বৃহস্পতিবার (১৭ আগস্ট) দিবাগত রাতে তাদের মারধর করে হল শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি জহিরুল ইসলামের অনুসারীরা।
মারধরের শিকার শিক্ষার্থীরা হলেন রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের বানী, মেহেদী, আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের মাশরুর, মনোবিজ্ঞান বিভাগের ইরফান।
হল প্রশাসন, ছাত্রলীগ ও শিক্ষার্থীদের সাথে কথা বলে জানা যায়, গতকাল রাতে শিবির সন্দেহ করে তাদেরকে রড দিয়ে পিটুনি দেয়া হয়। এ সময় সাউন্ড বক্সে উচ্চস্বরে গান বাজানো হয়। পরে তাদেরকে রক্তাক্ত অবস্থায় হলগেটে ফেলে রাখা হয়।
বানী নামে শিক্ষার্থী বলেন, আমাকে এমনভাবে মারে আমার দুই পায়ে দিয়ে রক্ত ঝরেছে। আমার প্রচণ্ড পিপাসা লাগলেও তারা আমাকে পানি দেয়নি।
ছাত্রলীগ নেতাদের দাবি, তারা শিবিরের বিভিন্ন পেইজে লাইক দিয়েছিল। এজন্য তাদের মারা হয়েছে।
আহত অবস্থায় এই পাঁচ শিক্ষার্থীকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। তাদের সকলের মোবাইল, মানিব্যাগ হল ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা রেখে দিয়েছেন বলে অভিযোগ করেছেন শিক্ষার্থীরা।
এদিকে পিটুনির শিকার শিক্ষার্থীদের বিরুদ্ধে শিবির করার প্রমাণ পাওয়া যায়নি। যার কারণে তাদেরকে ছেড়ে দেয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন হল প্রাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. নিজামুল হক ভূইয়া।
তিনি বলেন, ‘আমি ঘটনাটি শুনছি। আর তাদের ব্যাপারে থানায় যোগাযোগ করেছি। থানা তাদের শিবির করার ব্যাপারে কোন প্রমাণ পায়নি বলে আমাকে জানিয়েছে। ’
এদিকে শিবির সন্দেহ আটক হওয়া শিক্ষার্থীদের অনেকের মোবাইল, মানিব্যাগ ও ল্যাপটপ, টাকা পয়সা ছাত্রলীগ নেতাকর্মীরা রেখে দিচ্ছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। গত কয়েকদিনে শিবির সন্দেহে প্রায় বিশ জনের অধিক শিক্ষার্থীকে থানায় সোপর্দ করা হয়েছে। এছাড়াও ২০ থেকে ২২ জন শিক্ষার্থীকে মারধর করে বের করে দেয়া হয়েছে।
ভুক্তভোগী সূত্রে জানা যায়, সূর্যসেন হলের সাব্বিরের থেকে ৩০ হাজার, এফ রহমান হলের নাজমুলের কাছ থেকে ল্যাপটপ রেখে দেয়া হয়েছে। এসব শিক্ষার্থীদের কেউ নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিসও নিতে পারেনি।
এদিকে শিবির তাড়ানোর নামে এক শ্রেণীর ছাত্রলীগ নেতাকর্মীদের এসব কর্মকাণ্ডের ব্যাপারে সাধারণ শিক্ষার্থীরা বলছেন, শিবির সন্দেহে বের করে দিয়ে ওই সিটগুলো দখল করে নিজেদের গ্রুপের অনুসারী ওঠানোর জন্য ছাত্রলীগ নেতাকর্মীরা এই কাজ করছেন। পাশাপাশি ব্যক্তিগত দ্বন্দ্বের জেরে অনেক ছাত্রলীগ কর্মী কিংবা সমর্থককেও শিবির হিসেবে ফাঁসাচ্ছে প্রতিদ্বন্দ্বী গ্রুপ।
সম্প্রতি এ রকম একটি দ্বন্দ্বকে পুঁজি করে ‘শিবির’ তকমা দিয়ে হল থেকে বের করে দেয়া হয়েছে ঢাবির সমাজবিজ্ঞান বিভাগ ছাত্রলীগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদককে। একই হলে মনিরুল নামে এক ছাত্রলীগ সমর্থক শিক্ষার্থীকে পিটিয়ে মারাত্মক আহত করা হয়। তাকে দেখতে যান ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় সভাপতি সাইফুর রহমান সোহাগ।
বাংলাদেশ সময়: ২০৫৮ ঘণ্টা, আগস্ট ১৮, ২০১৭
এসকেবি