ঢাকা: আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরের সমালোচনা করে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদকের কথায় আমরা সবাই একটু বিনোদন পাই, কৌতুকবোধ করি। তার কথা বলার ভঙ্গি খুব সুন্দর।
শনিবার (১৩ মার্চ) জাতীয় প্রেসক্লাব মিলনায়তনে স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উপলক্ষে ডক্টরস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ড্যাব) এর উদ্যোগে আয়োজিত স্বেচ্ছায় রক্তদান, বিনামূল্যে চিকিৎসা সেবা ও ওষুধ বিতরণ কর্মসূচি উদ্বোধন করার সময় তিনি এসব কথা বলেন।
মির্জা ফখরুল বলেন, তার (ওবায়দুল কাদের) বসে থাকার ভঙ্গি খুব সুন্দর, তিনি যে আসনে বসে কথা বলেন সেটাও খুব সুন্দর। দেখতে অত্যন্ত সুদর্শন মানুষ। চমৎকার কটি পরে, তার উপরে নৌকা মার্কার পিন পরেন। পত্র-পত্রিকায় বের হয়েছে তার ঘড়িগুলো নাকি ৩৬ লাখ, ৫২ লাখ, ১ কোটি এ রকম দামের। আসলে দাম কত আমরা সেটা জানি না। তিনি শুক্রবারও বিএনপির আন্দোলন সম্পর্কে কটাক্ষ করেছেন। প্রত্যেকদিন বিএনপিকে নিয়েই কথা বলেন। অন্যদিকে বলেন, বিএনপি নেই। তাহলে প্রতিদিন বিএনপি সম্পর্কে কথা কেন বলেন? কারণ আপনারা জানেন, বিএনপি আছে, খুব ভালো করে আছে এবং আপনাদের উপর চড়াও হয়ে বসেছে বলেই প্রতিদিন বিএনপিকে নিয়ে কথা বলেন।
ছবি: শাকিল আহমেদ
বিএনপি মহাসচিব বলেন, সাধারণ সম্পাদক সাহেবের লজ্জা হওয়া উচিত। আপনার এলাকা বসুরহাটে কি হচ্ছে? পত্রিকায় আসছে, সেখানে একজন সাংবাদিকসহ যে দু’জন খুন হয়েছে তাদের মধ্যে মৃত শ্রমিকের ভাই মামলা করতে গিয়েছিল কিন্তু পুলিশ তার মামলা নেয়নি। কাদের মির্জার বিপক্ষে মামলা নেয়নি। কারণ তিনিতো শুধু কাদের মির্জা নয়, তিনি বাংলাদেশের ২য় শক্তিশালী ক্ষমতাধর মানুষ ওবায়দুল কাদের সাহেবের ভাই। কোথায় বিচার, কোথায় ন্যায়ের শাসন? তাই আমি বলেছি, বিএনপির সমালোচনা করার আগে আপনারা আপনাদের নিজের ঘর সামলান।
মির্জা ফখরুল বলেন, আওয়ামী লীগের মধ্যে প্রতিদিনই মারামারি হচ্ছে লুটের বখরা নিয়ে। বাংলাদেশকে যে লুট করেছে সেই লুটের বণ্টন নিয়ে মারামারি করে তারা। এদের লক্ষ্য এখন একটাই। সেটা হচ্ছে বাংলাদেশকে লুট করে নেওয়া। আমরা ছোটবেলায় মায়ের মুখে শুনতাম, খোকা ঘুমালো, পাড়া জুড়ালো, বরগি এলো দেশে। সেই বরগিদের ভূমিকায় রয়েছে তারা। বরগিরা যেমন বাংলাদেশের কৃষকদের সম্পদ লুট করে নিয়ে যেতো ঠিক সেইভাবে আজকে তারা সমগ্র বাংলাদেশকে লুট করে নিয়ে যাচ্ছে। তারা বিদেশে বেগমপাড়া, ইংল্যান্ড, অ্যামেরিকায় বাড়িঘর তৈরি করছে।
বিএনপি কেন ৭ মার্চ পালন করলো তার ব্যাখ্যা দিতে গিয়ে ফখরুল বলেন, আমরা ৭ মার্চ পালন করেছি। অনেকে একথা বলেছেন যে ৭ মার্চ পালন করলে ৭ মার্চের ভাষণকে স্বীকৃতি দেওয়া হয়। ৭ মার্চের ভাষণতো ইতিহাসের একটা অংশ। সেটাকে অস্বীকার করারতো কোনো উপায় নেই। যেহেতু আমরা সমস্ত ইভেন্টগুলো করছি। ৭ মার্চকেও আমাদের বলতে হবে। আমরা কি বলেছি ৭ মার্চে। আমরা বলেছি যে ৭ মার্চের ভাষণেই স্বাধীনতা আসেনি। আমরা বলেছি একদিনের ভাষণে যুদ্ধ পরিণত হয়নি। এই স্বাধীনতা পাওয়ার জন্য আমাদের পূর্বপূরুষেরা তৎকালীন আমাদের সহকর্মীরা যারা তখন ছাত্র রাজনীতি, কৃষক রাজনীতি শ্রমিক রাজনীতির সঙ্গে সরাসরি জড়িত ছিলেন, তারা সবাই তাদের সর্বস্ব দিয়ে স্বাধীনতা সংগ্রামকে মুক্তিযুদ্ধের দিকে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেছিলেন।
ড্যাবের মহাসচিব প্রফেসর ডা. আব্দুস সালামের সভাপতিত্বে ও ড্যাবের সভাপতি অধ্যাপক ডা. হারুন আল রশিদের সার্বিক তত্ত্বাবধানে অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আব্দুস সালাম, যুবদল সভাপতি সাইফুল ইসলাম নীরব, ড্যাবের কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক শাকিল, যুবদল উত্তরের সভাপতি এসএম জাহাঙ্গীর হোসেন, ছাত্রদল সভাপতি ফজলুর রহমান খোকন, সাধারণ সম্পাদক ইকবাল হোসেন শ্যামল, সাংগঠনিক সম্পাদক সাইফ মাহমুদ জুয়েল প্রমুখ।
অনুষ্ঠানটি সঞ্চলনা করেন সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব অধ্যাপক মেহেদি হাসান।
বাংলাদেশ সময়: ১৫১৫ ঘণ্টা, মার্চ ১৩, ২০২১
এমএইচ/এইচএডি