ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ২৩ শ্রাবণ ১৪৩২, ০৭ আগস্ট ২০২৫, ১২ সফর ১৪৪৭

রাজনীতি

‘ষড়যন্ত্র তত্ত্ব’ ধরে এগোনোর চেষ্টা আ. লীগের

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট  | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১২:২৪, আগস্ট ৭, ২০২৫
‘ষড়যন্ত্র তত্ত্ব’ ধরে এগোনোর চেষ্টা আ. লীগের

ক্ষমতা হারানোর পর আওয়ামী লীগ তাদের পতনের জন্য দেশি-বিদেশি ষড়যন্ত্রকে দায়ী করছে এবং নিজেদের ফিরে আসার কৌশল খুঁজছে। কার্যক্রম নিষিদ্ধ দলটি বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকারের ব্যর্থতাকে কাজে লাগিয়ে আবার রাজনীতিতে সক্রিয় হওয়ার চেষ্টা করছে।

তবে আন্দোলন দমনে সহিংসতার বিষয়ে দলটির কোনো অনুশোচনা দেখা যাচ্ছে না, যা নিয়ে রাজনৈতিক অঙ্গনে সমালোচনা চলছে।

রাজনৈতিক বিশ্লেষকেরা বলছেন, সাড়ে ১৫ বছরের দীর্ঘ শাসনামলে আওয়ামী লীগ ক্ষমতার অহংকারে রাজনীতি বিচ্ছিন্ন হয়ে প্রতিপক্ষ রাজনৈতিক দলগুলো এবং এমনকি সাধারণ মানুষকেও ক্ষেপিয়ে তুলেছিল। দলটি একা হয়ে পড়েছিল।

সেই পটভূমিতে পতনের আগমুহূর্ত পর্যন্ত ছাত্র জনতার আন্দোলনে আওয়ামী লীগ সরকারের দমননীতির কারণে সাধারণ মানুষের মধ্যে তাদের প্রতি এক ধরনের নেতিবাচক ধারণা তৈরি হয়েছে। এ ছাড়া বিএনপি, জামায়াত, এনসিপিসহ যে দলগুলো বর্তমানে রাজনীতি নিয়ন্ত্রণ করছে, তাদের সঙ্গে অন্তর্বর্তী সরকারও আওয়ামী লীগ বিরোধী অবস্থানে রয়েছে।

৭৬ বছরের আওয়ামী লীগ এবার সবচেয়ে বেশি সংকটে পড়েছে বলে রাজনীতিতে আলোচনা আছে। কারণ দলটির শীর্ষ নেতাসহ নেতৃত্বের বড় অংশ দেশ ছেড়ে ভারত, যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্যসহ বিভিন্ন দেশে আশ্রয় নিয়ে আছেন। দলটির সাবেক মন্ত্রী, এমপিসহ নেতা-কর্মীদের একটা বড় অংশ গ্রেপ্তার হয়ে মানবতাবিরোধী অপরাধ ও হত্যাকাণ্ডসহ বিভিন্ন মামলায় বিচারের মুখোমুখি হচ্ছেন।

দেশের ভেতরে থাকা নেতা-কর্মীরাও এক বছরে আত্মগোপন থেকে বেরিয়ে আসতে পারেননি। রাজনীতির মাঠে থেকে দলকে সংগঠিত করতে কোনো নেতা এখনো সাহস দেখাতে পারেননি। প্রশ্ন হলো, চরম প্রতিকূল পরিস্থিতিতে ভুল স্বীকার বা কোনো অনুশোচনা না করে ষড়যন্ত্র তত্ত্ব বা অন্তর্বর্তী সরকারের ব্যর্থতার ওপর ভরসা করে দলটির পক্ষে সহসাই ঘুরে দাঁড়ানো কী সম্ভব?

আওয়ামী লীগের নেতৃত্বের প্রতিও মানুষের আস্থার সংকটও রয়েছে, সে ব্যাপারেও তাদের বিকল্প কোনো চিন্তা নেই বলে মনে হয়েছে। আওয়ামী লীগের নির্ভরযোগ্য সূত্রগুলো জানাচ্ছে, দলটিতে এখনো শেখ হাসিনার একক নিয়ন্ত্রণ রয়েছে। তার নেতৃত্বেই দলকে সংগঠিত করার চেষ্টা চলছে।

তবে শেখ হাসিনার ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয় দলের রাজনীতিতে আগের তুলনায় অনেক বেশি সক্রিয় হয়েছেন। দলটির নেতাদের অনেকের ধারণা, তাদের নেত্রীর নেতৃত্বে সজীব ওয়াজেদ জয়কে সামনে রেখে দলটির ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা করা হচ্ছে।

অন্যদিকে, অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তী সরকার এখন ফেব্রুয়ারিতে জাতীয় নির্বাচনের প্রক্রিয়া শুরু করেছে। এই সরকার আওয়ামী লীগ ও এর মিত্র দলগুলোর এ নির্বাচনে অংশ গ্রহণের সুযোগ রাখছে না এবং অন্তর্ভুক্তিমূলক নির্বাচন হবে না, এই বক্তব্য নিয়ে ক্ষমতাচ্যুত দলটি আন্তর্জাতিক পর্যায়ে ও দেশের ভেতরে জনমত তৈরির চেষ্টা করবে বলেও এর নেতারা বলছেন।

তারা মনে করেন, যেহেতু আওয়ামী লীগের সমর্থকদের বড় অংকের ভোট আছে, সে কারণে নির্বাচনে তাদের দলকে বাইরে রাখা হলে তা বড় ইস্যু হবে। কিন্তু দেশে-বিদেশে পালিয়ে থাকা আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরা সামাজিক মাধ্যমে এখন ব্যাপক তৎপর হলেও মাঠের রাজনীতিতে তাদের অবস্থান নেই। এমন কঠিন বাস্তবতায় নির্বাচন ঘিরে মাঠে দলটি সক্রিয় হওয়ার কোনো সুযোগ পাবে কি না, এই প্রশ্নও রয়েছে বিশ্লেষকদের।

ষড়যন্ত্র তত্ত্বে ভরসা কেন

আওয়ামী লীগ সরকারের পতনে গণঅভ্যুত্থানের কৃতিত্বের দাবি নিয়ে বিএনপি, জামায়াতে ইসলামীসহ সক্রিয় দলগুলো এবং বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ও ইসলামী ছাত্রশিবিরসহ বিভিন্ন সংগঠন বিতর্কে জড়িয়েছে সাম্প্রতিক সময়ে। তাদের পাল্টাপাল্টি দাবিতে এক ধরনের বিভক্তিও তৈরি করছে। এই পরিস্থিতিটাকে আওয়ামী লীগ তাদের ষড়যন্ত্র তত্ত্বের পক্ষে যুক্তি হিসেবে তুলে ধরছে।

দলটি জুলাই-আগস্টের আন্দোলন দমনের চেষ্টার ক্ষেত্রেও জামায়াত-শিবিরসহ বিভিন্ন পক্ষের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রের অভিযোগ তুলেছিল। আওয়ামী লীগের শাসনের পতনের পরও তারা ঘটনাপ্রবাহকে ষড়যন্ত্র তত্ত্ব হিসেবেই সামনে আনে। এখন সেই আন্দোলনের কৃতিত্বের দাবি নিয়ে এর অংশীজনদের বিভক্তির প্রেক্ষাপটে আওয়ামী লীগ মনে করছে, তাদের প্রতি মানুষের নেতিবাচক ধারণার পরিবর্তনের সুযোগ তৈরি হয়েছে।

তবে একদিকে গ্রেপ্তারের আতঙ্ক, অন্যদিকে, রাজনীতির মাঠের এখনকার নিয়ন্ত্রক দলগুলোর আক্রমণের ভয়— এমন প্রতিকূল অবস্থার মধ্যেও আত্মগোপনে থাকা আওয়ামী লীগের তৃণমূলের নেতা-কর্মীরা বিশ্বাস করেন, শেখ হাসিনার সরকারের পতনের ক্ষেত্রে দেশি-বিদেশি ষড়যন্ত্র হয়েছে। দেশের অন্তত পাঁচটি জেলার বেশ কয়েকজন নেতার সঙ্গে কথা বলে এমন ধারণা পাওয়া গেছে।

বিশ্লেষকেরা বলছেন, আওয়ামী লীগ ছাত্র জনতার আন্দোলনে হত্যাকাণ্ডের দায় এড়াতে চায়। সেজন্যই ষড়যন্ত্র তত্ত্বের ওপর জোর দিচ্ছে। তা নাহলে ভুল স্বীকার করা হবে এবং তখন বিপর্যস্ত দলের নেতা-কর্মীদের হতাশা বাড়বে, যা দলটিকে সংগঠিত করার ক্ষেত্রেও সমস্যা আরও বাড়াতে পারে।
আসলে বাংলাদেশের রাজনীতিতে ভুল স্বীকারের নজির সেভাবে নেই। ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে জামায়াতে ইসলামী অন্তত দশজন নেতার বিচার হয়েছে। কিন্তু মুক্তিযুদ্ধে ভূমিকার জন্য জামায়াত দুঃখ প্রকাশ করেনি বা ক্ষমা চায়নি। এ বিষয়টি বিভিন্ন সময় উদাহরণ হিসেবে আলোচনায় আসে।

দেশের ভেতরে রাজনীতির সুযোগ না পাওয়া পর্যন্ত জুলাই অভ্যুত্থানে ভূমিকার জন্য আওয়ামী লীগও কোনো অনুশোচনা প্রকাশ করবে না বলে দলটির একাধিক নেতা বলেছেন। তারা মনে করেন, এখন অনুশোচনা প্রকাশ করা হলে তাদের নেতাকর্মীদের মনোবলে নেতিবাচক প্রভাব ফেলবে। যদিও এর নেতাদের কেউ কেউ বলছেন, তাদের শাসনের পতনের ছাত্র-জনতার আন্দোলনে দমননীতি চালানো ও হত্যাকাণ্ডের ঘটনা নিয়ে দেশে-বিদেশে পালিয়ে থাকা দলের নেতাদের মধ্যে পর্যালোচনা হয়েছে।

সেই আন্দোলন সামলাতে সে সময় রাজনৈতিক দিক থেকেও দলটির সরকার একের পর এক ভুল পদক্ষেপ নিয়েছে, এমন আলোচনাও তাদের ভেতরে হয়েছে। কিন্তু সেই ভুল প্রকাশ্যে স্বীকার করার চিন্তা এখনো আওয়ামী লীগের নেতৃত্বের নেই।

তবে লেখক ও রাজনৈতিক বিশ্লেষক মহিউদ্দিন আহমদ মনে করেন, ষড়যন্ত্র তত্ত্বের ওপর ভর করে এবং কোনো অনুশোচনা না দেখিয়ে আওয়ামী লীগ মানুষের আস্থা ফেরাতে পারবে না। তিনি বলেন, বাস্তবতা বিবেচনা নিয়ে আওয়ামী লীগের কৌশল ঠিক করা প্রয়োজন।

অন্যের ব্যর্থতা কতটা সুযোগ আওয়ামী লীগের জন্য

দেশে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি ও মব বা দলবদ্ধ বিশৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণ করাসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে সরকারের বিরুদ্ধে ব্যর্থতার অভিযোগ রয়েছে। অন্তর্বর্তী সরকারের ব্যর্থতা আওয়ামী লীগের মাঠে সক্রিয় হওয়ার ক্ষেত্রে সহায়ক হবে বলে দলটির নেতারা মনে করেন।

গত এক বছরে আওয়ামী লীগের রাজনৈতিক কার্যক্রমের পর্যালোচনা করতে গিয়ে ওবায়দুল কাদের বিবিসি বাংলাকে বলেন, বাংলাদেশে মুহাম্মদ ইউনূস সরকারের ব্যর্থতাই আওয়ামী লীগের জন্য জনগণের সমর্থনের দিক থেকে নতুন আশার আলো সঞ্চার করেছে— এটা অস্বীকার করার উপায় নেই।

তবে বিশ্লেষকেরা মনে করেন, অন্যের ব্যর্থতা কিছুটা সহায়ক হতে পারে। কিন্তু সেটাকে পুঁজি করে দল এগিয়ে নেওয়া সম্ভব নয়। কারণ আওয়ামী লীগের দেশ শাসনের সময়টাতে দমন-পীড়নে বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলো ও ভিন্নমত দাঁড়াতে পারেনি। নির্বাচন ও নির্বাচনী প্রতিষ্ঠানগুলোকে ধ্বংস করা হয়েছে।

এ ছাড়া রাষ্ট্রীয় সব প্রতিষ্ঠানকে দলীয় প্রতিষ্ঠানে পরিণত করেছিল। তাদের মাধ্যমেই আওয়ামী লীগ দেশ চালাত। আওয়ামী লীগ ও এর অঙ্গ-সহযোগী সংগঠনগুলোও সাংগঠনিকভাবে দুর্বল হয়ে পড়েছিল; ভিড় জমেছিল সুবিধাবাদীদের।

সরকার পতনের পর একসময় ছাত্রলীগ করা অনেকেই যখন নিজেদের ইসলামী ছাত্রশিবিরের নেতা হিসেবে ঘোষণা করেন, তখন ছাত্রলীগ ও আওয়ামী লীগ নেতৃত্বের বিস্মিত হওয়া ছাড়া আর কিছুই করার ছিল না। এই বাস্তবতা কতটা বিবেচনায় নিয়েছে আওয়ামী লীগ, সেই সন্দেহ রয়েছে বিশ্লেষকদের।

কীভাবে রাজনীতির মাঠে অবস্থান নিতে চাইছে আওয়ামী লীগ

বিভিন্ন দেশে পালিয়ে থেকে দলকে দেশের ভেতরে সক্রিয় করা সম্ভব কি না, আওয়ামী লীগের ভেতরেই এই প্রশ্ন ছিল। এমন পরিস্থিতিতে শেখ হাসিনার নেতৃত্বেই ঢাকায় দলকে সংগঠিত করার জন্য লোক খুঁজেছিল দলটি। কিন্তু কেউ সাহস দেখাননি।

বিশ্লেষকেরা মনে করেন, আওয়ামী লীগের শাসনে দুর্নীতির মাত্রাও ছিল ব্যাপক। সে কারণেও দলটির কেউ দেশের ভেতরে হাল ধরতে এগিয়ে আসার সাহস পাননি।

তবে বিভিন্ন দেশে আশ্রয় নেওয়া আওয়ামী লীগের কয়েকজন নেতার সঙ্গে কথা হলে তারা বলেন, এক বছর ধরে ভারতে অবস্থান করেই শেখ হাসিনা জেলা-উপজেলা এবং এমনকি ইউনিয়ন পর্যায় পর্যন্ত নেতাকর্মীদের সঙ্গে টেলিফোনে যোগাযোগ রেখেছেন। ভার্চ্যুয়ালি অনেক বৈঠকও করেছেন। এখন সেই যোগাযোগ আরও বেড়েছে।

বর্তমানে দলটির অন্যতম একজন মুখপাত্র হিসেবে কাজ করছেন মোহাম্মদ আলী আরাফাত। তিনি যুক্তরাষ্ট্রে আশ্রয় নিয়েছেন। তিনি বিবিসি বাংলাকে বলেন, আমাদের শীর্ষ থেকে তৃণমূল পর্যন্ত যোগাযোগ বেড়েছে। আমাদের দল এখন অনেক বেশি সংগঠিত হয়েছে।

গত মাসে গণঅভ্যুত্থানের ছাত্র নেতৃত্বের দল এনসিপির কর্মসূচি ঘিরে গোপালগঞ্জে হামলা, সংঘর্ষ, সহিংসতায় প্রাণহানির ঘটনা ঘটেছে। আওয়ামী লীগের নেতারা বলছেন, গোপালগঞ্জে তাদের দলের নেতাকর্মীদের সঙ্গে সাধারণ মানুষও প্রতিরোধ গড়েছিল, যা তাদের মনোবল বাড়িয়েছে।

কিন্তু সেই ঘটনার পর গোপালগঞ্জে আওয়ামী লীগকেও ক্র্যাকডাউনের মুখে পড়তে হয়েছে। সেখানে ১৩টি মামলায় ১৫ হাজারের বেশি আসামি করে গ্রেপ্তার অভিযান চালানো হয়েছে। অবশ্য দেশের অন্য এলাকায় গোপালগঞ্জের মতো শক্তি দেখানোর মতো সাংগঠনিক অবস্থা এ মুহূর্তে দলটির নেই।

দলটির নেতারাও বলছেন, এখন তারা শক্তি ক্ষয় করতে চান না। তারা নিজেরা আরও সংগঠিত হয়ে সুযোগ বুঝে মাঠের রাজনীতিতে অবস্থান তৈরির চেষ্টা চালাবেন। তবে যুক্তরাষ্ট্রসহ পশ্চিমাদের সমর্থন পেতে আন্তর্জাতিক পর্যায়ে আওয়ামী লীগ বেশ তৎপর।

জয় কি নেতৃত্বে আসছেন

শেখ হাসিনা নিজেই দলের তৃণমূল পর্যন্ত যোগাযোগ রেখে দলকে ঐক্যবদ্ধ রেখেছেন বলে আওয়ামী লীগের নেতারা বলছেন। কয়েক সপ্তাহ আগে তিনি ভারতে আশ্রয় নেওয়া তার দলের অন্তত ছয়জন নেতার সঙ্গে বৈঠক করেছেন। গত এক বছরে এই প্রথম শেখ হাসিনা দলের কয়েকজন নেতার সঙ্গে ওই বৈঠক করেন।

দলটির সূত্রগুলো জানায়, শেখ হাসিনা এখন দলের নির্বাহী কমিটির সদস্যদের সঙ্গে ধারাবাহিকভাবে বৈঠক করবেন। অন্যদিকে তিনি তার ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয়কে রাজনীতিতে সক্রিয় করেছেন। জয় এখন আন্তর্জাতিক পর্যায়ে ও দলের নেতাকর্মীদের সঙ্গে যোগাযোগ করাসহ বিভিন্ন দায়িত্ব পালন করছেন।

তাকে দল সংগঠিত করার ক্ষেত্রে সামনে আনা হচ্ছে। কিন্তু দলের নিয়ন্ত্রণ শেখ হাসিনার হাতেই থাকবে বলে দলের নেতাদের ধারণা। বিশ্লেষকেরা বলছেন, শেখ পরিবারের কাছেই আওয়ামী লীগের নিয়ন্ত্রণ থাকবে। তা নাহলে দলে ভাঙন হতে পারে, এই বিবেচনা হয়তো দলটির ভেতরে বেশি কাজ করছে।

নির্বাচন ঘিরে আওয়ামী লীগের অবস্থান

গণঅভ্যুত্থানে মানবতাবিরোধী অপরাধের বিচার শুরু হয়েছে শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে। আওয়ামী লীগ নেতাদের বিরুদ্ধে এই বিচার শেষ না হওয়া পর্যন্ত দলটির রাজনৈতিক কার্যক্রম স্থগিত করা হয়েছে। নির্বাচন কমিশন দলের নিবন্ধন স্থগিত করেছে এবং নৌকা প্রতীক বাদ দেওয়া হয়েছে।

সাবেক সচিব ও বিশ্লেষক আবু আলম শহীদ খান মনে করেন, সরকার আওয়ামী লীগকে নির্বাচনে অংশ নিতে দেবে না, এটা স্পষ্ট।

দলটির নেতারা মনে করেন, সরকারের বাধা ছাড়াও আওয়ামী লীগের কেউ স্বতন্ত্র প্রার্থী হতে চাইলে অন্য দলগুলোও আক্রমণ বা বাধার সৃষ্টি করতে পারে।

সরকার ও এখানকার সক্রিয় দলগুলো আওয়ামী লীগ, এর মিত্র দলগুলোকে বাদ দিয়ে একতরফা নির্বাচনের প্রক্রিয়া শুরু করেছে বলে দলটির অভিযোগ। সে কারণে দলটি আন্তর্জাতিক শক্তিগুলোর দৃষ্টি আকর্ষণের চেষ্টা করবে।

আবু আলম শহীদ খান বলছেন, আওয়ামী লীগ নিয়ে মানুষের মনে ক্ষোভ আছে, প্রশ্ন আছে। সে বিষয় বিবেচনায় অবস্থান স্পষ্ট না করলে দলটির সহসাই রাজনীতিতে ফেরা বেশ কঠিন।

বিবিসি বাংলা অবলম্বনে

এনডি
 

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

রাজনীতি এর সর্বশেষ