ঢাকা, বুধবার, ১২ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ নভেম্বর ২০২৪, ২৫ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

রাজনীতি

সম্মেলনের পরই নির্বাচনের প্রস্তুতি আওয়ামী লীগের

শামীম খান, স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৪০০ ঘণ্টা, জুন ২৫, ২০১৬
সম্মেলনের পরই নির্বাচনের প্রস্তুতি আওয়ামী লীগের

ঢাকা: দলের জাতীয় সম্মেলনের পর সংসদ নির্বাচনের প্রস্তুতি নেবে আওয়ামী লীগ। আর সেভাবেই সম্মেলনের মধ্য দিয়ে দলকে ঢেলে সাজানোর চিন্তা-ভাবনা করা হচ্ছে।

সম্মেলনে নতুন যে কমিটি গঠিত হবে সেই কমিটি আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনের চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় দলকে পরিচালনা করবে। এ কারণে সময় নিয়ে সম্মেলনের প্রস্তুতি নিচ্ছে ক্ষমতাসীন দলটি।

 

আগামী ২২ ও ২৩ অক্টোবর আওয়ামী লীগের ২০তম ত্রিবার্ষিক জাতীয় সম্মেলনের নতুন তারিখ নির্ধারণ করা হয়েছে। এর আগে সম্মেলনের তারিখ তিন দফায় পেছানো হয়। শুধু উপযোগী সময় খুঁজতে বার বার সম্মেলন পিছিয়েছে বলে আওয়ামী লীগের নীতি-নির্ধারণী পর্যায়ের একাধিক নেতা জানান।

 

দলটির নীতি-নির্ধারণী পর্যায়ের কয়েকজন নেতার সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, এ সম্মেলনকে কেন্দ্র করে দলের ব্যাপক রাজনৈতিক পরিকল্পনা রয়েছে। বিশেষ করে সম্মেলনের মধ্য দিয়ে দেশে একটি রাজনৈতিক সাড়া ফেলতে চায় আওয়ামী লীগ। এ জন্য মহাসমারোহে সম্মেলনের প্রস্তুতি নেওয়ার পরিকল্পনা হচ্ছে।
 
সম্মেলনে সারা দেশ থেকে কাউন্সিলর ও ডেলিগেটসের পাশাপাশি বিভিন্ন পর্যায়ের নেতা-কর্মীদের সমাবেশ ঘটিয়ে একটি বড় ধরনের শোডাউনের পরিকল্পনা রয়েছে। এ সম্মেলন থেকে উজ্জীবিত হয়ে দলের নেতা-কর্মীরা নতুন উদ্যমে সারা দেশে সাংগঠনিক ও রাজনৈতিক কার্যক্রমে নিয়োজিত হবে। যেটা আগামী একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের জন্য দলকে আগে থেকেই প্রস্তুত রাখতে সহায়ক হবে। এ পরিকল্পনা বাস্তবায়নের উপযোগী সময়ের জন্যই সম্মেলন বার বার পেছানো হয়েছে।

প্রথমে গত বছর ডিসেম্বরে এ সম্মেলন করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। পরে সময় পিছিয়ে চলতি বছর ২৮ মার্চ সম্মেলন করার সিদ্ধান্ত হয়। দ্বিতীয় দফায় পিছিয়ে তারিখ নির্ধারণ করা হয় ১০ ও ১১ জুলাই। এর পর তৃতীয় ধাপে পিছিয়ে আগামী ২২-২৩ অক্টোবর তারিখ নির্ধারণ করা হয়েছে।

এদিকে দেশের পাশাপাশি দেশের বাইরেও এ সম্মেলনকে কেন্দ্র করে প্রভাবশালী এবং বন্ধুপ্রতিম দেশগুলোর ক্ষমতাসীন ও বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে রাজনৈতিকভাবে সম্পর্ক তৈরি করতে চায় আওয়ামী লীগ। যে সম্পর্কের মধ্য দিয়ে ওই সব দেশের সরকারের সঙ্গেও আওয়ামী লীগের নেতৃত্বাধীন সরকারের সম্পর্ক আরও জোরদার হতে পারে। এ পরিকল্পনা অনুযায়ী ১৪টি গুরুত্বপূর্ণ দেশের ক্ষমতাসীন ও বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলোর নেতাদের আমন্ত্রণও জানানো হয়েছে।

আওয়ামী লীগের ওই নেতাদের সঙ্গে কথা বলে আরও জানা যায়, সুবর্ণ জয়ন্তীকে সামনে রেখে ভিশন-২০২১ ঘোষণা দিয়েছে আওয়ামী লীগ। সে অনুযায়ী সরকার উন্নয়ন কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে। বাংলাদেশকে মধ্য আয়ের দেশে উন্নীত করে ২০২১ সালে স্বাধীনতার সুবর্ণ জয়ন্তী পালন করা হবে। আগামী ২০১৯ সালে শেষ হবে দশম জাতীয় সংসদের মেয়াদ। এর পর জাতীয় নির্বাচনে যে দল ক্ষমতায় আসবে সেই দলের সরকারই স্বাধীনতার সুবর্ণ জয়ন্তী পালন করবে। তাই একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন আওয়ামী লীগের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। যে ভিশন নিয়ে আওয়ামী লীগ অগ্রসর হচ্ছে সেই ভিশন বাস্তবায়নে এ নির্বাচনে বিজয় নিশ্চিত করতে চায় দলটি। এ কারণেই আগে থেকেই নির্বাচনী প্রস্তুতি নিতে দল মাঠে নামবে।

এদিকে দলকে আরও সুসংগঠিত এবং রাজনৈতিক ও সাংগঠনিকভাবে শক্তিশালী করতে উদ্যমী, পরিশ্রমী, রাজনৈতিক দূরদর্শী, মেধাবী ও দক্ষ সংগঠকদের নিয়ে আগামী কেন্দ্রীয় কমিটি গঠন করা হবে। এ কমিটিই আগামী নির্বাচনে বিজয় নিশ্চিত এবং নির্বাচনী চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করতে দলকে প্রস্তুত করবে। সেভাবেই দলের সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা চিন্তা-ভাবনা করেছেন বলে আওয়ামী লীগের ওই নীতি নির্ধারকরা জানান।

তবে এ সব বিষয়ে আওয়ামী লীগ নেতারা এখনই প্রকাশ্যে কোনো মন্তব্য করতে চাচ্ছেন না। বিষয়টি সম্পর্কে জানতে চাওয়া হলে আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক মাহবুব-উল-আলম হানিফ বাংলানিউজকে বলেন, সম্মেলনের পর নির্বাচনের চিন্তা। এখন দলের সম্মেলনের প্রস্তুতি চলছে। সম্মেলনের পর নির্বাচনের প্রস্তুতির কথা চিন্তা করা হবে।

বাংলাদেশ সময়: ০৩৩৪ ঘণ্টা, জুন ২৫, ২০১৬
এসকে/এমজেএফ/

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।