কুমিল্লা: নির্বাচন কমিশনের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী আগামী ২০ ডিসেম্বর কুমিল্লা সিটি কর্পোরেশন নির্বাচন অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা রয়েছে। যদিও সীমানা বর্ধিত করা নিয়ে মামলাজনিত কারণে নির্বাচনের ভোটগ্রহণ পিছিয়ে যেতেও পারে।
কুসিক নির্বাচনে আ’লীগ ও বিএনপি থেকে ৫ জন মেয়র পদে মনোনয়ন পেতে লবিং করছেন। জাতীয় পার্টি ও জামায়াত ইসলামীর কোনো প্রার্থী এখনো সক্রিয় নয়।
আ’লীগ দলীয় মনোনয়ন পেতে সর্বোচ্চ লবিং করছেন মহানগর আ’লীগের দু’গ্রুপের ৪ নেতা। মনোনয়নের প্রত্যাশায় রয়েছেন রেলপথমন্ত্রী মুজিবুল হক মুজিব ও কুমিল্লার প্রবীণ রাজনীতিবিদ অধ্যক্ষ আফজল খান গ্রুপের তিন নেতা এফবিসিসিআইয়ের পরিচালক মাসুদ পারভেজ খান ইমরান, কুসিক প্যানেল মেয়র আঞ্জুম সুলতানা সীমা এবং কুমিল্লা ভিক্টোরিয়া কলেজের সাবেক ভিপি নুর উর রহমান মাহমুদ তানিম।
অপরদিকে, সদর সংসদ সদস্য হাজী আ ক ম বাহাউদ্দিন বাহার গ্রুপ থেকে মনোনয়ন লড়াইয়ে রয়েছেন মহানগর আ’লীগ নেতা আরফানুল হক রিফাত। দলীয় মনোনয়ন পেতে তিনি জোর লবিং করছেন। রিফাত ছাত্রলীগ ও যুবলীগের রাজনীতি করেছেন। তিনি কুমিল্লা জেলা ফুটবল অ্যাসোসিয়েশনেরও সভাপতি। দায়িত্ব পালন করেছেন কুমিল্লা ক্লাবের সাধারণ সম্পাদক হিসেবেও ।
এ বিষয়ে রিফাত বাংলানিউজকে বলেন, দলের জন্য অতীত কার্যক্রম বিবেচনা করে দল আমাকে মনোনয়ন দেবে আশা করছি।
মহানগর আ’লীগের অপর গ্রুপের নেতা এফবিসিসিআইয়ের পরিচালক ও মহানগর আ’লীগ নেতা মাসুদ পারভেজ খান ইমরানও মনোনয়ন দৌড়ে ভালো অবস্থানে রয়েছেন। তিনি অক্টোবর মাসে বেশ কয়েকবার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে দেখা করে আলোচনা করেছেন। এছাড়া বিগত কয়েক বছর ধরে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সফর সঙ্গী হিসেবে নিয়মিত বিদেশে সফর করছেন। তিনি কুমিল্লার প্রবীণ আ’লীগ নেতা আফজল খানের ছেলে হিসেবেও কেন্দ্রে একটা ভালো অবস্থানে রয়েছেন। ইমরান জেলা আ’লীগের সাবেক সদস্য।
এছাড়া কুমিল্লা চেম্বার অব কর্মাসের সভাপতি হিসেবেও দীর্ঘদিন ধরে দায়িত্ব পালন করছেন। তিনি দশম সংসদ নির্বাচনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে প্রায় ৪০ হাজার ভোট পেয়েছিলেন। তাই মনোনয়ন দৌড়ে ইমরানের অবস্থানও বেশ সুদৃঢ়।
ইমরান বলেন, আমি দলীয় মনোনয়ন পাওয়ার বিষয়ে শতভাগ আশাবাদী। আশা করি দল সঠিক সিদ্ধান্ত নেবে।
মনোনয়ন দৌড়ে রয়েছেন কুসিক প্যানেল মেয়র আঞ্জুম সুলতানা সীমা। সীমা সদর উপজেলা পরিষদের ভাইস-চেয়ারম্যান পদেও দায়িত্ব পালন করেছেন। সীমার আগে কুমিল্লা পৌরসভার ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন।
সীমা বলেন, দল যে সিদ্ধান্ত নেবে তাই মেনে নেবো। দলের অবাধ্য হবো না।
এদিকে, মনোনয়ন দৌড়ে রয়েছেন কুমিল্লা ভিক্টোরিয়া কলেজের সাবেক ভিপি ও মহানগর আ’লীগ নেতা নুর উর রহমান মাহমুদ তানিম। তিনি কুমিল্লা সিটি কর্পোরেশন প্রথম নির্বাচনে তিনি আ’লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী হিসেবে নির্বাচন করেছিলেন। তার রয়েছে ছাত্র রাজনীতির বর্ণাঢ্য ক্যারিয়ার। মাঠের রাজনীতিতে সক্রিয় তানিমও মেয়র পদে মনোনয়নের অন্যতম দাবিদার।
নুর উর রহমান মাহমুদ তানিম বাংলানিউজকে বলেন, ছাত্রজীবন থেকে অদ্যাবধি আ’লীগ ও এর অঙ্গ সংগঠনের রাজনীতির সঙ্গে জড়িয়ে রয়েছি। আশা করি নেত্রী নিরাশ করবেন না।
বিএনপি থেকে পুনরায় নির্বাচনে অংশগ্রহণ করবেন বর্তমান কুসিক মেয়র ও জেলা বিএনপির যুগ্ম সম্পাদক মনিরুল হক সাক্কু। তিনি পৌরসভার মেয়র হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছিলেন। বিএনপি নির্বাচনে এলে তার মনোনয়ন নিশ্চিতই বলা যায়। কারণ বিএনপির আর কোনো উল্লেখযোগ্য প্রার্থী নেই।
মনিরুল হক সাক্কু বাংলানিউজকে বলেন, নির্বাচনে পুনরায় অংশ নেওয়ার ইচ্ছে রয়েছে। দল চাইলে নির্বাচন করবো।
প্রার্থীরা নিজ নিজ এলাকায়ও বিভিন্ন সমাবেশে অংশ নিচ্ছেন । নগরী জুড়ে বিলবোর্ড-ফেস্টুনের মাধ্যমে নিজেদের প্রার্থিতার বিষয়টি জানান দিচ্ছেন।
বাংলাদেশ সময়: ২০৩২ ঘণ্টা, নভেম্বর ০৪, ২০১৬
পিসি/