ঢাকা: করোনার ভয়াবহতা না কমলে গতানুগতিক বাজেট করে লাভ নেই। লক্ষ্য হওয়া উচিত আগামী ছয় মাসের জন্য একটি অন্তর্বর্তীকালীন বাজেট করা।
শুক্রবার (২৮ মে) দুপুরে গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে ‘বিএনপির বাজেট ভাবনা’ শীর্ষক সংবাদ সম্মেলনে দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর একথা বলেন।
মির্জা ফখরুল বলেন, বিদায়ী অর্থ বছরেও বিএনপির পক্ষ থেকে অন্তর্বর্তীকালীন বাজেট করার দাবি জানিয়েছিলাম। কিন্তু বিশেষ করোনা বাজেট না দিয়ে ২০২০-২০২১ অর্থ বছরের জন্য দেওয়া হলো ৫ লাখ ৬৮ হাজার কোটি টাকার একটি গতানুগতিক অবাস্তবায়নযোগ্য বাজেট যা জাতিকে হতাশ করেছে। শেষ পর্যন্ত ওই বাজেটের কোনো লক্ষ্যই সেভাবে পূরণ হয়নি। না রাজস্ব আহরণে, না প্রক্ষেপণকৃত উন্নয়ন, প্রণোদনা ও সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচি বাস্তবায়নে।
তিনি বলেন, ২০১৯-২০ অর্থ বছরের প্রথম ১০ মাসে এডিপি বাস্তবায়ন হয় ৪৯ দশমিক ১৩ শতাংশ। আর চলতি অর্থ বছরে প্রথম ১০ মাসে ৪৯ দশমিক ০৯ শতাংশ বাস্তবায়ন হয়েছে। দুই মাসে খরচ করতে হবে ১ লাখ ৬ হাজার ৫৪২ কোটি টাকা। এমনিতেই বরাদ্দ কম, তার ওপর বরাদ্দ অর্থ ব্যয় করতে পারে না মন্ত্রণালয়। তাহলে এ বাজেটের অর্থ কী।
বিএনপি মহাসচিব বলেন, বর্তমান অনির্বাচিত সরকার এবারও ২০২১-২২ এর জন্য ৬ লাখ ২ হাজার ৮৮০ কোটি টাকার এক বিশাল অবাস্তবায়নযোগ্য, উচ্চাভিলাষী গতানুগতিক বাজেট পেশ করতে যাচ্ছে বলে সংবাদ মাধ্যমে জানা যায়। বিগত বছরের অভিজ্ঞতা কিংবা পরিবর্তিত বিশ্ব পরিস্থিতিকে আমলেই নেয়নি সরকার।
‘পরিকল্পনামন্ত্রী দাবি করেছেন এ অর্থ বছরে মাথাপিছু আয় নাকি ২৪৩ ডলার বেড়ে বর্তমানে ২২২৭ মার্কিন ডলারে দাঁড়িয়েছে। মানুষের অর্থনৈতিক জীবন বিপর্যয়ের যে চিত্র চারিদিকে, তাতে এটা প্রতিভাত হয় না। বিশ্বব্যাংকের এক গবেষণায় দেখা গেছে মানুষের আয় কমেছে ৩৭ শতাংশ। বেতননির্ভর মানুষের আয় কমেছে ৪৯ শতাংশ। দেশে গত কোভিড সময়ে ২ কোটি ৪৫ লাখ নতুন দারিদ্র সৃষ্টি হয়েছে। তাহলে মাথাপিছু আয় বেড়েছে কার?’
তিনি বলেন, আসছে বাজেটেও কালো টাকা সাদা করার সুযোগ রাখা হচ্ছে। অর্থমন্ত্রী বলেছেন, যতদিন অপ্রদর্শিত আয় থাকবে, ততদিন এ সুযোগ থাকবে। অর্থাৎ হরিলুট করে সঞ্চিত কালো টাকা জায়েজ করার দরজা অবারিত করে দিলেন অর্থমন্ত্রী, যা অনৈতিক ও ন্যায়নীতি মেনে আইন পালনকারী নাগরিকদের প্রতি অবিচার।
দীর্ঘ দেড় ঘণ্টার সংবাদ সম্মেলনে বিএনপির মহাসচিব ২৮ পাতার একটি বাজেট ভাবনা তুলে ধরেন। এসময় দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, নজরুল ইসলাম খান, ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু, সাংগঠনিক সম্পাদক সৈয়দ এমরান সালেহ প্রিন্স, শামা ওবায়েদ উপস্থিত ছিলেন। এছাড়া অনলাইনে দলের ভাইস চেয়ারম্যান, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য ও সিনিয়র নেতারা যুক্ত ছিলেন।
বাংলাদেশ সময়: ১৩৪৪ ঘণ্টা, মে ২৮, ২০২১
এমএইচ/এএ