ঢাকা, সোমবার, ১৯ শ্রাবণ ১৪৩২, ০৪ আগস্ট ২০২৫, ০৯ সফর ১৪৪৭

রাজনীতি

একদফার প্রকৃত ঘোষক দেশের ছাত্র-জনতা: নাহিদ 

ইউনিভার্সিটি করেসপন্ডেন্ট  | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২০:০০, আগস্ট ৩, ২০২৫
একদফার প্রকৃত ঘোষক দেশের ছাত্র-জনতা: নাহিদ  সমাবেশে বক্তব্য রাখছেন এনসিপির আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম/ ছবি: জি এম মুজিবুর

কোনো ব্যক্তি বা দল নয়, জুলাই অভ্যুত্থানকারী ছাত্র-জনতা এবং শহীদ ভাইবোনেরা জুলাই অভ্যুত্থানে একদফার প্রকৃত ঘোষক বলে মন্তব্য করেছেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম।

রোববার (৩ আগস্ট) কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারের আয়োজিত সমাবেশে তিনি এ কথা বলেন।

এরপর তিনি ২৪ দফা ইশতেহার তুলে ধরেন।  

নাহিদ বলেন, ৩ আগস্ট একদফা ঘোষণার এক বছর। ঠিক এক বছর আগে আমরা কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে সমবেত হয়েছিলাম। দেশের মানুষ শহীদ মিনারের সমবেত হয়েছিল। শহীদ মিনার থেকে আমরা ফ্যাসিবাদী ব্যবস্থা বিলোপের একদফা ঘোষণা করেছিলাম।  

তিনি বলেন, সেদিন একদফা কোনো ব্যক্তি বা দলের পক্ষে থেকে ঘোষণা করা হয়নি। একদফা ঘোষণা করা হয়েছিল বাংলাদেশের জনগণের পক্ষ থেকে। অভ্যুত্থানকারী ছাত্র-জনতার পক্ষ থেকে। ফলে একদফার প্রকৃত ঘোষক বাংলাদেশের জনগণ, বাংলাদেশের অভ্যুত্থানকারী ছাত্র-জনতা এবং শহীদ ভাইবোনেরা।  

তিনি আরও বলেন, একদফা ঘোষণার একটি ঐতিহাসিক প্রেক্ষাপট ছিল। ওয়ান ইলেভেনের সময় থেকে আওয়ামী ফ্যাসিবাদের ভিত্তি তৈরি করা হয়েছিল। ১৫-১৬ বছর কোনো নির্বাচন ও ভোটাধিকার ছিল না। গুম-খুন নির্যাতন, মানবাধিকার হরণ হয়েছে।  

নাহিদ বলেন, সর্বশেষ ছাত্রদের কোটা সংস্কার আন্দোলনে সন্ত্রাসী ফ্যাসিস্ট পুলিশ বাহিনী নির্মমভাবে গুলি চালিয়েছে। আমাদের ভাইবোনদের শহীদ করেছে। বাংলাদেশের জনগণ আর মেনে নিতে পারেনি। ছাত্ররা নয় দফা ঘোষণা করেছিল। ফলে ফ্যাসিস্ট সরকারের পক্ষে এটি বাস্তবায়ন করা সম্ভব নয়। কারণ ফ্যাসিস্ট সরকারই খুনের দায়ে দায়ী ছিল।

তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশের জনগণ নিজে দায়িত্ব নিয়ে নিয়েছিল। তারা একদফা ঘোষণা করেছিল। ফ্যাসিবাদী ব্যবস্থার বিলোপ এবং নতুন রাজনৈতিক বন্দোবস্ত। আমি দায়িত্ব এবং দরদের রাজনীতির ঘোষণা দিয়েছিলাম। আমরা সাম্য, মানবিক মর্যাদা এবং সামাজিক সুবিচারের ঘোষণা দিয়েছিলাম।  

নাহিদ বলেন, আমরা বলেছিলাম, এমন একটি ব্যবস্থা করব, যেখানে স্বৈরতন্ত্র এবং ফ্যাসিবাদ কখনো ফিরে আসতে পারবে না। আমরা জুলাই পদযাত্রায় বিভিন্ন জায়গায় বলেছি, ফ্যাসিবাদী সরকারের পতন হয়েছে, বন্দোবস্তের বিলোপ আমরা করতে পারিনি। এক বছর পরে এসে আমরা সেই সীমাবদ্ধতা এবং ব্যর্থতার কথাও বলতে এসেছি।  

তিনি বলেন, আমরা পুরোনো সংবিধান বাতিল করে একটি নতুন সংবিধান প্রণয়ন করতে। আমরা পারিনি ফ্যাসিবাদী বন্দোবস্তের ক্ষমতার স্তম্ভ দুর্নীতি পরায়ণ অলিগার্ক ব্যবসায়ী ছিল। যে লুটেরা অর্থনীতি ছিল তা ভেঙে দিতে। ফ্যাসিবাদী ব্যবস্থার যে সাংস্কৃতিক ভিত্তি ছিল, গণমাধ্যম থেকে শুরু করে বিভিন্ন জায়গায় যে দোসররা ছিল, তাদের সম্পূর্ণভাবে পরাজিত করতে। আমরা পারিনি, সেনা বাহিনীসহ প্রশাসনকে জনগণের প্রতিষ্ঠান হিসেবে গড়ে তুলতে। আমাদের ব্যর্থতার কথা শিকার করেই আমরা শহীদ মিনারে সমবেত হয়েছি ভবিষ্যৎ বাংলাদেশের জন্য শপথ নিতে।

এ সময় তিনি ফ্যাসিবাদবিরোধী সব রাজনৈতিক দল, ছাত্র সংগঠন, নারী, প্রবাসী, স্কুল, কলেজ, মাদ্রাসা, প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়, যারা শহীদ হয়েছে, তাদের পরিবারের সদস্য এবং আহতরা এবং জুলাইয়ে অংশ নেওয়া বাংলাদেশের আপামর জনতাকে স্মরণ করেন।

এফএইচ/এএটি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।