ঢাকা: বিএনপির বিদায়ী স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান বলেছেন, ভাটির বাংলাদেশের সঙ্গে ভাল প্রতিবেশীর মত আচরণ করতে ব্যর্থ হয়েছে উজানের দেশ ভারত। আর এ সরকারও পানির অধিকার আদায়ে ব্যর্থ হয়েছে।
শুক্রবার (১৩ মে) সকালে রাজধানীদে ফটোজার্নালিস্ট অ্যাসোসিয়েশন মিলনায়তনে ‘ভারতের পানি আগ্রাসন: আমাদের করণীয়’ শীর্ষক এ আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।
ফারাক্কা লংমার্চের ৪০তম বার্ষিকী উপলক্ষে বাংলাদেশ ন্যাপ ঢাকা মহানগর শাখা এ সভার আয়োজন করে।
ন্যাপ চেয়ারম্যান জেবেল রহমান গানির সভাপতিত্বে আলোচনায় অংশ নেন জাতীয় গণতান্ত্রিক পার্টির (জাগপা) সভাপতি শফিউল আলম প্রধান, ন্যাশনার ডেমোক্রেটিক পার্টির (এনডিপি) চেয়ারম্যান খোন্দকার গোলাম মোর্ত্তজা, ন্যাপ মহাসচিব এম. গোলাম মোস্তফা ভুইয়া, জাতীয় দল সভাপতি সৈয়দ এহসানুল হুদা, কল্যাণ পার্টির মহাসচিব এম এম আমিনুর রহমান, ডিএল সাধারণ সম্পাদক সাইফুদ্দিন আহমেদ মনি, জাতীয় পার্টির (জাফর) যুগ্ম-মহাসচিব এএসএম শামিম, নাজিপুর উপজেলা চেয়ারম্যান মো. নজরুল ইসলাম, ন্যাপ ভাইস চেয়ারম্যান কাজী ফারুক হোসেন, যুগ্ম-মহাসচিব স্বপন কুমার সাহা, সম্পাদক মো. শহীদুননবী ডাবলু, মো. কামাল ভুইয়া, মহানগর ন্যাপের অন্যতম নেতা মো. শামিম ভুইয়া, জিল্লুর রহমান পলাশ, আবদুল্লাহ আল মাসুম প্রমুখ।
নজরুল ইসলাম খান বলেন, ফারাক্কা সমস্যা সামাধানে ব্যর্থ সরকার টিপাইমুখ বাঁধ নির্মাণের পক্ষে ওকালতি করছে। যে সরকার ভারতের পানি আগ্রাসনের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করতে পারে না, দেশের জনগণের কল্যাণ ও মৌলিক চাহিদা পূরণ করতে পারে না, তাদের ক্ষমতায় থাকার অধিকার নেই।
তিনি বলেন, পাকিস্তান আগে আমাদের গুলি করে মারতো, আর এখন ভারত পানি না দিয়ে মারছে। এটি কোনোভাবেই মেনে নেওয়া যায় না। ভারত আমাদের বন্ধুপ্রতিম দেশ। মুক্তিযুদ্ধের সময় তাদের সহযোগিতার কারণে আমরা কৃতজ্ঞ। কিন্তু পানি নিয়ে তারা যা করছে সেটি বন্ধুরাষ্ট্রের কাজ নয়।
বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে ৫৪টি অভিন্ন নদী রয়েছে উল্লেখ করে নজরুল ইসলাম খান বলেন, ফারাক্কা বাঁধের প্রভাবে আমাদের নদী-নালা, খাল-বিল শুকিয়ে যাচ্ছে। কৃষকেরা পানির অভাবে ফসল ফলাতে পারছে না। অথচ আন্তর্জাতিক আইনে আছে, অভিন্ন নদীতে বাঁধ দিয়ে পানিপ্রবাহে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করা যাবে না। কিন্তু ভারত সেটা মানছে না।
তিনি বলেন, দেশপ্রেমিক সরকার থাকলে ভারতের সঙ্গে আলাপ-আলোচনা করে সমতার ভিত্তিতে পানিসহ সব সমস্যা সমাধানের উদ্যোগ নিতে পারতো। কিন্তু আমাদের দেশে এখন যে সরকার আছে তারা নির্বাচিত নয়। সেজন্য জনগণের কাছেও তাদের কোনো জবাবদিহিতা নেই।
চলমান ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) নির্বাচনে সহিংসতার বিষয়টি তুলে ধরে নজরুল ইসলাম খান বলেন, নির্বাচনের নামে দেশে যা হচ্ছে তা মেনে নেওয়া যায় না। এর মাধ্যমে সরকার নির্বাচনী প্রক্রিয়াকে পচিয়ে দিয়েছে।
সভার সভাপতি জেবেল রহমান গানি বলেন, ফারাক্কা, টিপাইমুখ বাঁধসহ ভারতের অব্যাহত পানি আগ্রাসনের বিরুদ্ধে দেশপ্রেমিক, জাতীয়তাবাদী ও গণতান্ত্রিক শক্তির জাতীয় ঐক্য গড়ে তুলতে হবে। মজলুম জননেতা মওলানা ভাসানীর প্রদর্শিত পথই হচ্ছে ভারতের অব্যাহত আগ্রাসনের বিরুদ্ধে লড়াইয়ের পথ।
তিনি বলেন, ভারতের সঙ্গে বাংলাদেশের সম্পর্ক হতে হবে সমমর্যাদার ভিত্তিতে কার্যকরী সম্পর্ক। আমরা শুধু ভারতকে দিয়ে যাবো, বিনিময়ে কিছুই পাবো না, তা হতে পারে না। আওয়ামী লীগের দাসসুলভ আচরণের কারণেই ভারত পানি আগ্রাসন অব্যাহত রেখেছে।
বাংলাদেশ সময়: ১৫২৪ ঘণ্টা, মে ১৩, ২০১৬
এমএম/এজেড/এইচএ/