ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ২ শ্রাবণ ১৪৩২, ১৭ জুলাই ২০২৫, ২১ মহররম ১৪৪৭

রাজনীতি

গোপালগঞ্জের পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে সরকারের ব্যর্থতার সমালোচনায় বিএনপি

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৪:৪২, জুলাই ১৭, ২০২৫
গোপালগঞ্জের পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে সরকারের ব্যর্থতার সমালোচনায় বিএনপি

ঢাকা: পরিকল্পিতভাবে গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়াকে নস্যাৎ করার জন্য আওয়ামী লীগের সমর্থকরা ফ্যাসিস্টবিরোধী আন্দোলনে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা পালনকারী জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপির) সমাবেশে আক্রমণের ঘটনা ঘটিয়েছে বলে জানিয়েছে বিএনপি। এ ঘটনায় সরকারকে ১৪৪ ধারা ও কারফিউ জারি করতে হয়, যাকে এই মুহূর্তে গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়াকে ব্যাহত করার নীল নকশা হিসেবে মনে করছে দলটি।

বৃহস্পতিবার (১৭ জুলাই) এক বিবৃতিতে বিএনপির পক্ষ থেকে জানানো হয়, বুধবার রাতে গুলশান চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে বিএনপির স্থায়ী কমিটির বৈঠকে এসব আলোচনা হয়। বৈঠকে ১৬ জুলাই গোপালগঞ্জে এনসিপির সভায় আওয়ামী লীগের দুর্বৃত্ত ও সমর্থকদের হামলায় ৪ জন নিহত হওয়ায় গভীর নিন্দা ও ক্ষোভ প্রকাশ করা হয়।  

গোপালগঞ্জে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে সরকারের ব্যর্থতার সমালোচনা করে বৈঠক আশা করা হয়, রাজনৈতিক দলগুলো অত্যন্ত সর্তকতার সঙ্গে তাদের কর্মসূচি নির্ধারণ করবে, অন্যথায় গণতন্ত্র বিরোধী শক্তিকে সুযোগ করে দেওয়া হবে।

এছাড়া স্থায়ী কমিটির ওই বৈঠকে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের বৈঠকের সর্বশেষ অগ্রগতি সম্পর্কে সবাইকে বিস্তারিত অবহিত করেন স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদ। বৃহস্পতিবার রাত ৮টায় এ বিষয়ে পুনরায় আলোচনা হবে বলেও বিবৃতিতে জানানো হয়েছে।

গণতন্ত্রে উত্তরণের পথকে বিঘ্নিত করার জন্য এবং আগামী ফেব্রুয়ারি মাসে প্রতিশ্রুত জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে ব্যাহত করার জন্য একটি মহল পরিকল্পিতভাবে দেশের আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি ঘটাচ্ছে বলে মনে করছে বিএনপির শীর্ষ পর্যায়ের নেতৃবৃন্দ। মবক্রেসি, হত্যা, ছিনতাই, ডাকাতি, চাঁদাবাজি ইত্যাদি অপরাধমূলক কর্মকাণ্ড যেভাবে বৃদ্ধি পাচ্ছে, তাতে সরকারের সংশ্লিষ্ট বিভাগগুলোর অযোগ্যতা এবং নির্লিপ্ততা পরিস্থিতিকে আরও অবনতির দিকে নিয়ে যাচ্ছে বলে মনে করছে বিএনপি।

স্থায়ী কমিটির ওই বৈঠকে আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতির উন্নয়নের জন্য অতিদ্রুত সকল প্রকার ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য সরকারকে আহ্বান জানানো হয়। এছাড়া বিবৃতিতে জানানো হয়, সম্প্রতি মিটফোর্ডে সংগঠিত নৃশংস হত্যাকাণ্ডে যেভাবে দলটিকে অন্যায়ভাবে জড়িয়ে কয়েকটি রাজনৈতিক দল শিষ্টাচার বিবর্জিত বক্তব্য ও স্লোগান দিয়েছে, তাতে গোটা জাতি স্তম্ভিত হয়েছে। বিশেষ করে স্বাধীনতার ঘোষক শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান, বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া এবং ফ্যাসিবাদবিরোধী আন্দোলনের জনপ্রিয় নেতা তারেক রহমান সম্পর্কে রাজনৈতিক শিষ্টাচার বিবর্জিত, অশ্লীল বক্তব্য ও স্লোগান গোটা জাতিকে বিক্ষুব্ধ করেছে বলে জানায় বিএনপি।

এই ধরনের কর্মকাণ্ড শুধুমাত্র রাজনৈতিক পরিবেশকেই বিনষ্ট করবে না, গণতন্ত্রে উত্তরণের পথকে এবং জাতীয় সংসদ নির্বাচনের প্রক্রিয়াকে ব্যাহত করবে বলে মনে করছে বিএনপির নেতৃবৃন্দ। বৈঠকে আশা করা হয়- সকল রাজনৈতিক দল পারস্পরিক মর্যাদা ও সৌহার্দ্যের বিষয়টিকে প্রাধান্য দিয়ে এ ধরনের অরাজনৈতিক কর্মকাণ্ড থেকে বিরত থাকবে। সেই সঙ্গে বৈঠকে মিটফোর্ডসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে সংঘটিত হত্যাকাণ্ডের তীব্র নিন্দা ও ক্ষোভ জানানো হয় এবং অবিলম্বে অপরাধীদের গ্রেপ্তার করে আইনের আওতায় আনার জন্য সরকারের প্রতি আহ্বান জানায় সভায় উপস্থিত নেতারা।

বুধবার স্থায়ী কমিটির এই বৈঠকে লন্ডন থেকে ভার্চ্যুয়ালি যুক্ত হয়ে সভাপতিত্ব করেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। এছাড়া সভায় বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন, মির্জা আব্বাস, গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, ড. আব্দুল মঈন খান, নজরুল ইসলাম খান, মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী, সালাহউদ্দিন আহমেদ, বেগম সেলিমা রহমান, ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু, মেজর অব. হাফিজ উদ্দিন আহমেদ, ডা. এ জেড এম জাহিদ হোসেন উপস্থিত ছিলেন।

এসবিডব্লিউ/এমএম

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।