ঢাকা, সোমবার, ৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ২৩ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

রাজনীতি

‘জঙ্গিবাদ নির্মূলে গণপ্রতিরোধে রাজনৈতিক উদ্যোগ জরুরি’

শামীম খান, স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০০৫৯ ঘণ্টা, এপ্রিল ২, ২০১৭
‘জঙ্গিবাদ নির্মূলে গণপ্রতিরোধে রাজনৈতিক উদ্যোগ জরুরি’ মতিয়া চৌধুরী, মুজাহিদুল ইসলাম সেলিম, কাজী জাফরুল্লাহ ও আনিসুর রহমান মল্লিক

ঢাকা: জনগণকে সংগঠিত করে গণপ্রতিরোধ গড়ে তুলে জঙ্গিবাদ নির্মূল করা সম্ভব বলে মনে করছেন ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতারা। এ লক্ষ্যে সরকারের পাশাপাশি রাজনৈতিক উদ্যোগ জরুরি বলেও মন্তব্য তাদের।

গত কয়েক দিনে সীতাকুণ্ড, সিলেট, মৌলভীবাজার, কুমিল্লাসহ বিভিন্ন স্থানে জঙ্গি তৎপরতার ঘটনায় রাজনৈতিক অঙ্গনসহ সর্বস্তরের মানুষের মধ্যে উদ্বেগ-উৎকণ্ঠা তৈরি হয়েছে। বিশেষ করে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতারা এটিকে গভীর ভাবনার বিষয় বলে মনে করছেন।

তাদের মতে, জঙ্গিবাদের বিরুদ্ধে সরকার ও প্রশাসনের নেওয়া পদক্ষেপগুলোই যথেষ্ঠ নয়। এর পাশাপাশি জনগণকে নিয়ে রাজনৈতিক প্রতিরোধ গড়ে তোলাও এই মুহূর্তে জরুরি।

ওইসব নেতারা বলছেন, জঙ্গিবাদ সরাসরি আসেনি। মূল উৎস মৌলবাদ ও সাম্প্রদায়িকতার ওপর ভিত্তি করে এটি তৈরি হয়েছে। তাই জঙ্গিবাদের পাশাপাশি মৌলবাদ ও সাম্প্রদায়িকতার বিরুদ্ধেও জনসচেতনতা বাড়ানোর মাধ্যমে গণপ্রতিরোধ গড়ে তুলতে হবে। এজন্য রাজনৈতিক, সমাজিক ও সাংস্কৃতিক তৎপরতা জোরদার করতে হবে। এসব কার্যক্রমের মাধ্যমেই জনগণণের ঐক্যবদ্ধ প্রতিরোধ গড়ে উঠবে। আর সে উদ্যোগ রাজনৈতিকভাবেই নিতে হবে।

আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য কৃষিমন্ত্রী মতিয়া চৌধুরী বাংলানিউজকে বলেন, ‘জঙ্গিবাদ নির্মূলে সরকারের সকল পদক্ষেপের সঙ্গে জনগণ রয়েছে, তাদের সমর্থন রয়েছে। জনগণকে সঙ্গে নিয়েই সরকার জঙ্গিবাদ নির্মূল করবে’।


আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য কাজী জাফরুল্লাহ বলেন, ‘জঙ্গিরা তো আর জঙ্গি হিসেবে জন্মগ্রহণ করেনি। তাদের মগজ ধোলাই করে জঙ্গি বানানো হয়েছে। এজন্য জঙ্গিবাদ নির্মূলে রাজনৈতিক ও সামাজিক তৎপরতার প্রয়োজন। জঙ্গিবাদের বিরুদ্ধে সরকারের জিরো টলারেন্সের পাশাপাশি জনগণকে সম্পৃক্ত করে প্রতিরোধ গড়ে তুলতে হবে’।

বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির(সিপিবি) সভাপতি মুজাহিদুল ইসলাম সেলিম বলেন, ‘সাম্প্রদায়িকতার ওপর ভিত্তি করে জঙ্গিবাদের সৃষ্টি ও লালিত-পালিত হয়। তাই জঙ্গিবাদের পাশাপাশি মৌলবাদ ও সাম্প্রদায়িকতার বিরুদ্ধেও ব্যাপক রাজনৈতিক, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক অভিযান চালাতে হবে। জঙ্গিদের অর্থের উৎসকে ভেঙে দিতে হবে। দেশকে রাষ্ট্রীয় চার মূলনীতির ধারায় ফিরিয়ে আনতে হবে’।

জাসদের একাংশের সভাপতি শরিফ নুরুল আম্বিয়া বলেন, ‘এর বিরুদ্ধে জনগণের ঐক্যবদ্ধ প্রতিরোধ গড়ে তোলার জরুরি পদক্ষেপ নিতে হবে। রাজনৈতিক ও সামাজিক শক্তিগুলোর ধারাবাহিক প্রতিরোধ তৎপরতা যেন অব্যাহত থাকে, সে ব্যবস্থা করতে হবে। আর এসব উদ্যোগ রাজনৈতিকভাবেই নিতে হবে’।

বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টির ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক আনিসুর রহমান মল্লিক বলেন, ‘গণমানুষকে সম্পৃক্ত করে জঙ্গিবাদকে প্রতিহতের জায়গায় যেতে হবে। জঙ্গিবাদ প্রতিহত ও নির্মূল করতে শুধুমাত্র আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাবাহিনী যথেষ্ট নয়, এর সঙ্গে জনগণের প্রতিরোধও জরুরি’।

ন্যাপের সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট এনামুল হক বলেন, ‘জঙ্গিবাদের বিরুদ্ধে সরকার ও প্রশাসনের পাশাপাশি জনগণকে সঙ্গে নিয়ে সম্মিলিত রাজনৈতিক ও সামাজিক প্রতিরোধ গড়ে তুলতে হবে। এ উদ্যোগ রাজনৈতিক দলকেই নিতে হবে’।

গণতন্ত্রী পার্টির সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য নুরুর রহমান সেলিম বলেন, ‘জঙ্গিবাদের বিরুদ্ধে গণপ্রতিরোধ গড়ে তুলতে জনসচেতনতা বাড়ানোর ওপরই এখন সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দিতে হবে। গণতান্ত্রিক ও অসাম্প্রদায়িক রাজনৈতিক দলগুলোকেই জনগণকে সংগঠিত করার উদ্যোগ নিতে হবে। যে মৌলবাদ ও সাম্প্রদায়িকতা থেকে জঙ্গিবাদের উত্থান, তার বিরুদ্ধে জনগণকে ঐক্যবদ্ধ করতে হবে’।

বাংলাদেশ সময়: ০৬৫১ ঘণ্টা, এপ্রিল ০২, ২০১৭
এসকে/এএসআর

 

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।