ঢাকা, শুক্রবার, ১৩ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৯ নভেম্বর ২০২৪, ২৭ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

রাজনীতি

‘বিচারপতিদের নিয়ন্ত্রণ করতেই অভিশংসন আইন’

সিনিয়র স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৩৫২ ঘণ্টা, মে ৫, ২০১৬
‘বিচারপতিদের নিয়ন্ত্রণ করতেই অভিশংসন আইন’

ঢাকা: বিচারপতিদের নিয়ন্ত্রণ ও তাদের ওপর নগ্ন আগ্রাসন করতেই অভিশংসন আইন করা হচ্ছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী আহমেদ।

বৃহস্পতিবার (০৫ এপ্রিল) বেলা সোয়া ১১টায় নয়াপল্টন বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ মন্তব্য করেন।

রিজভী বলেন, বিচারপতিদের অপসারণের ক্ষমতা জাতীয় সংসদের হাতে নিতে সম্প্রতি নতুন আইন পাশ করেছে মন্ত্রিসভা। এর ফলে বিচারপতিদের অভিশংসন ও অপসারণের ক্ষমতা সুপ্রিম জুডিসিয়াল কাউন্সিলের পরিবর্তে এখন জাতীয় সংসদের ওপর ন্যস্ত হবে। এটি স্বাধীন বিচারকার্য পরিচালনায় বাধার সৃষ্টি করবে এবং মানুষ ন্যায় বিচার থেকে বঞ্চিত হবে।

তিনি বলেন, এ আইন পাশের মাধ্যমে সরকার পুরোপুরি বিচারপতিদের আচরণ নিয়ন্ত্রণ করবে। এই পুরো প্রক্রিয়াটিই ভীতিকর এবং চাপ সৃষ্টির জন্যই করা হচ্ছে। বিচারপতিরা যেন সরকারের ইচ্ছেমতো কাজ করে সেজন্যই এই আইন করা হচ্ছে। এই আইন পাশের মাধ্যমে সরকার বিচার ব্যবস্থাকে বিরোধী দলসহ গণমাধ্যম এবং গণতন্ত্রে স্বীকৃত সকল অধিকারকে আরো নিষ্ঠুরভাবে দমন করতে সক্ষম হবে।

তিনি আরও বলেন, ভোটারবিহীন সরকার প্রধানের নিবিড় ধ্যানকে কেউ যেন নাড়া দিতে না পারে সেইজন্যই এই আইন প্রণয়নের উদ্যোগ চলছে। সম্প্রতি ভোটারবিহীন সরকারের তিনজন মন্ত্রী উচ্চ আদালতে দণ্ডিত হওয়ায় সরকারের মধ্যে এক ধরনের ভীতিকর পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে। আর সে কারণেই তড়িঘড়ি করে বিচারপতিদেরকে নিয়ন্ত্রণ করতেই এই নতুন আইন পাশ হতে যাচ্ছে বলে জনগণ বিশ্বাস করে। বিচার বিভাগকে নিয়ন্ত্রণের এই আইন পাশ করা হলে সংবিধানের সর্বশেষ স্তম্ভটুকুও বিলীন হয়ে যাবে।

বিএনপির এই নেতা বলেন, বর্তমান দঃশাসনের কবলে পড়ে এমনিতেই গণমাধ্যম নিয়ন্ত্রিত। ভোটারবিহীন সরকারের তরফ থেকে গণমাধ্যমের ওপর প্রতিনিয়তই নিয়ন্ত্রিত আগ্রাসন চলছে। গণমাধ্যমকে আরো বেশি মাত্রায় নিয়ন্ত্রণ করতে মিডিয়া মনিটরিং সেল গঠনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে বলে ৪ মে (বুধবার) জাতীয় সংসদে জানিয়েছেন তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু। এ যেন মরার ওপর খাড়ার ঘা। প্রেস কাউন্সিলের মাধ্যমেও গণমাধ্যমের গলা টিপে ধরার ব্যবস্থা করা হচ্ছে। এমনকি দেশীয় গণমাধ্যমের বিকাশের নামে বিদেশি গণমাধ্যমকেও নিয়ন্ত্রণের সার্বিক উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে।

সরকারের অনাচার ও দুর্নীতির গন্ধ বিশ্বব্যাপী ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়ায় তারা এখন দিশেহারা হয়ে পড়েছে বলে অভিযোগ করে রিজভী বলেন, সরকারের  দুর্গন্ধ চেপে রাখতে বর্তমান ভোটারবিহীন সরকার মিডিয়াসহ সবকিছু নিয়ন্ত্রণে বেপরোয়া আগ্রাসন চালাতে মরিয়া হয়ে উঠেছে। সমালোচনার অগ্নিবাণ থেকে নিজেদেরকে অবধ্য ও অনিন্দ রাখার জন্যই সরকারের এটি মরিয়া প্রয়াস। অপকর্ম যতোই ঢেকে রাখার অপকৌশল করেন না কেন, জনগণের নিকট আপনাদের মুখোশ উন্মোচিত হয়ে গেছে।

সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন- বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল,  খায়রুল কবির খোকন, হারুন উর রশিদ,সহ দফতর সম্পাদক তাইফুল ইসলাম টিপু, সহ সাংগঠনিক সম্পাদক মোস্তাক মিয়া, নির্বাহী কমিটির সদস্য জামাল শরীফ হিরু প্রমুখ।

বাংলাদেশ সময়: ১৩৪৭ ঘণ্টা, মে ০৫, ২০১৬
এমএম/জিসিপি/বিএস

 

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।