ঢাকা: পটিয়া, লালমনিরহাট থানায়, ফরিদপুরে ব্যবসায়ী এ কে আজাদের বাসভবনে, কুমিল্লার মুরাদনগরে বাড়ি ঘেরাও করে পিটিয়ে মা-ছেলেসহ অনেককে হত্যা, নারী-শিশু নিপীড়নের ঘটনাসহ অব্যাহত মব সন্ত্রাসে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন বাম গণতান্ত্রিক জোট।
শুক্রবার (৪ জুলাই) এক যৌথ বিবৃতিতে বাম গণতান্ত্রিক জোটের কেন্দ্রীয় পরিচালনা পরিষদ থেকে পাঠানো এক সংবাদ বিবৃতিতে এ উদ্বেগ প্রকাশ করা হয়।
বিবৃতিতে সই করেন কেন্দ্রীয় পরিচালনা পরিষদের সমন্বয়ক ও বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির সাধারণ সম্পাদক রুহিন হোসেন প্রিন্স, সিপিবি সভাপতি মোহাম্মদ শাহ আলম, বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দলের (বাসদ) সাধারণ সম্পাদক বজলুর রশিদ ফিরোজ, বাংলাদেশের বিপ্লবী কমিউনিস্ট লীগের সাধারণ সম্পাদক ইকবাল কবির জাহিদ, বাসদ (মার্কসবাদী) কেন্দ্রীয় সমন্বয়ক মাসুদ রানা, গণতান্ত্রিক বিপ্লবী পার্টির সাধারণ সম্পাদক মোশরেফা মিশু, বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক পার্টির নির্বাহী সভাপতি আব্দুল আলী।
বিবৃতিতে তারা বলেন, অভ্যুত্থানের পরে মাজার ভাঙা, বাউল আখড়া, ভিন্ন মতাবলম্বীদের ওপর হামলা, আদিবাসীদের ওপর নির্যাতন, নারীদের পোশাক নিয়ে মোরাল পুলিশিং ও সাম্প্রদায়িক নিপীড়নের ঘটনা ঘটেছে। একই সঙ্গে মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতি চিহ্ন, ভাস্কর্য, ম্যুরাল ভাঙা হয়েছে এবং তা অব্যাহত রয়েছে, যা খুবই উৎকণ্ঠার বিষয়।
বিবৃতিতে নেতারা বলেন, শুধু মব সন্ত্রাস নয় কোনো কোনো দল ও নেতাদের বক্তব্য বিবৃতিতে মুক্তিযুদ্ধকে ’২৪-এর গণঅভ্যুত্থান দিয়ে প্রতিস্থাপনের কথাও বলা হচ্ছে, যা দেশকে বিভক্তির দিকে ঠেলে দেবে এবং যা ’২৪-এর গণঅভ্যুত্থানের আকাঙ্ক্ষার পরিপন্থি।
বিবৃতিতে বলা হয়, সরকারের প্রেস সচিব যেভাবে মবকে প্রেসার গ্রুপ হিসেবে উল্লেখ করেছেন এবং তথ্য উপদেষ্টা কর্তৃক মবকে গণআদালত, গণজাগরণ মঞ্চসহ অন্যান্য গণআন্দোলনের সঙ্গে তুলনা করেছেন এতে করে জনমনে প্রশ্ন হতে পারে যে, তাহলে সরকার কি মবকে প্রশ্রয় দিচ্ছে?
বিবৃতিতে নেতারা আরও বলেন, গণঅভ্যুত্থানের এক বছর পূর্তি হতে চলেছে। দেশবাসীর প্রত্যাশা গণঅভ্যুত্থানে হত্যাকাণ্ডের বিচার, প্রয়োজনীয় সংস্কার ও দ্রুত নির্বাচন করে নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিদের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর করা। কিন্তু অব্যাহত মব সন্ত্রাস করে আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি ঘটিয়ে বিচার, সংস্কার ও নির্বাচনকে বাধাগ্রস্ত করার অপপ্রয়াস বলে বাম জোট মনে করে।
জোটের নেতারা বলেন, নির্বাচন যত বিলম্ব হবে সংকট তত বাড়তে থাকবে।
নেতারা মব সন্ত্রাস বন্ধে সরকার ও আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর ব্যর্থতা ও নীরবতার কঠোর সমালোচনা করে অবিলম্বে মব বন্ধে কার্যকর উদ্যোগ গ্রহণ এবং মব সৃষ্টিকারীদের গ্রেপ্তার ও শাস্তির আওতায় আনার দাবি জানান।
আরকেআর/আরআইএস