ঢাকা, সোমবার, ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ২৩ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

রাজনীতি

বঙ্গবন্ধুর ‘অবুঝ সৈনিক’ নন তারানা হালিম

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৩৩৮ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ১৯, ২০১৫
বঙ্গবন্ধুর ‘অবুঝ সৈনিক’ নন তারানা হালিম ছবি: বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম

ঢাকা: বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের আদর্শে অনুপ্রাণিত হয়ে তার সৈনিক হয়েছেন বলে জানিয়েছেন ডাক ও টেলিযোগাযোগ প্রতিমন্ত্রী তারানা হালিম।
 
‘বিজয়, বঙ্গবন্ধু ও বঙ্গমাতা’ শীর্ষক আলোচনা সভায় তারানা হালিম বলেছেন, তিনি বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে পড়ে, শুনে, বুঝে তার সৈনিক হয়েছেন।


 
জাতীয় প্রেসক্লাব মিলনায়তনে ওই আলোচনা সভায় প্রতিমন্ত্রী তারানা হালিম বলেন, প্রথম নির্বাচনের মনোনয়নপত্র পূরণের সময় একটি প্রশ্নে একাত্তরে কী ভূমিকা ছিল তা লিখতে বলা হয়।
 
তারানা হালিম বলেন, ‘আমি চিন্তা করলাম, তখন মায়ের কোলে ছিলাম। একাত্তরে কোনো ভূমিকা ছিল না। কিন্তু যখন বিশ্ববিদ্যালয়ে, তখন সুষ্পস্টভাবে জানতে পারলাম, বাংলাদেশের ইতিহাস, মুক্তিযুদ্ধের নায়ক কে? আমার বাবা আমাকে বই এনে দিয়েছিলেন। বলেছিলেন, তুমি পড়ো, পড়ে শুনে সিদ্ধান্ত নাও। অন্ধভাবে দলকে সমর্থন করো না’।
 
‘আমি পড়েছিলাম। বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রথম বর্ষে থাকাকালে যুবলীগের মহিলা সম্পাদিকা হিসেবে যোগদান করি। তারপর থেকেই আওযামী লীগের যতো আন্দোলন-সংগ্রাম, এরশাদবিরোধী আন্দোলন, জনতার মঞ্চ, একাত্তরের ঘাতক-দালাল নির্মূল কমিটির আন্দোলন, যুদ্ধাপরাধীদের বিচার চেয়ে আন্দোলন, যতো কর্মপরিকল্পনা, মানববন্ধন সবগুলোতে গেছি’।
 
‘আমি বলেছিলাম, আমি বঙ্গবন্ধুর আদর্শের সৈনিক, পড়ে-শুনে-বুঝে সৈনিক, অবুঝ কোনো সৈনিক নই’।
 
বর্তমান প্রজন্মকে এটিই বোঝাতে হবে জানিয়ে তারানা হালিম বলেন, ‘তোমরা পড়ো, জানো বোঝো- বঙ্গবন্ধু-মুক্তিযুদ্ধের আদর্শ’।
 
আওয়ামী লীগ সরকার যখন যুদ্ধাপরাধীদের বিচার করছে তখন ‘সাধারণ ক্ষমা’র অজুহাত তুলে ভুল বোঝানো হচ্ছে উল্লেখ করে তারানা হালিম বলেন, বঙ্গবন্ধুর সাধারণ ক্ষমার মধ্যে একটি ব্র্যাকেট আছে। সেখানে বলা আছে, যারা অগ্নিসংযোগ করেছে, হত্যা-লুটতরাজ, ধর্ষণ করেছে তাদের ক্ষমা করেননি তিনি।
 
সকল বাধা অতিক্রম করে যুদ্ধাপরাধীদের বিচার হচ্ছে মন্তব্য করে প্রতিমন্ত্রী বলেন, জাতিসংঘের মহাসচিব থেকে শুরু করে বিভিন্ন স্থান থেকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে ফোন এসেছিলো। তিনি বলেছেন, যুদ্ধাপরাধীর বিচার হবেই।
 
পাকিস্তানি বাহিনীকে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার ‘দখলদার বাহিনী’ বলার সমালোচনা করে তারানা হালিম বলেন, ‘কেন বলেন না, হানাদার পাকিস্তানি বাহিনী? আলবদর, আলশামস বলতে লজ্জা কোথায়? সত্যকে সত্য বলে নিতে হবে। সাকা চৌধুরীকে ছাড়া তিনি সংসদে আসতে পারেন না!’
 
খালেদা জিয়ার বিপদের সময় বিএনপির নেতাকর্মীদের তার পাশে না থাকার সমালোচনা করেন প্রতিমন্ত্রী। তিনি বলেন, ক্ষমতায় আসবে না জেনে তার পাশে থাকেন না তার দলের নেতাকর্মীরাই। আর আমরা দলের বিপদের সময়ও ছিলাম, এখনও আছি, ভবিষ্যতেও থাকবো।
 
পাকিস্তানের ১৯৫ জন যুদ্ধাপরাধীর বিচার না করার সমালোচনা করে তারানা হালিম বলেন, শিমলা চুক্তিতে বিচার করার কথা বলা ছিল। বিচার না করে কূটনৈতিক শিষ্ঠাচার লঙ্ঘন করেছে পাকিস্তান। তারা পাকিস্তানে হিরো, আদর্শ বাবা। কিন্তু বাংলাদেশের জন্য তারা কলঙ্কিত ইতিহাস।
 
আজকে ঐক্যের কথা বলা হলেও সেই ঐক্য মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের ঐক্য হতে হবে বলেও মন্তব্য করেন তারানা হালিম।
 
বঙ্গমাতা পরিষদ, সোনালী ব্যাংক শাখার আয়োজনে আলোচনা সভায় বঙ্গমাতা পরিষদের কার্যনির্বাহী সভাপতি মোজাফফর হোসেন পল্টু, সোনালী ব্যাংকের ডেপুটি জেনারেল ম্যানেজার আতাউর রহমান ও দিদার মো. আব্দুর রব, সোনালী ব্যাংক এমপ্লয়িজ ইউনিয়নের সভাপতি মো. কামাল উদ্দিন ও সাধারণ সম্পাদক হাসান খসরু বক্তব্য রাখেন।
 
বঙ্গমাতা পরিষদ সোনালী ব্যাংক শাখার সভাপতি আব্দুল খালেকের সভাতিত্বে প্রতিষ্ঠাতা সাধারণ সম্পাদক এম আনিছুর রহমানসহ আওয়ামী লীগ ও সহযোগী গঠনের নেতারা সভায় উপস্থিত ছিলেন।
 
বাংলাদেশ সময়: ১৩৩৯ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ১৯, ২০১৫
এমআইএইচ/ইএস/এএসআর

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।