ঢাকা, সোমবার, ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ২৩ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

রাজনীতি

হেফাজতের আদর্শের সঙ্গে আ’লীগ কম্প্রোমাইজ করেনি

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১০০১ ঘণ্টা, এপ্রিল ১৩, ২০১৭
হেফাজতের আদর্শের সঙ্গে আ’লীগ কম্প্রোমাইজ করেনি

ঢাকা: হেফাজতে ইসলামের আদর্শের সঙ্গে আওয়ামী লীগ কোনো কম্প্রোমাইজ করেনি বলে জানিয়েছেন দলের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের।

তিনি বলেছেন, আমরা তো হেফাজতের আদর্শের সঙ্গে কোন কম্প্রোমাইজ করিনি। হেফাজত মূল বিষয় নয়।

মূল বিষয় সরকার কওমি মাদ্রাসার উচ্চ শিক্ষার স্বীকৃতি দিয়েছে। কওমি মাদ্রাসা শিক্ষা একটা বাস্তবতা। এখানে ধর্মীয় রাজনীতির সঙ্গে আপোসের অভিযোগ হাস্যকর।

ওবায়দুল কাদের বৃহস্পতিবার (১৩ এপ্রিল) সকালে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন। আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনার ধানমণ্ডির রাজনৈতিক কার্যালয়ে এ সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়। সংবাদ সম্মেলনে তিনি সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দেন।

ওবায়দুল কাদের বলেন, আমরা যারা রাজনীতি করি, আমাদের জনগণের আবেগ-অনুভূতির সঙ্গে সঙ্গতি রেখে বাস্তবমুখী সিদ্ধান্ত যারা নিতে পারে তারাই সত্যিকারের প্রগতিশীল। বাস্তবতা থেকে প্রগতি বিচ্ছিন্ন কিছু নয়। আমরা হেফাজতের সঙ্গে আমাদের আদর্শিক কোনো বিষয়ে সামঞ্জস্যতার আলোচনা করতে যাইনি। কোন ধর্মীয় রাজনীতি অথবা সাম্প্রদায়িক শক্তির সঙ্গে আপোস এটা হাস্যকর। আওয়ামী লীগ ধর্ম নিয়ে রাজনীতি করবে বা সাম্প্রদায়িক শক্তির সঙ্গে সমঝোতা করবে-এটা যারা ধর্ম নিয়ে রাজনীতি করে তাদের অভিযোগ। এটা খালেদা জিয়ার অভিযোগ।

তিনি আরও বলেন, দেশে ৭০ হাজার কওমি মাদ্রাসার ১৪ লাখ ছাত্র-ছাত্রী আছে। এটা একটা বাস্তবতা। এটাকে আমরা ‘ইগনোর’ করতে পারি না, সরকারি স্বীকৃতি থেকে বিচ্ছিন্ন রাখতে পারি না। সেটা অবশ্যই বাস্তবতা বিরোধী হবে। এখানে হেফাজতের সঙ্গে আমাদের কোনো এলায়েন্স হয়নি। তাদের চিন্তা-ধারার সঙ্গে আমাদের চিন্তা-ধারার একটা মিলমিশ হয়ে গেছে এ ধরণের ধারণা কোথা থেকে এলো।

বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার সংবাদ সম্মেলনের বক্তব্যের সমালোচনা করেন ওবায়দুল কাদের বলেন, বিএনপি নেত্রীর সংবাদ সম্মেলনের বক্তব্য গতানুগতিক, মিথ্যাচার, অজ্ঞাত তথ্যে ভরপুর। তিনি কিছু চটকদার বায়বীয়, বানোয়াট তথ্য উপস্থাপন করেছেন। আমি বেগম খালেদা জিয়াকে প্রশ্ন করতে চাই, একমাত্র ভারতের সঙ্গেই সমঝোতা স্মারক হলেই প্রশ্ন উঠবে কেন? ভারত আমাদের অত্যন্ত ঘনিষ্ঠতম বন্ধুপ্রতীম দেশ। তারা আমাদের মহান মুক্তিযুদ্ধে সরাসরি সহযোগিতা করেছেন। সে দেশের অনেক সৈন্য তাদের সর্বোচ্চ আত্মত্যাগ করেছেন। যে সকল রাষ্ট্র আমাদের মুক্তিযুদ্ধের সরাসরি বিরোধিতা করেছে তাদের সাথে ইতোপূর্বে অনুরূপ চুক্তি সম্পাদনের সময় এ ধরনের প্রশ্ন ওঠেনি কেন?

২০০২ সালের ডিসেম্বরে তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া ‘বাংলাদেশ চায়না ডিফেন্স এগ্রিমেন্ট’ শীর্ষক একটি চুক্তি করেছিলেন। সে চুক্তি নিয়ে কোন ধরনের কোন আলোচনা কী হয়েছিল? আমরা খালেদা জিয়ার কাছে তার জবাব চাই। আমরা ভারতের সাথে অনুরূপ চুক্তি করেছি।

নববর্ষের মঙ্গল শোভাযাত্রা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, মঙ্গল শোভাযাত্রার সঙ্গে ধর্মের কন্ট্রাডিকশন আছে-এটা যারা বলে তারা সত্য কথা বলে না। ধর্মের জায়গাকে আমরা আধুনিক করতে চাই, মূল জায়গায় ফিরিয়ে আনতে চাই। ইসলাম আধুনিকতাকে এক্সেপ্ট করে।

আমাদের ঢাকা মহানগর আওয়ামী লীগ একটা শোভাযাত্রা করে বাহাদুর শাহ পার্ক থেকে বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউ পর্যন্ত। কিন্তু এবার আমরা চিন্তা করেছি এ ধরণের শোভাযাত্রায় জনগণের ভোগান্তি হয়। বহুদিন ধরে কোনো ধরণের র‌্যালি করার পক্ষে আমরা নই। আমরা শোভাযাত্রা বাতিল করেছি। সিদ্ধান্ত নিয়েছি মানুষের যেন ভোগান্তি না হয়।

বাংলাদেশ সময়: ১৫৪৬ ঘণ্টা, এপ্রিল ১৩, ২০১৭
এসকে/আরআই

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।