আইনের অস্পষ্টতাকে কাজে লাগিয়ে আইন প্রয়োগকারীরাই জনগণের ওপর নিপীড়ন চালাচ্ছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান। তিনি বলেন, যারা আইনের অপব্যবহার করে জনগণের ওপর নির্যাতন চালায়, তাদের শাস্তি এবং জবাবদিহির বিধান থাকা উচিত।
শনিবার (৫ জুলাই) ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে ‘সাইবার সুরক্ষা অধ্যাদেশ ২০২৫ কতটুকু সুরক্ষা দেয়’ শীর্ষক সেমিনারে তিনি এই মন্তব্য করেন। সেমিনারটির আয়োজন করে নাগরিক ঐক্য।
নজরুল ইসলাম খান বলেন, যদি আইনে কোনো অস্পষ্টতা থাকে এবং তার কারণে জনগণ হয়রানির শিকার হয়, তবে সেই অস্পষ্টতা দূর করার দায়িত্ব আইন প্রণেতাদের।
তিনি সাইবার সুরক্ষা অধ্যাদেশ ২০২৫ নিয়ে প্রশ্ন তুলে বলেন, যা যা পরিবর্তন করা প্রয়োজন ছিল, সেটা এই অধ্যাদেশের মাধ্যমে অর্জিত হয়নি। এই অধ্যাদেশে অতীতে যারা শাস্তি পেয়েছেন, তারা মুক্তি পাবেন। কিন্তু ঘুরেফিরে ওই একই বিধান আরেক জায়গায় রাখা হয়েছে, যাতে একই অভিযোগে গ্রেপ্তার করে শাস্তি দেওয়া হবে। এর চেয়ে বড় অযৌক্তিক বিষয় আর কী হতে পারে। অধ্যাদেশের বিধানে অস্পষ্টতা আছে।
বাংলাদেশের ইতিহাসের বিভিন্ন আন্দোলনে জনগণের আত্মত্যাগের কথা স্মরণ করিয়ে নজরুল ইসলাম খান বলেন, বাংলাদেশের মানুষ ভাষা আন্দোলনে জীবন দিয়েছে, স্বায়ত্তশাসন শাসন, গণঅভ্যুত্থান, ৭১ এর মহান মুক্তিযুদ্ধ, ৯০ এর ছাত্র আন্দোলন, এবং এই ২৪ এর জুলাই আগস্টের আন্দোলনসহ বিভিন্ন আন্দোলনে অনেক জীবন দিয়েছে। এতো জীবন দেওয়ার পর এখনও অসঙ্গতি নিয়ে আলোচনা হয়, এটা কেন হবে? আর কত জীবন দেবে এদেশের মানুষ, আর কত লড়াই করবে এদেশের মানুষ?
সেমিনারে নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্না সাইবার সুরক্ষা অধ্যাদেশের ৩৫ ধারার বিনা পরোয়ানায় গ্রেপ্তারের বিধান, আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি এবং মব ভায়োলেন্সের তীব্র সমালোচনা করেন।
সভাপতির বক্তব্যে মান্না বলেন, যদিও সরকার বলছে, বিধানটি আগের মতো উন্মুক্ত নয়, সংকুচিত করা হয়েছে। কিন্তু পুলিশ কোনো সীমাবদ্ধতায় থাকে না। যে আইন নেই, তার ওপরও পুলিশ কাজ করে। তিনি এই অধ্যাদেশটি বাতিলের দাবি জানান।
নাগরিক ঐক্যের সাংগঠনিক সম্পাদক সাকিব আনোয়ার সেমিনারে মূল বক্তব্য উপস্থাপন করেন। এছাড়াও সেমিনারে বক্তব্য দেন বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দলের (বাসদ) সাধারণ সম্পাদক বজলুর রশীদ ফিরোজ, বাংলাদেশ জাসদের সাধারণ সম্পাদক নাজমুল হক প্রধান, ভয়েস ফর রিফর্মের সহসমন্বয়ক ফাহিম মাশুরুর, রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলনের অর্থ সমন্বয়ক দিদারুল ভূঁইয়া, নাগরিক ঐক্যের সাধারণ সম্পাদক শহীদুল্লাহ কায়সার, এবং জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) ঢাকা মহানগর উত্তরের প্রধান সমন্বয়ক আকরাম হুসাইন।
ইএসএস/এমজে