মেহেরপুরের গাংনীতে আওয়ামী লীগের চার নেতা-কর্মীসহ নয়জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
গত ২৪ ঘণ্টায় গাংনী থানা পুলিশের অভিযানে ওয়ারেন্টভুক্ত চারজন এবং নাশকতার পরিকল্পনায় জড়িত থাকার দায়ে আওয়ামী লীগের চারজন নেতা-কর্মীকে গ্রেপ্তার করা হয়।
এদিকে মেহেরপুর সদর থানা পুলিশ অভিযান চালিয়ে সাত বছরের সাজাপ্রাপ্ত পলাতক আসামিসহ দুজন ও মুজিবনগর থানা পুলিশের অভিযানে আদালতের পরোয়ানাভুক্ত পলাতক দুই আসামি গ্রেপ্তার হন।
মঙ্গলবার (২৫ মার্চ) মেহেরপুর আদালতে সোপর্দ করেছে পুলিশ।
গ্রেপ্তাররা হলেন- গাংনী পৌরসভার ৭ নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি খোকন দেওয়ান (৬২), ৩ নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগ সভাপতি জাকির হোসেন মোল্লা (৬০), রাইপুর ইউনিয়ন কৃষক লীগ সভাপতি আব্দুল হান্নান (৫০), আওয়ামী লীগ কর্মী চাঁদপুর গ্রামের রাশিক আহম্মেদ (২৭) ও আরশেদ আলী।
গ্রেপ্তারি পরোয়ানাভুক্ত আসামিরা হলেন- পূর্বমালসাদহ গ্রামের আব্দুল গাফফার (৩৫), একই গ্রামের রকিকুল ইসলাম (২৫), ফতাইপুর গ্রামের জনি (৪২) ও হেমায়েতপুর গ্রামের হাসেম (৪৫) এবং সদর উপজেলার কুতুবপুর গ্রামের মৃত আব্দুল আজিজের ছেলে সামসুল আলম (৫২) ও মেহেরপুর শহরের হোটেল বাজার এলাকার আব্দুল আজিজের ছেলে যুবলীগ নেতা রাশেদুল ইসলাম মামুন (৪৯)।
এদের মধ্যে সামসুল আলম একটি মামলায় সাত বছরের সাজাপ্রাপ্ত পলাতক আসামি।
এছাড়া মুজিবনগর থানা পুলিশের অভিযানে আদালতের পরোয়ানাভুক্ত পলাতক দুই আসামি গ্রেপ্তার হয়েছেন।
গত সোমবার (২৪ মার্চ) রাত থেকে মঙ্গলবার (২৫ মার্চ) দুপুর পর্যন্ত জেলার বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালিয়ে এসব আসামি গ্রেপ্তার করা হয়।
গাংনী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) বানী ইসরাইল, সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মেসবাহুল ইসলাম ও মুজিবনগর থানার ওসি মিজানুর রহমান এই অভিযানের নেতৃত্বে ছিলেন।
মেহেরপুর পুলিশ সুপার (এসপি) মাকসুদা আক্তার খানম পিপিএম এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
জানা গেছে, গত সোমবার বিকেলে গাংনী উপজেলার চাঁদপুর গ্রামে আওয়ামী লীগ নেতা আব্দুর রবের বাড়িতে ইফতার মাহফিল ও আলোচনা অনুষ্ঠিত হয়। এ অনুষ্ঠানে গাংনী উপজেলার বিভিন্ন গ্রামের আওয়ামী লীগ নেতা-কর্মী ও সমর্থকরা অংশ নেন। এ খবর সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রকাশ হলে স্থানীয় রাজনীতির মাঠ উত্তপ্ত হয়ে ওঠে। আকস্মিকভাবে আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীদের জড়ো হওয়াকে নাশকতা এবং শান্তি শৃঙ্খলায় বিঘ্ন ঘটানোর উসকানি হিসেবেই নেন বিএনপি ও অঙ্গ সহযোগী সংগঠনের নেতা-কর্মীরা। ফেসবুকে পোস্ট দিয়ে প্রতিবাদ জানান এবং পুলিশের নিষ্ক্রিয়তা নিয়ে নানা প্রশ্ন করেন।
অনুষ্ঠানে উপস্থিত আওয়ামী লীগ নেতা-কর্মীদের গ্রেপ্তারে পুলিশের ওপর নানা কর্নার থেকে রাজনৈতিক চাপ বাড়তে থাকে।
এদিকে সোমবার রাত থেকে শুরু হয় পুলিশের অভিযান। এ উপজেলার বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালিয়ে গ্রেপ্তার করা হয় আওয়ামী লীগের চার নেতা-কর্মীকে।
গাংনী থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) বানী ইসরাইল জানান, গ্রেপ্তার অভিযান অব্যাহত রয়েছে। এ ধরনের উসকানিমূলক কর্মকাণ্ডের সঙ্গে যারা জড়িত তাদের প্রত্যেককে গ্রেপ্তার করা হয়। গ্রেপ্তার হওয়া চারজনকে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ওপর হামলা মামলায় আদালতে সোপর্দ করা হয়েছে।
বাংলাদেশ সময়: ১৯৩০ ঘণ্টা,মার্চ ২৫, ২০২৫
এসআরএস