ঢাকা, মঙ্গলবার, ১১ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৬ নভেম্বর ২০২৪, ২৪ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

রাজনীতি

পুলিশ হেফাজতে নির্যাতনের অভিযোগ বাসদ নেতাকর্মীদের

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১০৫২ ঘণ্টা, এপ্রিল ২৮, ২০১৮
পুলিশ হেফাজতে নির্যাতনের অভিযোগ বাসদ নেতাকর্মীদের সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন বরিশাল জেলা শাখার সদস্য সচিব ডা. মষীনা চক্রবর্তী। ছবি: বাংলানিউজ

ব‌রিশাল: বিক্ষোভ মিছিল শেষে আটকের পর নেতাকর্মীদের পুলিশ হেফাজতে নির্যাতনের অভিযোগ করেছেন বাংলাদেশ সমাজতান্ত্রিক দলের (বাসদ) এর বরিশাল জেলা শাখার সদস্য সচিব ডা. মষীনা চক্রবর্তী। 

শনিবার (২৮ এপ্রিল) দুপুরে নগরের ফকির বাড়ি রোডের বাসদ কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ অভিযোগ করেন।

লিখিত বক্তব্যে মনিষা চক্রবর্তী বলেন, গত ১৯ এপ্রিল ব্যাটারিচালিত রিকশা সংগ্রাম কমিটি ও বাসদের আয়োজনে ভুখা মিছিল ও বিক্ষোভ শেষে নেতাকর্মীদের নিয়ে ফেরার পথে পুলিশ বিনা উস্কানিতে বিক্ষোভকারীদের ওপর হামলা চালায়।

পরে বাসদের জেলা কমিটির আহ্বায়ক প্রকৌশলী ইমরান হাবিব রুম্মন ও আমাকে আটক করে কোতোয়ালি মডেল থানার দোতলার একটি কক্ষে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে নেতাকর্মীদের দুই দফায় অমানবিক নির্যাতন চালানো হয়। এ সময় নির্যাতনকারী পুলিশ সদস্যরা কে নারী আর কে পুরুষ তার বিচার করেনি।  

তিনি বলেন, নির্যাতনের ভয়ঙ্কর চিত্র ছিল শুক্রবার ২০ এপ্রিল সকালে। পুলিশ ওইদিন আমাদের সদর হাসপাতালে মেডিকেল চেক আপের জন্য নিয়ে যায়। পরে সকাল ১০টায় থানায় এনে উপ-পরিদর্শক (এসআই) হাসানসহ পুলিশ সদস্যরা আমাকেসহ বাসদ নেতা রুম্মান ও নাসরিন আক্তার টুম্পাকে চর থাপ্পর মারতে থাকে এক পর্যায়ে লাঠি দিয়ে বেধড়ক পেটায় ও অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করেন।

তিনি আরও বলেন, পরবর্তীতে আমাদের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা দিয়ে কারাগারে পাঠায় পুলিশ। এছাড়া ঘটনার দিন রাতে নগরের বিভিন্ন স্থান থেকে পুলিশ রিকশা শ্রমিকসহ বাসদ নেতাদের ধরে এনে ওই মামলায় গ্রেফতার দেখায়। পুলিশ তাদেরও নির্যাতন করেন।

সংবাদ সম্মেলন বাসদ আহ্বায়ক ইমরান হাবিব রুম্মান, শ্রমিক নেতা মিঠুন চক্রবর্তীসহ আটক ১৫ নেতাকর্মী নিঃশর্ত মুক্তির দাবিসহ ৫ দফা দাবি পেশ করেন।

দাবি গুলো হলো- পুলিশি হেফাজতে শ্রমিক নেতাদের ওপর নিপীড়ন-নির্যাতনের বিচার, বিভিন্ন শ্রমিক এলাকায় গণ গ্রেফতার, ভয়ভীতি প্রদর্শন ও হুমকি নির্যাতন বন্ধ করা, শ্রমিক নেতাদের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার করা ও ব্যাটারিচালিত অটোরিকশার লাইসেন্স প্রদান করে নগরীতে গণপরিবহনের শৃঙ্খল ফিরিয়ে আনা।

এসব দাবি পূরণ না হওয়া পর্যন্ত তারা তাদের আন্দোলন কর্মসূচি চালিয়ে যাওয়ার কথা জানিয়েছেন।

এ সময় সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন, বাংলাদেশ কমিউনিস্ট পার্টির বরিশাল জেলার সভাপতি অ্যাডভোকেট একে আজাদ, বাংলাদেশ ইউনাইটেড কমিউনিস্ট লীগ সম্পাদক অধ্যাপক জলিলুর রহমান, গণসংহতির আন্দোলনের আহ্বায়ক দেওয়ান আব্দুর রশিদ নিলু, বাংলাদেশ সমাজতান্ত্রিক দল (মার্কসবাদী) জেলা সমন্বয়ক সাইদুর রহমান প্রমুখ।

অভিযোগ প্রসঙ্গে বরিশাল মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার এসএম রুহুল আমিন বাংলানিউজকে বলেন, আটক বাসদ নেতাকর্মীদের পুলিশ হেফাজতে নির্যাতনের ঘটনা ঘটেছে বলে আমার জানা নেই। এ ধরনের কোনো অভিযোগ যদি বাসদ নেতাদের থাকে তাহলে তারা লিখিত অভিযোগ দিতে পারেন। অভিযোগ পেলে বিষয়টি আমরা তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করবো।  

এর আগে, গত ১৯ এপ্রিল বরিশালে ব্যাটারি চালিত অটো রিকশা শ্রমিক সংগ্রাম কমিটির ভুখা মিছিল ও বিক্ষোভ শেষে পুলিশের সঙ্গে বাসদ নেতাকর্মীদের সংঘর্ষের ঘটনায় ডা. মনীষাসহ ৬ নেতাকর্মীকে আটক করেছিলো পুলিশ। পরে নগরের বিভিন্ন স্থান থেকে আরও ১১ রিকশা চালক ও বাসদ নেতাকর্মীকে আটক করে তাদের বিরুদ্ধে পুলিশের দায়ের একটি মামলায় কারাগারে পাঠায়। ওই মামলায় গত মঙ্গলবার (২৪ এপ্রিল) মনীষা চক্রবর্তী অর্ন্তবর্তীকালীন জামিনে মুক্তি পায়।  
 
বাংলা‌দেশ সময়: ১৬৪৮ ঘণ্টা, এপ্রিল ২৮, ২০১৮
এমএস/আরআইএস/

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।