ঢাকা, রবিবার, ৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ২২ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

মুক্তমত

প্রবৃদ্ধি: বিশ্বব্যাংকের ‘হেলদি’ কমেন্ট ও নানা খাতে অগ্রগতি

সুমি খান, কন্ট্রিবিউটিং এডিটর | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৮০৬ ঘণ্টা, অক্টোবর ২২, ২০১২
প্রবৃদ্ধি: বিশ্বব্যাংকের ‘হেলদি’ কমেন্ট ও নানা খাতে অগ্রগতি

অন্ন, বস্ত্র, বাসস্থান এবং শিক্ষা এই চার মৌলিক অধিকারের ক্ষেত্রে মহাজোট সরকারের ভূমিকা ইতিবাচক মনে করছে সাধারণ জনগণ। এ নিয়ে দ্বিমত থাকতে পারে।

তবে তথ্যপ্রমাণ সাপেক্ষে আমার এ বক্তব্য গ্রহণীয়।

অনেকে বিশ্বব্যাংকের মতো বলবেন হয়তো: ‘মন্দ নয়‌‌‌,’  অগ্রগতি হেলদি, তবে বিশ্বমন্দাসহ নানান কারণে (বিরোধী দলের ভাষায়,  ‘সরকারের ব্যর্থতার কারণে’) ৭% প্রবৃদ্ধি সম্ভব হবে না। আইএমএফ-এর ওয়ার্ল্ড ইকোনমি আউটলুকে বলা হয়েছে, বাংলাদেশ বিশ্বের ১৫০টি দেশের মধ্যে প্রবৃদ্ধি অর্জনে ৩৫তম অবস্থানে আছে।

রোববার রাজধানীর আগারগাঁও বিশ্বব্যাংক কার্যালয়ে এক সম্মেলনে বিশ্বব্যাংকের জ্যেষ্ঠ অর্থনীতিবিদ জাহিদ হোসেন একথা বলেছেন। আইএমএফ এবং এডিবির পূর্বাভাস ছিল ৬.১ %, বাংলাদেশ ৬.৩২% প্রবৃদ্ধি অর্জন করেছে। বিশ্বব্যাংক বাংলাদেশের অগ্রগতিকে সমর্থন করে বলেছে, দক্ষিণ এশিয়ার প্রেক্ষাপটে ৬% প্রবৃদ্ধি অগ্রগতি কম নয়। দাতাসংস্থা কী আর মুখ বড়ো করে বলবে আমাদের মতো তৃতীয় বিশ্বের একটি দেশের সফলতার কথা? কিন্তু নিজেরা কেন মুখ লুকিয়ে আড়ালে আবডালে বিরস মুখে বলছি এতো বড়ো বিজয়ের কথা? এই রাষ্ট্রটা তো অনেক রক্তের দামে কেনা, বিজয়ের স্বপ্নে জিনে নেয়া। তবে ভালো কথা, স্বপ্নজয়ের কথা বড়ো করে না বলে দাতা সংস্থার কন্ঠে কন্ঠ মিলিয়ে চিবিয়ে চিবিয়ে বলা কেন? এতে সাময়িকভাবে কিছু কায়েমী স্বার্থান্বেষী ব্যক্তির ব্যক্তিস্বার্থ উদ্ধার হলেও দেশের ক্ষতি করছি আমরা?এই অগ্রগতির সুফল তাৎক্ষণিকভাবে না পেলেও ৫ বছর পর পাওয়া যাবে।

আগামী ৪ নভেম্বর শুরু হচ্ছে জুনিয়র স্কুল সার্ভিস (জে এস সি)পরীক্ষা। জে এস সি পরীক্ষায় চট্টগ্রাম বোর্ডে ৮ হাজার ২শ’ ২৯ জন পরীক্ষার্থী বেড়েছে বলে জানিয়েছে চট্টগ্রাম বোর্ড কর্তৃপক্ষ। বাংলানিউজে প্রকাশিত সংবাদে জানলাম, এর মধ্যে ৭৫ হাজার ৭’শ ৪২ জন মেয়ে  এবং ৬০ হাজার ৫শ’ ৫১ জন পরীক্ষার্থী ছেলে।

শিক্ষাক্ষেত্রে বড় অগ্রগতির প্রকাশ এই চিত্র। ২০১১ সালে ছেলেদের চেয়ে ১৪ হাজার ৯শ’বাষট্টি জন মেয়ে বেশী ছিল। এবার ১৫ হাজার ১শ’ ১৯১ জন মেয়ে পরীক্ষার্থী বেশী। মেয়েদের অগ্রগতি আর সফলতার এমন  নজির আগে দেখা যায়নি। কারণ বিনা বেতনে ১২ ক্লাস পর্যন্ত পড়ানো বিশ্বের উন্নত দেশের জন্যেও বিলাসিতা, আমাদের মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে তা দূরদর্শিতা।

এর সুবাদেই এই সাফল্য। আরো অনেক সাফল্য ছিনিয়ে আনবে এদেশের নারীরা। আজ অনেকেই যারা অন্ধের মতো চোখ বুজে আছেন, তাদের অনেকে একদিন স্বীকার করবেন এর সত্যতা।

সমুদ্রসীমা বিজয়ে বিরোধী দলের অভিনন্দন এবং বিনা কারণে হঠাৎ আবার অভিনন্দন ফিরিয়ে নেবার মতো হাস্যকর বিলাসিতা এদেশের মতো আর কোন দেশে হয় কি?

মধ্যরাতে বসে এ লেখাটি লিখতে গিয়ে কথা বাড়াতে ইচ্ছে করছে না। শুধু বলতে ইচ্ছে করছে, আমরা নিজেরা নিজেদের মঙ্গল কামনা করি কি শুধু বাইরে? নাকি মন থেকেও। যদি মন থেকে হয়, তাহলে এমন সাফল্য এ দেশের প্রতিটি নাগরিকের প্রাণ-মন যেন ছুঁয়ে যায়।

Sumikhan29bdj@gmail.com
সম্পাদনা: জুয়েল মাজহার, কনসালট্যান্ট এডিটর
jewel_mazhar@yahoo.com

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।