ঢাকা: জুলাই গণহত্যার জন্য ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ প্রধান শেখ হাসিনার বিচার শুরু হয়েছে উল্লেখ করে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, ফ্যাসিবাদের পক্ষে কাজ করা প্রত্যেকের বিচার হতে হবে।
বুধবার (৯ জুলাই) দুপুরে রাজধানীর ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব নিউরোসায়েন্সেস ও হাসপাতালে চিকিৎসাধীন দলীয় নেতাদের দেখতে গিয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে ফখরুল এ কথা বলেন।
ফখরুল বলেন, বিএনপি আওয়ামী লীগের নির্যাতন, নিপীড়ন, হত্যা, গুম এবং খুনের সবচেয়ে বড় শিকার। আমার নিজেরও ১১২টা মামলা ছিল এবং আমাকে জেলে যেতে হয়েছে ১৩ বার।
তিনি বলেন, যারা ফ্যাসিবাদের পক্ষে কাজ করেছে, তাদের প্রত্যেকের শাস্তি হওয়া প্রয়োজন এবং তাদের আইনের আওতায় আনা উচিত।
শেখ হাসিনাকে এককভাবে ‘হাজার হাজার মানুষের হত্যাকাণ্ড এবং নির্যাতনের জন্য দায়ী’ উল্লেখ করে মির্জা ফখরুল বলেন, তার বিচার কিন্তু শুরু হয়েছে। আমরা আশাবাদী, গণহত্যা এবং এ ফ্যাসিজমের সঙ্গে জড়িত প্রত্যেকেরই বিচার হবে।
তিনি আরও বলেন, গণহত্যায় আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে যদি দলগতভাবে জড়িত থাকার প্রমাণ পাওয়া যায়, তাহলে দল হিসেবে তাদেরও বিচার হওয়া উচিত।
গণতন্ত্রে বিএনপির ভূমিকার কথা তুলে ধরে মির্জা ফখরুল বলেন, গণতন্ত্রের সবচেয়ে বড় শক্তি যদি কেউ থাকে সেটা বিএনপি। সবচেয়ে বেশি লড়াই যদি কেউ করে সেটা বিএনপি। বিএনপিই বাংলাদেশে একদলীয় শাসন থেকে বহুদলীয় গণতন্ত্র ফিরিয়ে এনেছে।
এ সময় তিনি দেশের সব রাজনৈতিক দলের প্রতি দেশকে সঠিক পথে ফিরিয়ে আনার দায়িত্ব পালনের আহ্বান জানান।
মির্জা ফখরুল নির্বাচনের প্রয়োজনীয়তা তুলে ধরে বলেন, প্রত্যেকটি রাজনৈতিক দলের দায়িত্ব হচ্ছে দেশকে সঠিক ট্র্যাকে ওঠানো। যত দ্রুত সেটা ওঠানো যাবে ততই মঙ্গল। সুতরাং যারা মনে করেন যে নির্বাচন প্রয়োজন নেই, আমার মনে হয় তারা আবার চিন্তা করবেন। নির্বাচন প্রয়োজন জনগণের জন্য। একটা নির্বাচিত সরকার দরকার, যে নির্বাচিত সরকারের সঙ্গে জনগণের সম্পর্ক থাকবে।
তিনি আরও বলেন, সেই কারণেই আমরা বলছি, যে সংস্কারগুলো হচ্ছে, প্রত্যেক সংস্কারে বিএনপি অংশ নিচ্ছে। আর এ সংস্কারের দাবি বিএনপিই তুলেছিল সবার আগে। সুতরাং সংস্কার এবং নির্বাচন এর মধ্যে কোনো পার্থক্য নেই।
পরে আয়েশা মেমোরিয়াল হাসপাতালে অসুস্থ শিল্পী ফরিদা পারভীনকে দেখতে যান মির্জা ফখরুল। এসময় তার চিকিৎসার জন্য বিএনপি চেয়ারপারসন ও ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের পক্ষ থেকে আর্থিক সহায়তা দেন তিনি।
ফরিদা পারভীনকে ‘লালন সংগীতে অদ্বিতীয়’ শিল্পী হিসেবে আখ্যায়িত করে ফখরুল সরকারের প্রতি তার সুচিকিৎসার জন্য বিশেষ বোর্ড গঠন এবং প্রয়োজনে বিদেশে সর্বোচ্চ চিকিৎসার ব্যবস্থা করার আহ্বান জানান। তিনি প্রধান উপদেষ্টাকে ব্যক্তিগতভাবে এ বিষয়ে উদ্যোগ নেওয়ার অনুরোধ করেন।
এ সময় বিএনপির সাংস্কৃতিক বিষয়ক সম্পাদক আশরাফ উদ্দিন উজ্জ্বল, সহ-সাংস্কৃতিক বিষয়ক সম্পাদক সাঈদ সোহরাব, জাসাস সভাপতি হেলাল খান এবং সাধারণ সম্পাদক জাকির হোসেন রুকনসহ আরও অনেকে উপস্থিত ছিলেন।
এর আগে তিনি নিউরো সায়েন্স হাসপাতালে চিকিৎসাধীন বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা কাউন্সিল সদস্য ও জিয়া পরিষদ চেয়ারম্যান ডা. আব্দুল কুদ্দুস এবং অধ্যাপক ডা. সিরাজউদ্দিনকে দেখতে যান।
ইএসএস/জেএইচ