ঢাকা: অবরোধে সব কিছু স্বাভাবিকভাবে চলছে জানিয়ে বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ বলেছেন, অস্বাভাবিক গুপ্তহত্যা বন্ধে আইন প্রয়োগকারী সংস্থা বিশ্ব ইজতেমার পর কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করবে।
রোববার সচিবালয়ে ডব্লিউটিও’র সভা শেষে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এ সব কথা বলেন।
তোফায়েল আহমেদ বলেন, ভারতের বিজিপি নেতা অমিত শাহ ফোন না করলেও অসত্য ও মিথ্যা তথ্য পরিবেশন করছে।
তিনি প্রশ্ন রেখে বলেন, তারা (বিএনপি) এদেশে কী আন্দোলন করবে? মানুষকে কী মনে করে এরা? এদেশের মানুষ রাজনৈতিকভাবে সচেতন। এখানে অসত্য তথ্য দিয়ে লাভ হবে না।
তিনি আরো বলেন, বিএনপি চেয়ারপার্সন বাসায় যেতে পারেন। কিন্তু তিনি ওখানেই থাকবেন। অরাজকতা, বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করাই তাদের লক্ষ্য। এতে কোনো লাভ হবে না। বিশ্ব ইজতেমা শেষ হওয়ার পর গুপ্তহত্যা ও সন্ত্রাসী কার্যাকলাপ বন্ধে আইন প্রয়োগকারী সংস্থা কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করবে।
অবরোধের মধ্যে কলকারখানা, লঞ্চ, ট্রেন সবকিছু স্বাভাবিকভাবে চলছে জানিয়ে তোফায়েল বলেন, অস্বাভাবিক হলো হঠাৎ করে গুপ্ত আঘাত করা, চলন্ত বাসে আগুন দেওয়া। এ সব কাজে বিএনপি বা জোটের কোনো নেতাকে দেখা যায় না। তারা অন্যকে দিয়ে এগুলো করাচ্ছেন। তারা আরাম আয়েশে আছেন। এটা বন্ধ করতে সরকার বদ্ধপরিকর।
তিনি বলেন, ধৈর্য ধরেন, এটা বন্ধ হবে। আইন-শৃঙ্খলা প্রয়োগকারী সংস্থা বাস্তব পদক্ষেপ গ্রহণ করবে।
কীভাবে গুপ্তহত্যা ঠেকানো যাবে, সাংবাদিকদের এ প্রশ্নে মন্ত্রী বলেন, অপেক্ষা করেন। আমরা যখন কলকাতায় ছিলাম নকশালের বোমার আওয়াজে নয় মাস ঘুমাতে পারিনি। এখন বাটি চালান দিয়েও নকশাল আর খুঁজে পাবেন না। এই অবস্থা হবে বাংলাদেশে।
রাজনৈতিক সমঝোতার প্রশ্নে তোফায়েল আহমেদ বলেন, যারা পেট্রোল বোমা মেরে গাড়ি পুড়িয়ে দেয়, তাদের সঙ্গে কী রাজনৈতিক সমঝোতা করবেন! আমরা কী সেই রাজনৈতিক দল, সেই সরকার! তারা কী মনে করে!
নির্বাচন সম্পর্কে তিনি বলেন, আগামী নির্বাচনের জন্য অপেক্ষা করতে হবে।
হরতাল-অবরোধ বন্ধে এফবিসিসিআই আইনের আশ্রয় নিতেই পারে বলেও জানান বাণিজ্যমন্ত্রী।
আওয়ামী লীগের সমাবেশ প্রসঙ্গে তোফায়েল আহমেদ বলেন, আমরা অনুমতি নিয়ে শান্তিপূর্ণ সভা করবো। অন্যরা একবার সভা করতে পারলে দেখবেন, আগুন কীভাবে জ্বালায়! জনসভার নামে তারা কী অরাজকতা সৃষ্টি করে!
খালেদা জিয়ার স্বাধীন চলাচল প্রসঙ্গে তোফায়েল আহমেদ প্রশ্ন রাখেন, তিনি কী স্বাধীনভাবে চলাচল করতে চান? উনি ওখানেই থাকবেন। উনি পুরানা পল্টনে খাট-পালঙ্ক এনেছিলেন। একজন জাতীয় নেত্রী সিনক্রিয়েট করবেন। অরাজক বিশৃঙ্খল পরিস্থিতি সৃষ্টি করবেন। সেজন্য আইন প্রয়োগকারী সংস্থা যথাযথ পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে।
হজের পর মুসলমানদের সব চেয়ে বড় জমায়েত বিশ্ব ইজতেমার সময় তারা ছাড় দেয়নি উল্লেখ করে বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, তাতেও ট্রাফিক জ্যাম পড়েছে। কিন্তু রাতের বেলায় হঠাৎ পেট্রোল বোমা মেরে ড্রাইভার, শিক্ষিকা মেরেছে। আমরাও আন্দোলন করেছি। এই সচিবালয় কোনো লোককে ধরে রাখতে পারেনি। তারা পল্টনে আমাদের সমাবেশে হাজির হয়েছিলেন। কিন্তু তারা জনসম্পৃক্ততা ধরে রাখতে পারেননি।
অবরোধে গত রাত নয়টা থেকে ২৪ ঘণ্টায় পুলিশ-বিজিবির নিরাপত্তায় ৯,৯২৪টি গাড়ি চলেছে বলে জানান মন্ত্রী।
ডব্লিউটিও’র সভা প্রসঙ্গে বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, যুক্তরাষ্ট্রে তৈরি পোশাক ডিউটি-ফ্রি ও কোটা ফ্রি করার জন্য আলোচনা হয়েছে।
বাংলাদেশ সময়: ১৪২১ ঘণ্টা, জানুয়ারি ১১, ২০১৪