ঢাকা: নিয়মিত দলীয় কার্যালয়ে বসতে পারছেন না বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। ‘ভারপ্রাপ্ত’ থেকে গত ৩০ মার্চ ‘পূর্ণাঙ্গ’ মহাসচিব হওয়ার পর এ পর্যন্ত মাত্র ৯ দিন কার্যালয়ে বসেছেন তিনি।
দলীয় সূত্রে জানা যায়, মির্জা ফখরুল ৮৪টি মামলায় লড়ছেন। এসব মামলায় হাজিরা, বারবার কারাগারে যাওয়া ও শারীরিক অসুস্থতার কারণে তার কার্যালয়ে বসা হয়ে উঠছে না। তাছাড়া, দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয় থেকে তার নিজের বাসাও অনেক দূরে হওয়ায় চাইলেও অনেক সময় নয়াপল্টনে পৌঁছাতে পারেন না। যে কারণে তিনি মহাসচিব হওয়ার পরও সাংগঠনিক কর্মকাণ্ডে ব্যাঘাত ঘটছে।
মহাসচিব হিসেবে নিয়োগ পাওয়ার আগে ২০১১ সালের মার্চ থেকে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিবের দায়িত্ব পালন করেন ফখরুল। ওই বছরের ১৬ মার্চ দলের সেসময়কার মহাসচিব খোন্দকার দেলোয়ার হোসেন মৃত্যুবরণ করলে ২০ মার্চ সৌদি আরব সফরে যাওয়ার প্রাক্কালে ফখরুলকে ভারপ্রাপ্ত মহাসচিবের দায়িত্ব পালনের নির্দেশ দেন বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া।
সে দায়িত্বে ‘নিষ্ঠার’ পরিচয় দিয়ে মহাসচিব হওয়ার পর ফখরুলের নিয়মিত অফিস করতে না পারা প্রসঙ্গে বিএনপি চেয়ারপারসনের মিডিয়া উইংয়ের কর্মকর্তা শায়রুল কবির খান বাংলানিউজকে বলেন, ৮৪টি মামলায় নিয়মিত হাজিরা দিতেই তার পুরো মাস চলে যায়। গ্রেফতার করে বারবার রিমান্ডে নেওয়ার কারণে সুস্থ মানুষটিকে শারীরিক সমস্যায়ও পড়তে হচ্ছে মাঝেমধ্যে। দীর্ঘসময় জেলখানায় থেকে অনিয়মের কারণে ডাক্তারের শরণাপন্ন হতে হচ্ছে এই প্রবীণ নেতাকে। আর এসব কারণে দলীয় কার্যালয়ে আসতে এবং সাংগঠনিক কার্যক্রমে সময় দিতে তাকে হিমশিম খেতে হচ্ছে।
যুবদলের কেন্দ্রীয় নেতা গিয়াস উদ্দিন মামুন বলেন, অসংখ্য মামলায় তাকে মাসের অধিকাংশ সময় কোর্ট-কাচারিতেই থাকতে হয়। ইচ্ছে থাকা সত্ত্বেও তিনি নিয়মিত অফিসে আসতে পারছেন না। এতে দলের কার্যক্রম কিছুটা হলেও বিঘ্নিত হয়।
মামুনের দাবি, বিএনপির সাংগঠনিক কার্যক্রম ক্ষতিগ্রস্ত করতেই সরকার ফখরুলের বিরুদ্ধে এতো মামলা করেছে।
ছাত্রদলের দফতর সম্পাদক আবদুস সাত্তার পাটোয়ারী বলেন, রাজনীতিতে একজন পরিচ্ছন্ন নেতা মির্জা ফখরুল। দুঃসময়ে বিএনপির হাল ছাড়েননি এই নেতা। এ কারণেই সরকার তার বিরুদ্ধে প্রায় শতাধিক মামলা করেছে। এই মামলার হাজিরা দিতে দিতেই তাকে দিনের অধিকাংশ সময় আদালত চত্বরে থাকতে হয়। ঠিক সময় তিনি খেতেও পারেন না। এ কারণে চাইলেও অনেক সময় অফিসে আসতে পারেন না।
তবে তিনি দলের জন্য দিনরাত পরিশ্রম করে যাচ্ছেন বলে উল্লেখ করেন আবদুস সাত্তার পাটোয়ারী।
পল্টন থানা ছাত্রদল নেতা রহিম বলেন, মির্জা ফখরুল একজন সুশিক্ষিত ও পরিচ্ছন্ন নেতা। তাকে মামলা দিয়ে আর বারবার জেলে নিয়ে শারীরিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত করছে সরকার। দিনের পর দিন আদালতে হাজিরা ফেলে তাকে বিধ্বস্ত করছে। তারপরও এই নেতা বিএনপি ও দলের নেতাকর্মীদের জন্য কাজ করে যাচ্ছেন।
এ ব্যাপারে একাধিকবার ফোনে যোগাযোগ করা হলেও কল রিসিভ করেননি মির্জা ফখরুল।
বাংলাদেশ সময়: ১৭০৫ ঘণ্টা, মে ০৮, ২০১৬
এমএম/এইচএ/