ঢাকা: দুই দুর্নীতি মামলার শুনানিতে বৃহস্পতিবারও (১০ ডিসেম্বর) আদালতে যাচ্ছেন না মামলা দু’টির প্রধান আসামি বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া। দেশে থাকলেও এ নিয়ে পর পর তিনটি ধার্য তারিখে হাজিরা দিচ্ছেন না তিনি।
জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট ও জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্টের অর্থ আত্মসাতের অভিযোগে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) দায়ের করা মামলা দু’টির বিচারিক কার্যক্রম চলছে রাজধানীর বকশিবাজারে কারা অধিদফতরের প্যারেড মাঠে স্থাপিত তৃতীয় বিশেষ জজ আবু আহমেদ জমাদারের অস্থায়ী আদালতে।
দীর্ঘ প্রায় আড়াই মাস লন্ডন সফর শেষে দেশে ফিরে গত ২৬ নভেম্বর ও ০৩ ডিসেম্বরও এ আদালতে হাজিরা দেননি খালেদা। তবে উচ্চ আদালতের নির্দেশ অনুসারে গত ০১ ডিসেম্বর নাইকো দুর্নীতি মামলায় নবম বিশেষ জজ আমিনুল ইসলামের আদালতে আত্মসমর্পণ করে জামিন নেন তিনি।
খালেদার আইনজীবী অ্যাডভোকেট সানাউল্লাহ মিয়া বুধবার (০৯ ডিসেম্বর) গণমাধ্যমকে জানান, দীর্ঘদিন বিদেশ সফর শেষে বিশ্রামে রয়েছেন খালেদা জিয়া। তিনি পুরোপুরি সুস্থও হননি। এ কারণে বৃহস্পতিবার আদালতে যাচ্ছেন না। আগামী ধার্য তারিখে হাজিরা দেবেন।
বৃহস্পতিবার জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলার একজন সাক্ষীকে আসামিপক্ষের জেরা এবং পরবর্তী সাক্ষ্যগ্রহণের দিন ধার্য রয়েছে। ওইদিন মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তাসহ বাকি সকল সাক্ষীকে সাক্ষ্য দিতে সমন জারি করা হয়েছে। উচ্চ আদালতে লিভ টু আপিল থাকায় আসামিপক্ষের আবেদনে জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলার জেরা ও সাক্ষ্যগ্রহণ মুলতবি রেখেছেন আদালত।
ব্যক্তিগত সফরে গত ১৫ সেপ্টেম্বর লন্ডন যান বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া। টানা ২ মাস ১০ দিন লন্ডনে অবস্থানকালে দুই চোখ ও পায়ের চিকিৎসা করান তিনি। গত ২১ নভেম্বর রাতে দেশে ফেরেন তিনি। এ সময়কালে আসামিপক্ষের আবেদনের প্রেক্ষিতে খালেদার অনুপস্থিতিতেই জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলার সাক্ষ্যগ্রহণ ও জেরা হয়েছে আদালতে।
জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় এ পর্যন্ত সাক্ষ্য দিয়েছেন ২৬ জন সাক্ষী, যাদের মধ্যে একজনকে আসামিপক্ষের জেরা বাকি রয়েছে। অন্যদিকে জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট মামলায় এ পর্যন্ত সাক্ষ্য দিয়েছেন বাদী ও প্রথম সাক্ষী দুদকের উপ-পরিচালক হারুন-অর-রশিদ। তাকে আসামিপক্ষের জেরা বাকি রয়েছে।
২০১০ সালের ৮ আগস্ট তেজগাঁও থানায় জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট মামলা দায়ের করা হয়। জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্টের নামে অবৈধভাবে ৩ কোটি ১৫ লাখ ৪৩ হাজার টাকা লেনদেনের অভিযোগ এনে এ মামলা দায়ের করা হয়।
অন্যদিকে ২০০৮ সালের ৩ জুলাই রমনা থানায় জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলা দায়ের করে দুদক। এতিমদের সহায়তা করার উদ্দেশ্যে একটি বিদেশি ব্যাংক থেকে আসা ২ কোটি ১০ লাখ ৭১ হাজার ৬৭১ টাকা আত্মসাৎ করার অভিযোগ এনে এ মামলা দায়ের করা হয়।
খালেদা জিয়া ছাড়াও তার বড় ছেলে ও বিএনপির সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমানসহ অপর আট আসামি রয়েছেন এ দুই মামলায়।
বাংলাদেশ সময়: ১১৩৮ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ০৯, ২০১৫
এমআই/এসএইচ/এএসআর