ঢাকা: বর্তমান রাজনৈতিক সংকট নিরসনে জাতীয় সংলাপ ও সংখ্যানুপাতিক পদ্ধতি চালু করে সব দলের অংশগ্রহণে নির্বাচনের দাবি জানিয়েছে বাংলাদেশ কমিউনিস্ট পার্টি (সিপিবি) ও বাংলাদেশ সমাজতান্ত্রিক দল (বাসদ)।
এ দাবিতে আগামী শুক্রবার (২৭ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে ‘দেশ বাঁচাও মানুষ বাঁচাও’ শ্লোগানে জাতীয় সমাবেশ আহবান করেছে এ বামপন্থি দল দু’টি।
বুধবার (২৫ ফেব্রুয়ারি) সকালে পুরানা পল্টনের মুক্তি ভবনের প্রগতি সম্মেলন কক্ষে সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা জানানো হয়।
সংবাদ সম্মেলনে জামায়াত-শিবিরকে নিষিদ্ধ করে জাতীয় সংলাপের আহবান জানান দল দু’টির নেতারা।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন সিপিবির সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ আবু জাফর আহমেদ।
জামায়াত-শিবিরকে নিষিদ্ধ করে জাতীয় সংলাপের আহবান জানিয়ে তিনি বলেন, চলমান রাজনৈতিক সংকট নিরসনে সবদলের অংশগ্রহণে জাতীয় সংলাপ করা যেতে পারে। তবে তার আগে অবশ্যই জামায়াত-শিবিরকে নিষিদ্ধ ঘোষণা করতে হবে।
খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে আদালতের গ্রেফতারি পরোয়ানা জারির বিষয়ে জানতে চাইলে এ নেতা বলেন, আমরা সব সময় চাই, আইন তার নিজ গতিতে চলুক। যিনি অন্যায় করবেন তিনি শাস্তি পাবেন। কিন্তু আমাদের চাওয়া হলো, আসামির বিচার অবশ্যই রাজনৈতিক হস্তক্ষেপমুক্ত হতে হবে।
সাংবাদিকের এক প্রশ্নের জবাবে আবু জাফর আহমেদ বলেন, মাহমুদুর রহমান মান্নার (নাগরিক ঐক্যের প্রতিষ্ঠাতা) ফোনালাপ তার ব্যক্তিগত অভিমত। এখানে তার সঙ্গে আমরা একমত নই। ষড়যন্ত্র করে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করা যায় না।
মাহমুদুর রহমান মান্নাকে আটক না দেখালে সিপিবির ভূমিকা কি হতো জানতে চাইলে তিনি বলেন, অন্যায় করলে যেকোনো মানুষকে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে আটক করার আইন আছে। কিন্তু যদি আটক না করা হতো তাহলে একজন নাগরিক হিসেবে বামদলের পক্ষ থেকে পরবর্তী পদক্ষেপ গ্রহণ করা হতো।
মান্না আটক হওয়ার পর সিপিবি ও বাসদ চাপে আছে কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, মান্না ভাইয়ের সঙ্গে আমরা অনেক প্রোগ্রামে অংশগ্রহণ করেছি। সংকট নিরসনে আমাদের অনেক সিদ্ধান্ত এক ছিলো। কিন্তু নীতির দিক থেকে আমরা আমাদের জায়গায় অবস্থান করছি। তিনি আটক হলেও আমাদের ওপর চাপ আসার কোনো কারণ নেই।
জামায়াত-শিবিরকে নিষিদ্ধ করার দাবি প্রসঙ্গে তিনি বলেন, জামায়াত জঙ্গিবাদে বিশ্বাসী। যেহেতু বিরোধী দলীয় জোটের সঙ্গে জামায়াত জড়িত সেহেতু একে (জামায়াতকে) নিষিদ্ধ করা হলে তার সঙ্গে আলোচনা করার প্রশ্নই আসবে না। তখন সরকার দল বিরোধী দল ও সব দলের অংশগ্রহণে সংলাপ ও আলোচনার মাধ্যমে যেকোনো সমস্যার সমাধান করা সম্ভব হবে।
তিনি বলেন, যেহেতু এটা রাজনৈতিক সংকট, সেহেতু এ সংকট নিরসনে সবার আগে সরকারের আগ্রহী ভূমিকা পালন করতে হবে। পুলিশ-বিজিবি দিয়ে এ সংকট নিরসন করা সম্ভব নয়।
সমাবেশে দুই জোটের বাইরে বাম-গণতান্ত্রিক বিকল্প গড়ে তোলার আহবান ও জনগণের বিভিন্ন দাবি নিয়ে পরবর্তী আন্দোলন কর্মসূচির ঘোষণা দেওয়া হবে বলেও সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়।
সংবাদ সম্মেলনে অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন সিপিবির প্রেসিডিয়াম সদস্য সাজ্জাদ জহির চন্দন, বাসদের কেন্দ্রীয় সদস্য বজলুর রহমান ফিরোজ ও জাহিদুল হক মিলন।
বাংলাদেশ সময়: ১২৪৭ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ২৫, ২০১৫