস, এম আব্দুস সাত্তার (৯৫৭), প্রজেশ রায় (৯২৮), মো. মনিনুর ইসলাম মনির (৯১২), সাবিরা সুলতানা হ্যাপি (৯০২), খাদিজা আক্তার টুলু (৮৫৮) ভোট।

ক‌মিশ‌নের দেওয়া তথ‌্যানুযায়ী নির্বাচনে মোট ১ হাজার ৩৮৭ জন ভোটারের মধ্যে ভোট প্রদান করেন ১ হাজার ১৮৪ জন। রোববার (২৭ নভেম্বর) সকাল ৮ টা থেকে শুরু হয়ে ভোট গ্রহণ চলে বিকেল ৩ টা পর্যন্ত।

নির্বাচন কমিশনের চেয়ারম্যান হিসেবে ছিলেন মোল্লা লিয়াকত আলী এবং সদস্য হিসেবে মো: আহাদুজ্জামান ও নিমাই চন্দ্র রায়।

এদিকে খুলনা জেলা আইনজীবী সমিতির নির্বাচনে সর্বদলীয় আইনজীবী ঐক্য পরিষদের ভোট বর্জন, ভোট কেন্দ্রে না গেলেও নির্বাচন কমিশন দ্বারা অতীতের সব রেকর্ড ভঙ্গ করে সর্বোচ্চ ভোট প্রয়োগের ঘটনায় গভীর উদ্বেগ ও নিন্দা জানিয়েছেন খুলনা জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরাম ও সর্বদলীয় আইনজীবী ঐক্য পরিষদের নেতারা।

তারা বলেন, এক তরফা ভোটের ফল কারচুপি করে সর্বোচ্চ ১১৮৪ ভোট প্রয়োগ দেখিয়ে তথাকথিত নির্বাচন কমিশন বেহায়াপনার রেকর্ড গড়েছেন।

রোববার (২৭ নভেম্বর) প্রদত্ত বিবৃতিতে নেতারা বলেন, ভোট কেন্দ্রের মধ্যে বর্তমান সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক থাকতে পারবেন না বলে দাবি জানালেও কমিশন সে দাবির প্রতি বৃদ্ধাঙ্গুগুলি দেখিয়েছেন। বাধ্য হয়ে ৩ সদস্যের কমিশন থেকে এক সদস্য পদত্যাগ করেছেন।

একইভাবে আইনজীবী ঐক্য পরিষদ মনোনীত সভাপতি প্রার্থী শরিফুল ইসলাম জোয়াদ্দার খোকন ও সাধারণ সম্পাদক প্রার্থী এ কে এম শহিদুল আলমসহ পরিষদের সব প্রার্থী লিখিতভাবে নির্বাচন বর্জন করেন। কিন্তু একতরফা নির্বাচনে সর্বোচ্চ ভোট প্রয়োগ দেখানো শুধু লজ্জাজনকই না, খুলনা আইনজীবী সমিতির বিগত নির্বাচনী ঐতিহ্যে কলঙ্কের কালিমা লেপনের সামিল। আইন পেশার মতো একটি মহৎ পেশার প্রতিনিধি নির্বাচনে এহেন ঘটনা জনমনে নানা প্রশ্ন জন্ম দিয়েছে।  

খুলনা জেলা আইনজীবী সমিতির ১৪০ বছরের ইতিহাসে কোনো প্যানেলের সব সদস্য বর্জনের ঘটনা আগে কখনো ঘটেনি। নেতারা অবিলম্বে হাস্যকর নির্বাচনের ফলাফল বাতিল করে পুনরায় নির্বাচনের দাবি জানিয়েছেন।

বাংলাদেশ সময়: ০৮৩৫ ঘণ্টা,  নভেম্বর ২৮, ২০২২
এমআরএম/জেএইচ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।