ঢাকা: স্বাধীনতার ৫০ বছর পর জাতীয় মুক্তিযুদ্ধ কাউন্সিলে (জামুকা) জিয়াউর রহমানের রাষ্ট্রীয় খেতাব কেড়ে নেওয়ার সিদ্ধান্ত সরকারের অবিনাশী কুটিল প্রতিহিংসার বহিঃপ্রকাশ বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম-মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী।
তিনি বলেন, রাষ্ট্রযন্ত্রের নিষ্ঠুর থাবায় জাতীয়তাবাদী শক্তিকে ধ্বংস করতে না পেরে দেশমাতৃকার এই মহান বীরের অবদানকে মুছে ফেলার জন্য ব্যর্থ প্রচেষ্টার অংশ হিসেবেই সরকারপ্রধানের পদলেহনকারী কতিপয় ব্যক্তি এই সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।
বুধবার (১০ ফেব্রুয়ারি) দুপুর ১২টায় নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ মন্তব্য করেন।
রিজভী বলেন, মুক্তিযুদ্ধ মন্ত্রী প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধাদের এমনিতেই তালিকা থেকে বাদ দিয়ে এবং নানা ধরনের অপকর্মের মাধ্যমে জনগণের মধ্যে বিতর্কিত হয়েছেন। সেজন্যেই জিয়াউর রহমানের রাষ্ট্রীয় খেতাব বাতিলের চক্রান্তে লিপ্ত হয়েছেন। শহীদ জিয়া, খালেদা জিয়া এবং তারেক রহমানের নামে বিষোদগার করলেই আওয়ামী নেতাদের কবিরা গুণাহ মাফ করে দেন প্রধানমন্ত্রী। এরা তমসাবৃত মোহান্ধ বুদ্ধির উন্মাদ আস্ফালনে লিপ্ত রয়েছেন। এরা সহজাত বিচার-বুদ্ধি হারিয়ে ফেলেছেন। এদের মনে-মস্তিষ্কে অন্ধকার নেমেছে। এরা এক ধরনের প্রতিবন্ধী। এরা কুৎসা সঞ্চারিত মনের বিকারগ্রস্ত ব্যক্তি। এরা প্রধানমন্ত্রীর অসহিষ্ণু মননের বাইপ্রোডাক্ট।
তিনি বলেন, জিয়া, জিয়া পরিবার এবং জাতীয়তাবাদী শক্তির প্রতি প্রধানমন্ত্রীর লাগামহীন ক্রোধ এবং অন্ধ অসুয়া চরিতার্থ করার এরা হুকুম বরদার। যে মহান ব্যক্তি দেশের জন্য অকুতোভয়ে লড়াই করেছেন সেই জিয়াউর রহমানের ন্যায় বীরের খেতাব মাফিয়া রাষ্ট্রশক্তির জোরে কেড়ে নেওয়ার চেষ্টা করা হলেও জনমনে যে ইতিহাস রচিত হয়ে আছে সেই ইতিহাস অমর, অব্যয়, অক্ষয়। তা রাষ্ট্রযন্ত্রের হুমকিতে কখনো মুছে ফেলা যাবে না।
বিএনপির এই মুখপাত্র বলেন, জিয়াউর রহমানের কীর্তি দেশবাসীর অন্তরে আজও অম্লান। জিয়াকে নিয়ে মানুষের মধ্যে যে আবেগ তা যুগে যুগে মানুষের হৃদয়ে বহমান থাকবে। সূর্যের আলোকে আটকানো যায় না, এর বিশাল ব্যাপ্তি পৃথিবীসহ সৌরলোকে ছড়িয়ে পড়ে। বীরত্ব শব্দটি দেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব রক্ষায় প্রয়োজন হয়, চাকরি রক্ষায় নয় কিংবা প্রমোশন বা ইনক্রিমেন্ট আদায়ের জন্য নয়। শহীদ জিয়া ছিলেন সেই বীর যিনি দেশপ্রেমে পরিপূর্ণ একজন ব্যক্তি।
তিনি বলেন, আমি শহীদ জিয়াউর রহমানের রাষ্ট্রীয় খেতাব কেড়ে নেওয়ার সিদ্ধান্তে তীব্র ঘৃণা, নিন্দা, ধিক্কার ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি এবং অবিলম্বে এ ধরনের কুটিল সিদ্ধান্ত থেকে সরে আসার আহ্বান জানাচ্ছি।
বিএনপিসহ সব অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মী ও জাতীয়তাবাদী শক্তির প্রতি আহ্বান জানিয়ে রিজভী বলেন, ‘মৃত্যুর ভয়ে ভীরু বসে থাকা, আর না- পরো পরো যুদ্ধের সজ্জা’। আজ দৃঢ় দাঁতে পুঞ্জিত হাতে প্রতিরোধ করো শক্ত, প্রতি ঘাসে ঘাসে বিদ্যুৎ জাগে সাড়া প্রত্যয়-ব্যক্ত’।
বাংলাদেশ সময়: ১৩৪০ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ১০, ২০২১
এমএইচ/এমআরএ