ঢাকা, সোমবার, ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ২৩ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

রাজনীতি

হাওরকে দুর্গত অঞ্চল ঘোষণা করুন

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৭৩৪ ঘণ্টা, এপ্রিল ৩০, ২০১৭
হাওরকে দুর্গত অঞ্চল ঘোষণা করুন

ঢাকা: হাওরাঞ্চলের সার্বিক অবস্থা বিবেচনা করে আগামী ৬ মাসের জন্য ওই এলাকাকে ‘দূর্গত অঞ্চল’ ঘোষণার দাবি জানিয়েছেন বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া।

রোববার (৩০ এপ্রিল) সংবাদ মাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে তিনি এই দাবি জানান।

খালেদা জিয়া বলেন, আমি ভয়াবহভাবে ক্ষতিগ্রস্থ মানুষের স্বার্থ ও কল্যাণে হাওর অঞ্চলকে আগামী ৬ মাসের জন্য দর্গত অঞ্চল ঘোষণা ও সেই মোতাবেক আন্তরিকভাবে জরুরি ভিত্তিতে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহনের জন্য জোর দাবি জানাচ্ছি।

দলমত নির্বিশেষ সকলকে সামর্থ অনুযায়ী দুর্গত মানুষের পাশে দাঁড়ানোর আহবান জানিয়ে তিনি বলেন, হাওর অঞ্চলের সার্বিক পরিস্থিতিতে আমি গভীরভাবে উদ্বিগ্ন। প্রধানমন্ত্রী হিসেবে শেখ হাসিনার ক্ষতিগ্রস্থ এলাকা পরিদর্শনের খবরে সকলে কিছুটা আশান্বিত হয়েছিলো। যেভাবেই থাকুন না কেন, তিনি এখন ক্ষমতার চেয়ারে আসীন। সেই হিসেবে দুযোর্গ মোকাবিলার প্রধান দায়িত্ব মূলত তাঁরই।

এই ধারণা থেকে আমাদেরও আশা ছিলো, হাওর এলাকা পরিদর্শন শেষে তিনি হয়তো ওই এলাকাকে দুর্গত অঞ্চল ঘোষণা করবেন। দুঃখের বিষয়, সে আশা পুরণ হয়নি। ক্ষতিগ্রস্থ এলাকায় তার গতানুগতিক তৎপরতা দেখে ও বক্তব্য শুনে মনে হয়েছে যে, তিনি পরিস্থিতির ভয়াবহতা উপলব্ধি করেন নি বা স্বীকার করতে চাননি।

হাওর অঞ্চলে নতুন ফসল না আসা পর্য্ন্ত ক্ষতিগ্রস্থদের খাদ্য সহায়তা প্রদান, সরকারি কৃষি ঋণের সুদ সম্পূর্ণ মওকুফ, সরকারি-বেসরকারি সকল প্রকার ঋণের কিস্তি আদায় স্থগিত, কৃষকদের ক্ষতিপুরণ ও বিনাসুদে দীর্ঘমেয়াদী ঋণ প্রদান, একবছরের জন্য জলমহালের ইজারা বাতিল করে উন্মুক্ত জলাশয়ে মাছ ধরে জীবিকা নির্বাহের সুযোগ প্রদান, ত্রান, পূনর্বাসন ও চিকিৎসার উপযুক্ত ব্যবস্থারও দাবি জানান খালেদা জিয়া।

তিনি বলেন, আমরা অনতিবিলম্বে এসবের প্রতিকার দাবি করছি। মানুষের দুর্গতি নিয়ে কোনো রকমের রাজনীতি না করার আহবান জানাচ্ছি। পাশাপাশি সকল দুর্নীতি, অনিয়ম, অব্যবস্থাপনা, সমন্বয়হীনতা ও আমলাতান্ত্রিক দীর্ঘসূত্রিতা পরিহার করে হাওর উন্নয়ন পরিকল্পনা দ্রুত বাস্তবায়নের পদক্ষেপ গ্রহনের দাবিও জানাচ্ছি।

বিবৃতিতে খালেদা জিয়া বলেন, আমরা লক্ষ্য করেছি যে, প্রতিবেশী দেশের সীমান্তবর্তী খনি থেকে ইউরেনিয়াম মিশ্রিত পানি দুষনে জলজপ্রানীর মৃত্যুর ব্যাপারে পত্র-পত্রিকায় প্রকাশিত খবরে ক্ষুন্ন করাই এক সময় ক্ষমতাসীনদের কাছে ত্রানতৎপরতার চেয়ে বেশি গুরুত্বপূর্ণ হয়ে ওঠে।

মানুষের চরম দুযোর্গ ও দুর্ভোগের সময়ে এ নিয়ে তারা মন্ত্রিসভার বৈঠকে পর হাসি-ঠাট্টায় মেতে উঠে মর্মে যে সংবাদ প্রকাশিত হয়, তাতেও আমরা দেশবাসীর সঙ্গে সমভাবে ব্যথিত হয়েছি।

হাওর অঞ্চলে ক্ষমতাসীনদের বিরুদ্ধে অপকর্ম ও দুর্ণীতির অভিযোগ তুলে তিনি বলেন, দেশবাসীর সঙ্গে আমরাও বিশ্বাস করি যে, এই মানবিক বিপর্য্য় সৃষ্টর জন্য প্রাকৃতিক বিরুপরতার পাশপাশি ক্ষমতাসীনদের অপকর্ম, দুর্নীতি ও ব্যর্থতাও দায়ী।

হাওরের শস্য, মৎস্য সম্পদ, গবাদিপশু ও অন্যান্য জলজপ্রাণীর যে বিপুল হানি ঘটেছে তা আমাদের জন্য এক জাতীয় বিপর্য্য়। এই ক্ষয়ক্ষতি কাটিয়ে উঠতে আমি জাতীয় পর্য়ায়ে পরিকল্পনা গ্রহনের আহবান জানাই-বলেন খালেদা জিয়া।

হাওর অঞ্চলে দুযোর্গের পরপরই দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের নেতৃত্বে প্রতিনধিদল প্রেরণের কথা উল্লেখ করে বিএনপি চেয়ারপারসন বলেন, দলের প্রতিনিধিদল সেখানে দুর্গতদের মানুষের পাশে দাঁড়িয়ে সাহস যুগিয়েছেন, ক্ষয়ক্ষতির অবস্থা সরেজমিনে পর্যবেক্ষন করেছেন এবং ত্রানতৎপরতা চালিয়েছেন। তারা সেখানে বিপর্য্য় ও ক্ষয়ক্ষতির যে ভয়াবহ চিত্র দেখেছেন, তার আলোকেই আমরা দুর্গত অঞ্চল ঘোষণার আহবান জানাই।

বাংলাদেশ সময়: ২৩৩০ ঘণ্টা, এপ্রিল ৩০, ২০১৭
এজেড/

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।