ঢাকা: বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে অবরুদ্ধ রাখা ও দলীয় নেতাকর্মীদের নামে মামলা ও হামলার প্রতিবাদে ৫ জেলা ও ১ উপজেলায় রোববার (১১ জানুয়ারি) বিএনপি ও ২০ দলের ডাকা সকাল-সন্ধ্যা হরতাল চলছে।
ইতোমধ্যে শেষ হয়েছে পিরোজপুরে বিএনপির ডাকা অর্ধদিবস হরতাল।
বিক্ষিপ্ত দু’একটি ঘটনা ছাড়া ঢিমেতালে চলা এ হরতালে মিছিল-পিকেটিং ও তেমন কোনো অপ্রীতিকর ঘটনার খবর পাওয়া যায়নি।
বাংলানিউজের স্টাফ ও এসব জেলা ও উপজেলা করেসপন্ডেন্টদের পাঠানো খবর:
সিরাজগঞ্জ: সিরাজগঞ্জে বাস টার্মিনাল থেকে কোনো আঞ্চলিক এবং দুরপাল্লার যানবাহন ছেড়ে যায়নি। ট্রেন চলাচল স্বাভাবিক রয়েছে।
তবে যাত্রীবাহী বাস চলাচল না করলেও সকালে বিশ্ব ইজতেমাগামী বাস চলাচল করে। শহরের দোকানপাট বন্ধ রয়েছে ও স্কুল-কলেজগুলোতে ছাত্র-ছাত্রীদের উপস্থিতি কম লক্ষ্য করা গেছে।
সড়ক-মহাসড়কগুলোতে পুলিশি নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে। বঙ্গবন্ধু যমুনা সেতু দিয়ে যানবাহন চলাচল করছে কম।
এদিকে, সকাল ১০টায় বগুড়া-নগড়বাড়ী মহাসড়কে উল্লাপাড়া পৌর এলাকার বিজ্ঞান কলেজের পাশে একটি সিএনজিচালিত অটোরিকশা পুড়িয়ে দিয়েছে পিকেটাররা।
অপরদিকে, হরতাল প্রতিহত করতে ছাত্রলীগ ও যুবলীগের নেতাকর্মীরা শহরের বিভিন্ন স্থানে অবস্থান নিয়েছেন।
লালমনিরহাট: জেলা বিএনপির ডাকা সকাল-সন্ধ্যা নিরুত্তাপ হরতালে মাঠে দেখা যায়নি বিএনপি নেতাকর্মীদের।
জেলা শহরসহ অন্য উপজেলায় হরতালের সমর্থনে কোনো মিছিল বা পিকেটিংয়ের না হলেও কঠোর হরতাল পালিত হচ্ছে বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক ও লালমনিরহাট বিএনপির সভাপতি অধ্যক্ষ আসাদুল হাবিব দুলুর নিজ এলাকা সদর উপজেলার বড়বাড়ি ও মহেন্দ্রনগর ইউনিয়নে।
এ এলাকায় আইনশৃঙ্খলা বাহিনী অবস্থান না নিলেও মাঝে-মধ্যে টহল দিতে দেখা গেছে। হরতালে দুরপাল্লার বাস চলাচল বন্ধ থাকলেও ছোট ছোট যানবাহন ও ট্রেন চলাচল স্বাভাবিক রয়েছে। বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে দোকানপাটও খুলতে দেখা গেছে।
ফেনী: ফেনীর দাগনভুঞা উপজেলায় যুবদলের ডাকা সকাল-সন্ধ্যা হরতালে ভোর থেকেই উপজেলা শহরের বিভিন্ন সড়কে সিএনজিচালিত অটোরিকিশা, টেম্পুসহ হালকা যান চলাচল করছে।
তবে বন্ধ রয়েছে শহর থেকে দুরপাল্লার বাস চলাচল। বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে উপজেলা শহরের বাজারগুলোতে ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ও দোকানপাট খুলতে শুরু করেছে।
পিরোজপুর: জেলা বিএনপির ডাকা অর্ধদিবস হরতালে ভোরে ঢাকা-মঠবাড়িয়া সড়কের দেবীপুর এলাকায় ঢাকা থেকে মঠবাড়িয়াগামী বনফুল ও হামীম পরিবহনের দুই বাসের গ্লাস ভাঙচুর করেছে পিকেটাররা।
সকাল থেকে জেলার অভ্যন্তরে ও আন্তঃজেলা বাস চলাচল প্রায় স্বাভাবিক রয়েছে। তবে পুলিশি প্রহরায় জেলা সদর থেকে ছাড়ছে ঢাকাগামী বাস।
হরতালের সমর্থনে সকালে শহরে ঝটিকা মিছিল করেছে জেলা বিএনপির নেতাকর্মীরা।
পটুয়াখালী: ভোর থেকে জেলার অভ্যন্তরীণ রুটে দু’একটি বাস চলাচল শুরু হলেও দুরপাল্লার বাস চলাচল বন্ধ রয়েছে।
শহরের দোকানপাট অল্পসংখ্যক খোলা থাকলেও স্কুল-কলেজ, অফিস-আদালত যথারীতি খোলা ও স্বাভাবিক রয়েছে।
শহরে পুলিশের টহল চলছে। বেলা ১১টা পর্যন্ত হরতালের পক্ষে বা বিপক্ষে কোনো মিছিল-পিকেটেংয়ের খবর পাওয়া যায়নি।
বগুড়া: দুপুর সোয়া একটা পর্যন্ত জেলা বিএনপির শীর্ষ নেতাদের শহরে দেখা না গেলেও যুবদল ও ছাত্রদলসহ বিভিন্ন ওয়ার্ড ও ইউনিয়ন পর্যায়ের ২০ দলীয় নেতারা সড়কে পিকেটিং কার্যক্রম চালিয়েছেন।
সকালের দিকে জেলা সদরের সাবগ্রাম বাইপাস, উপশহর, চারমাথা ও মেডিকেল কলেজ রোড এবং শহরের শেরপুর রোড কলোনি, ঠনঠনিয়া, খান্দারসহ কয়েকটি স্থানে বিচ্ছিন্নভাবে পিকেটিং করেছেন হরতালকারীরা। এ সময় কয়েকটি স্থানে সড়কে বালু ও ইটের গুঁড়ার বস্তা ফেলে সড়ক অবরোধ করাসহ বেশ কয়েকটি স্থানে টায়ার জ্বালিয়ে কমপক্ষে ৬/৭টি ককটেলের বিস্ফোরণ ঘটান তারা। তবে পুলিশি তৎপরতার কারণে তেমন কোনো বড় ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেনি।
হরতাল চলাকালে শহরের অধিকাংশ দোকান-পাট বন্ধ ছিল। তবে ব্যাংক ও অন্যান্য আর্থিক প্রতিষ্ঠান খোলা রয়েছে। দুরপাল্লার গাড়ি শহর ছেড়ে যায়নি, চলাচল করেনি যাত্রীবাহী থ্রি হুইলার বা অন্যান্য ব্যক্তিগত যানবাহনগুলোও।
শেরপুর (বগুড়া): হরতাল পালিত হলেও শেরপুর উপজেলায় মাঠে নেই বিএনপির নেতাকর্মীরা।
যেকোনো ধরনের নাশকতা ঠেকাতে পুলিশকে বিভিন্ন পয়েন্টে কঠোরভাবে অবস্থান করতে দেখা গেছে। পুলিশি পাহারায় পণ্যবাহী ট্রাকসহ কিছু বাসও চলাচল করছে। তবে দুরপাল্লার যানবাহন চলাচল বন্ধ রয়েছে।
বাংলাদেশ সময়: ১২৫৫ ঘণ্টা, জানুয়ারি ১১, ২০১৫/আপডেট: ১৩৩৭ ঘণ্টা