মাদারীপুর: তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে গোপালগঞ্জ-মাদারীপুর সীমান্তে দুই গ্রামবাসীর মধ্যে ৫ ঘণ্টাব্যাপী সংঘর্ষে ৪ পুলিশসহ শতাধিক ব্যক্তি আহত হয়েছেন।
শনিবার বেলা ১১টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত দুই জেলার সীমান্তের মাদারীপুরের রাজৈরের টেকেরহাট বন্দরের উত্তর পাড় এলাকা সংলগ্ন চরপ্রসন্নদী ও তাতীকান্দা গ্রামবাসীর মধ্যে এ সংঘর্ষ হয়।
এ সময় ঢাকা-বরিশাল মহাসড়কে বেশকিছু দোকানপাটে ভাঙচুর, লুটপাট ও অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটে। পরে পুলিশ ও বিজিবি এসে ৭০ রাউন্ড ফাঁকা গুলি চালিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
এ ঘটনায় ওই মহাসড়কের উভয়পায়ে প্রায় ১০ কিলোমিটার দীর্ঘ যানজটের সৃষ্টি হয়। আটকা পড়েন প্রায় অর্ধলাখ যাত্রী।
প্রত্যক্ষদর্শী ও পুলিশ জানায়, শুক্রবার রাতে গোপালগঞ্জের মুকসুদপুর উপজেলার হরিরচর গ্রামের মান্না হাওলাদার টেকেরহাট উত্তর পাড় হয়ে দুই মেয়েকে নিয়ে বাড়ি ফিরছিলেন। পথে চোখের উপর লাইটের আলো পড়লে ওই স্থানে অবস্থানরত রাজৈর উপজেলার তাতীকান্দা গ্রামের বিপ্লব ও নুর মোহাম্মাদকে দোষারোপ করেন তিনি। এ নিয়ে তাদের মধ্যে বাকবিতণ্ডা হয়।
ওই ঘটনার জের ধরে শনিবার সকাল থেকে চরপ্রসন্নদী ও তাতীকান্দা দুই গ্রামের লোকদের মধ্যে থেকে থেকে সংর্ঘষ শুরু হয়। একপর্যায়ে দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে ব্যাপক সংঘর্ষে লিপ্ত হয় দুই গ্রামবাসী। পরে তা ব্যাপক আকার ধারণ করে।
খবর পেয়ে দুই থানার পুলিশ ও মাদারীপুরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার উত্তম কুমারসহ দাঙ্গা পুলিশ এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনার চেষ্টা করেও ব্যর্থ হন। একপর্যায়ে সংঘর্ষকারীদের সঙ্গে পুলিশের ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া হয়।
এ সময় গ্রামবাসী পাশের সহাসড়কের ২০টি দোকানে ভাঙচুর, লুটপাট ও অগ্নিসংযোগ করে। পরে দুই জেলা থেকে অতিরিক্ত পুলিশ এসে ৭০ রাউন্ড টিয়ারগ্যাস ও ফাকা গুলি বর্ষণ করে পরিস্থিতি শান্ত করে।
সংঘর্ষ চলাকালে রশিদ ও আবদুল আজিজ নামে দুই উপপরিদর্শক (এসআই) , গোয়েন্দা পুলিশ নজরুল, কনস্টেবল কামরুল হাসান এবং জুয়েল, খায়ের, এয়াকুব, খোকন বেপারী, আহাদ, রনিসহ শতাধিক ব্যক্তি আহত হয়। তাদের রাজৈর হাসপতালে ও স্থানীয় বিভিন্ন ক্লিনিকে চিকিৎসা দেওয়া হয়।
এদিকে, ৫ ঘণ্টা ধরে থেমে থেমে এ সংঘর্ষ চলাকালে মহাসড়কের হ্যামিল্টন ব্রিজের উভয়পাশে ১০ কিলোমিটার জুড়ে প্রায় ৯ শতাধিক গাড়িসহ অর্ধলক্ষাধিক যাত্রী আটকা পড়েন।
রাজৈর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মিজানুর রহমান বাংলানিউজকে বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, খবর পেয়ে তিনি বিজিবি নিয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন।
রাজৈর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান শাহজাহান খান জানান, বর্তমানে পরিস্থিতি শান্ত রয়েছে।
বাংলাদেশ সময়: ১৭২৫ ঘণ্টা, জানুয়ারি ১০, ২০১৫