নাটোর: তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক বলেছেন, জামায়াত ও হেফাজতীদের মত প্রতিক্রিয়াশীল গোষ্ঠী কখনো দেশের উন্নয়ন বা কল্যাণের কথা ভাবেনি। তারা সবসময় ধর্মকে সামনে এনে বাংলাদেশের সহজ সরল মানুষদের বিভ্রান্ত করেছে।
পলক বলেন, পাকিস্তানীরা যখন ষড়যন্ত্র করে বাঙালিদের দমাতে পারেনি, এখন বঙ্গবন্ধুর বাংলাদেশে প্রতিক্রিয়াশীল কোনো অপশক্তি ধর্মকে অপব্যবহার করে সফল হবে না। সব ষড়যন্ত্র মোকাবিলা করে উন্নত দেশ গড়বেন জননেত্রী শেখ হাসিনা। দেশের এই উন্নয়ন-অগ্রযাত্রায় সরকারকে সহায়তা করবে সংগঠনের আদর্শ কর্মীরা।
সোমবার (১০ মে) দুপুরে সিংড়া উপজেলা মিলনায়তনে নিজস্ব অর্থায়নে উপজেলা আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের মধ্যে ঈদ উপহার ও খাদ্য সামগ্রী বিতরণকালে এ কথা বলেন তিনি।
সিংড়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি অ্যাডভোকেট ওহিদুর রহমান শেখের সভাপতিত্বে প্রতিমন্ত্রী বলেন, জননেত্রী শেখ হাসিনার দূরদর্শী নেতৃত্বে বাংলাদেশ এগিয়ে যাচ্ছে। দেশের মানুষের বর্তমান মাথাপিছু আয় দুই হাজার ৬৯ ডলার। আমাদের দেশের জিডিপির পরিধি ৩৪৮ বিলিয়ন ডলার। এদেশের সম্পদ লুট করেও পাকিস্তানের অর্থনীতি আমাদের চেয়ে অর্ধেক অবস্থানে।
তিনি বলেন, স্বাধীনতার সূবর্ণ জয়ন্তীতে বিভিন্ন রাষ্ট্র ও সরকার প্রধানরা এসেছেন এবং দেশের উন্নয়নে মুগ্ধ হয়েছেন। দেশের এই অগ্রযাত্রার ভূয়সী প্রশংসা করেছেন পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানসহ শতাধিক দেশের রাষ্ট্র ও সরকার প্রধান। দেশের ধারাবাহিক উন্নয়নের এই অগ্রযাত্রায় ২০৪১ সালে দেশ চলে যাবে উন্নত দেশের কাতারে।
পলক বলেন, ১৯৭৫ সালে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করা না হলে বাংলাদেশ অনেক আগেই উন্নত দেশের কাতারে চলে যেত। জনবান্ধব বঙ্গবন্ধু স্বাধীনতা অর্জনের পরে দেশের উন্নয়নের চিন্তা মাথায় রেখে দেশের জনগণের জন্যে অন্ন, বস্ত্র, বাসস্থান, শিক্ষা ও চিকিৎসাকে মৌলিক চাহিদা হিসেবে সংবিধানে অন্তর্ভুক্ত করেছিলেন। ৫০ বছর পরে জাতিসংঘ টেকসই উন্নয়নের কর্মপরিকল্পনায় বঙ্গবন্ধুর ওই সময়ের পাঁচটি মৌলিক চাহিদাকে জনগণের অধিকার হিসেবে সারাবিশ্বে বাস্তবায়নের নির্দেশনা দিয়েছে।
প্রতিমন্ত্রী বলেন, দেশের এই উন্নয়ন-অগ্রযাত্রাকে মেনে নিতে পারছে না দেশের স্বাধীনতাবিরোধী শক্তি। ঘাতক এই শক্তি ধর্মের দোহাই দিয়ে ভাষা আন্দোলন ও মুক্তিযুদ্ধের বিরোধিতা করেছিল, ৭৫ সালে বঙ্গবন্ধুকে সপরিবারে হত্যা করেছিল এবং দেশের সব আন্দোলন-সংগ্রামে বিরোধিতা করেছিল। এই দেশবিরোধী ষড়যন্ত্রকারীরা আবার নতুন করে সক্রিয় হয়ে উঠেছে। দেশের উন্নয়ন-অগ্রযাত্রাকে অব্যাহত রাখতে এই ষড়যন্ত্র সম্পর্কে সজাগ থাকতে দলীয় নেতাকর্মীদের আহ্বান জানান প্রতিমন্ত্রী।
তিনি আরো বলেন, সরকারকে শক্তিশালী করে সংগঠন। সংগঠনের প্রাণ দলের আদর্শ কর্মী। সংগ্রাম, সম্মেলন আর নির্বাচনের মাধ্যমে দল হয় সুসংহত। শক্তিশালী সংগঠন থাকার কারণে আওয়ামী লীগ বিগত ৭০ বছরে কখনো পরাজিত হয়নি। দলের নেতাকর্মীরা বিগত সময়ে কখনো ঘরে বসে থাকেনি, আন্দোলনে জীবনের মায়া করেনি। দলের এই কর্মীরাই শেখ হাসিনার উন্নয়ন-অগ্রযাত্রার সহায়ক শক্তি।
পলক আরো বলেন, আমেরিকা, ইউরোপসহ বিশ্বের উন্নত দেশগুলো করোনা সংক্রমণ পরিস্থিতিতে দিশেহারা হয়ে পড়েছে। কিন্তু শেখ হাসিনার দূরদর্শী নেতৃত্বে আমাদের দেশ করোনা সংক্রমণ পরিস্থিতি মোকাবিলা করছে। জীবন ও জীবিকার মধ্যে ভারসাম্য তৈরি করে পথ চলছি আমরা। দেশের চার কোটি মানুষের কাছে প্রধানমন্ত্রীর মানবিক সহায়তা পৌঁছে দেওয়া হয়েছে এবং ৮৬ লাখ মানুষ ঘরে বসে আড়াই হাজার টাকার অনুদান পেয়েছেন। করোনা সংক্রমণ পরিস্থিতি মোকাবিলা করে জননেত্রী শেখ হাসিনার বলিষ্ঠ নেতৃত্বে এগিয়ে যাবে দেশ।
অনুষ্ঠানে সিংড়া পৌরসভার মেয়র জান্নাতুল ফেরদৌসসহ অন্যান্য নেতারা উপস্থিত ছিলেন।
বাংলাদেশ সময়: ১৬১৩ ঘণ্টা, মে ১০, ২০২১
আরএ