ঢাকা: মঙ্গলবার দিবাগত রাত থেকে চট্টগ্রাম, নওগাঁ, খুলনা, কিশোরগঞ্জ, ময়মনসিংহ, পটুয়াখালীসহ বিভিন্ন জেলায় বিএনপি ও অঙ্গ-সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা দিয়ে গ্রেফতার করা হয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
বুধবার (৩১ মার্চ) এক বিবৃতিতে অবিলম্বে গ্রেফতার নেতাকর্মীদের মুক্তি দাবি করেন বিএনপি মহাসচিব।
তিনি বলেন, জুলুমবাজ সরকার কর্তৃক নির্বিচারে মানুষ হত্যা, শান্তিপূর্ণ সভা-সমাবেশে হামলা এবং জনগণের সাংবিধানিক ও গণতান্ত্রিক অধিকার হরণের প্রতিবাদে বিএনপি আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছে। এই আন্দোলনকে দমন করতে গণবিরোধী সরকার ফ্যাসিবাদী কায়দায় হামলা-মামলা-দমন-নিপীড়নের সাঁড়াশি অভিযান অব্যাহত রেখেছে। ২৯ ও ৩০ মার্চ মহানগর ও জেলা সদরে বিএনপির কর্মসূচিতে হামলার পর এখন মিথ্যা মামলা দায়ের করে নেতাকর্মীদের গ্রেফতার করতে গ্রেফতারি অভিযান, হয়রানি ও জুলম চালানো হচ্ছে।
মির্জা ফখরুল বলেন, চট্টগ্রামে বিএনপি ও অঙ্গ সংগঠনের নেতাকর্মীদের গ্রেফতার, মিথ্যা মামলায় হয়রানি চলছে। মঙ্গলবার বিএনপির চট্টগ্রাম বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক মাহবুবের রহমান শামীম, মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক ডা. শাহাদাত হোসেন, সদস্য সচিব আবুল হাশেম বক্কর, দক্ষিণ জেলা বিএনপির আহবায়ক আবু সুফিয়ান, মহানগর বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক এস এম সাইফুল আলম, নাজিমুর রহমান, ইয়াসিন চৌধুরী লিটন, মো. শাহ আলম, মহানগর যুবদল সভাপতি মোশাররফ হোসেন দীপ্তি, সাধারণ সম্পাদক মো. শাহেদ, মহানগর স্বেচ্ছাসেবক দল সভাপতি এইচ এম রাশেদ খান, সাধারণ সম্পাদক বেলায়েত হোসেন বুলু, মহানগর মহিলা দল সভাপতি মনোয়ারা বেগম মনি, মহানগর ছাত্রদলের আহ্বায়ক সাইফুল আলম, সদস্য সচিব শরিফুল ইসলাম তুহিনসহ মহানগর ও বিভিন্ন থানা নেতৃবৃন্দের নামে মিথ্যা মামলা দিয়ে গ্রেফতার অভিযান চালানো হচ্ছে।
তিনি বলেন, মঙ্গলবার রাতে পটুয়াখালী জেলা বিএনপি কার্যালয়ে আওয়ামী সন্ত্রাসীরা হামলা, লুটপাট ও অগ্নিসংযোগ করেছে। হামলায় ৩ জন নেতাকর্মী আহত হয়েছেন। পুলিশ হামলাকারীদের গ্রেফতার না করে উল্টো বিএনপির ৯ জন নেতাকর্মীকে আটক করেছে।
নওগাঁ জেলায় বিএনপির পূর্বঘোষিত বিক্ষোভ সমাবেশে পুলিশের গুলি, টিয়ারগ্যাস ও লাঠিচার্জের নির্মম হামলার পর রাতে নওগাঁ জেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক রফিকুল ইসলাম, জেলা বিএনপির সদস্য ও মহাদেবপুর উপজেলা বিএনপির সভাপতি রবিউল আলম বুলেট, মহাদেবপুর উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আব্দুল মতিন, সাংগঠনিক সম্পাদক সাজ্জাদ হোসেন, স্বেচ্ছাসেবক দলের মহাদেবপুর থানা শাখার সভাপতি আব্দুল হান্নান, মহাদেবপুর থানা যুবদলের যুগ্ম আহ্বায়ক কাজী সোবহান, সদস্য ইখতিয়ার উদ্দিন দুরন্ত, চঞ্চল, নওগাঁ পৌর বিএনপি নেতা মুকুল স্বর্ণকার, এনামুল হক, বাবু, জেলা যুবদল সদস্য আনোয়ার হোসেন, শহীদুল ইসলামের ওপর হামলা চালিয়ে আহতাবস্থায় গ্রেফতার করা হয়েছে।
বিএনপি মহাসচিব বলেন, খুলনা মহানগর বিএনপির যুব বিষয়ক সম্পাদক শফিকুল আলম তুহিনকে মঙ্গলবার রাতে তার বাড়ির গ্রিল ভেঙে গ্রেফতার করেছে গোয়েন্দা পুলিশ।
মির্জা ফখরুল আরও বলেন, গত ২৯ ও ৩০ মার্চ বিএনপির বিক্ষোভ সমাবেশে প্রতিবন্ধকতা, হামলার পর ময়মনসিংহে বিএনপি ও অঙ্গ সংগঠনের চার শতাধিক নেতাকর্মীর নামে মিথ্যা মামলা দায়ের করে তাদের গ্রেফতার করতে সাঁড়াশি অভিযান চালায় পুলিশ। বুধবার সকালে ময়মনসিংহ মহানগর যুবদলের সভাপতি মোজাম্মেল হক টুটু এবং ময়মনসিংহ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক জসিম উদ্দিন জনিকে পুলিশ গ্রেফতার করে।
কিশোরগঞ্জে মঙ্গলবার বিএনপির বিক্ষোভ সমাবেশে পুলিশের গুলিবর্ষণ, লাঠিচার্জের পর গতরাতে জেলা বিএনপির ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প বিষয়ক সম্পাদক আব্দুল কাইয়ুম, জেলা ছাত্রদলের সদস্য হাসিবুর রহমান মিশাদ, পৌর ৭নং ওয়ার্ড যবদলের সাধারণ সম্পাদক আনার মিয়া, যুবদল নেতা জাবাল মিয়া ও বাবুকে গ্রেফতার ও অন্যান্য নেতৃবৃন্দের বাড়িতে বাড়িতে গ্রেফতারের উদ্দেশ্যে অভিযান চালানো হয়।
বিএনপি মহাসচিব বলেন, ৩০ ডিসেম্বরের নির্বাচনের আগের রাতে ভোটের মাধ্যমে নির্লজ্জভাবে রাষ্ট্রক্ষমতা দখলকারী আওয়ামী সরকার এখন আরও বেপরোয়াভাবে ফ্যাসিবাদী কায়দায় দেশ শাসন করছে। সরকারের সকল অপকর্ম ও অপশাসনের মূলোৎপাটনে জনগণের ক্ষোভ এখন তীব্র থেকে তীব্রতর হচ্ছে। জনদাবি মেনে দমন-নিপীড়ন বন্ধ এবং পদত্যাগ করে নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকারের হাতে ক্ষমতা হস্তান্তর না করলে বর্তমান সরকারকে জনগণের কাঠগড়ায় দাঁড়াতে হবে।
বাংলাদেশ সময়: ১৮১৪ ঘণ্টা, মার্চ ৩১, ২০২১
এমএইচ/এমজেএফ