ঢাকা, মঙ্গলবার, ১১ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৬ নভেম্বর ২০২৪, ২৪ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

রাজনীতি

আন্দোলন ঠেকাতে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ রেখেছে: মির্জা ফখরুল

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৪৪০ ঘণ্টা, আগস্ট ২৮, ২০২১
আন্দোলন ঠেকাতে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ রেখেছে: মির্জা ফখরুল

ঢাকা: করোনা নয়, শিশুদের নিরাপত্তার কারণেও নয় বরং বিরোধী দলের আন্দোলন ঠেকাতেই সরকার শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ রেখেছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

শনিবার (২৮ আগস্ট) বেলা সাড়ে ১১টার দিকে রাজধানীর গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এ মন্তব্য করেন।

বিশ্ববিদ্যালয় খোলার পর অস্থিতিশীলতা সৃষ্টির পাঁয়তারা চলছে বলে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের যে বক্তব্য দিয়েছেন সে বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করলে মির্জা ফখরুল বলেন, তাহলে সেজন্যই তারা এতদিন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ রেখেছে। অর্থাৎ করোনার কারণে নয়, শিশুদের নিরাপত্তার কারণে নয়, আন্দোলনকে ঠেকানোর জন্যই তারা শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ করে রেখেছে। তার কথায় এটাই প্রমাণিত হয়েছে।

তিনি বলেন, শুধু দেশনেত্রী খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে নয় সারাদেশে বিএনপি নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে যেসব মিথ্যা মামলা দায়ের করা হয়েছিল, সেই মামলাগুলোকে আবার সামনে নিয়ে আসার প্রক্রিয়া শুরু করেছে। এগুলো হলো তাদের নীল নকশা। বিএনপিকে রাজনীতি ও নির্বাচন থেকে দূরে সরিয়ে রাখা, সামনে দুই বছর পরে যে নির্বাচন হবে তার আগেই বিএনপি নেতাকর্মীদের বিশেষ করে সিনিয়র নেতাদের কারাগারে পাঠিয়ে দেওয়ার একটা নীল নকশা ও চক্রান্ত শুরু করেছে বলে আমরা মনে করছি।

অপর এক প্রশ্নের জবাবে মির্জা ফখরুল বলেন, প্রধানমন্ত্রী কখন কি বক্তব্য দেন, কীভাবে দেন, কেন দেন এটা এখন পর্য্ন্ত আমাদের বোধগম্য হয়নি। আপনাদের মনে আছে উনারা যখন বিরোধী দলে ছিলেন তখন কোর্ট একটা কমেন্ট করেছিলেন। গতকাল (শুক্রবার) তিনি যেসব বক্তব্য দিয়েছেন এটা কোনো রুচিবান মানুষ বলতে পারে বলে আমি মনে করি না। আমার কাছে মনে হয়েছে এটা একটা রুচিহীন, কদর্য মিথ্যাচার ছাড়া আর কিছু নয়। এ ধরনের বক্তব্য মানুষের ধর্মীও অনুভূতিতে আঘাত করে। আমাদের নেতার দাফন হয়েছে, লাখ লাখ লোক জানাজায় শরিক হয়েছে, তৎকালীন সেনা অধিনায়ক এরশাদ সাহেব নিজে তার বডি ক্যারি করেছেন, এটাতো ক্রিস্টাল ক্লিয়ার, এর চেয়ে বড় সত্য আর কিছু হতে পারে না। সেখানে এ ধরনের ইস্যুগুলোকে তুলে নিয়ে আসা। তারা যে কতটা রাজনীতি শূন্য হয়ে গেছে দেউলিয়া হয়ে গেছে, এটাই তার প্রমাণ। মূল জায়গায় তারা আসে না, নির্বাচন কীভাবে করবে, গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠানগুলোকে কীভাবে শক্তিশালী করবে, কীভাবে মানুষের অধিকারগুলো ফিরিয়ে দেবে, ভোটের অধিকার ফিরিয়ে দেবে, সেই কথাগুলোর কখনও তারা উত্তর দেয় না।

মির্জা ফখরুল বলেন, আমাদের ছবি দেখাতে বলে। এসবতো রাজনীতি না। আপনি করোনায় মানুষের জন্য কি করেছেন সেটা বলেন। যারা দিন আনে দিন খায় তাদের জন্য কি করেছেন সেটা বলেন। মানুষ কেন দরিদ্র থেকে দরিদ্র হচ্ছে সে কথা বলেন। একদিকে আওয়ামী লীগের প্রত্যেকটি মানুষ ধনি থেকে ধনি হচ্ছে। বিদেশে পাচার করছে। সমাজে এমন একটা অস্থিতিশীলতা সৃষ্টি করেছে অসামাজিক কার্য্কলাপে ছেয়ে গেছে। ইট ইজ গোয়িং টুবি এ ফেইল স্টেট। সেদিকে তাদের কোনো খবর নেই, তারা শুধু নন ইস্যুকে ইস্যু করে জনগণকে বিভ্রান্ত করার চেষ্টা করছে।

তিনি বলেন, কালকে প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্যের একটা অংশ খুব সুন্দর এসেছে। উনি নিজেই আমাদের কথার সত্যতা প্রমাণ করেছেন। কোথায় ছিলেন তোফায়েল আহমেদ, কোথায় ছিলেন রাজ্জাক। সবাইকে ফোন করেছেন, তিনি কোনো উত্তর পাননি। সেনাবাহিনীর প্রধানকে বলেছেন সেখান থেকে উত্তর পাননি। অর্থাৎ ‘সি হারসেলফ ন্যারেটেড দ্য ট্রুথ’।

জিয়াউর রহমানের করব সম্পর্কে যে কথাগুলো বলেছেন এসব কথা ধর্মপ্রাণ মানুষের মধ্যে আঘাত এনেছে এবং সাধারণ মানুষও ভালোভাবে নেয়নি বলেও দাবি করেন মির্জা ফখরুল।  

তিনি বলেন, জিয়াউর রহমানতো এ দেশের মানুষের হৃদয়ের কাছে আছে। আপনারা যদি কখনও শবে বরাতের রাতে মাজারের দিকে যান, দেখবেন যে সাধারণ মানুষ এসে জিয়ারত করছে। উনিতো সাধারণ মানুষের মনের মধ্যে আছেন। ওনাকে নিয়ে এভাবে টানলে শেখ মুজিবুর রহমানকেও টানা হয়। এভাবে আমরা করতে চাই না। উই ডোনট ওয়ান্ট টু ডু দ্যাট। এরা আমাদের সবাই শ্রদ্ধেয় নেতা। তাদের সেই জায়গাতে রাখা উচিত। এ স্বাধীনতার ক্ষেত্রে যাদের অবদান আছে যারা প্রাণ বিসর্জন দিয়েছেন, মুক্তিযোদ্ধা রাজনৈতিক নেতা তাদের সম্পর্কে এ সমস্ত নোংরা কথা যখন বলা হয় তখন বোঝা যায় তারা রাজনৈতিকভাবে কতটা দেউলিয়া হয়ে গেছে। তাদের আর কোনো রাজনীতি নেই। মানুষের অধিকার হরণ করেছে, ৭১ এর স্বাধীনতাযুদ্ধের যে চেতনার কথা তারা সব সময় বলেন সেই চেতনাকে তারা গিলে খেয়ে ফেলেছে। সংবিধানকে তচনছ করে কেটে ফেলেছে। বিচার বিভাগকে ধ্বংস করে দিয়েছে। আমলাতন্ত্রকে নির্যাতন, নিপিড়ন, লুণ্ঠনের যন্ত্রে পরিণত করেছেন। সেই জায়গায় আজকে তারা এ সমস্ত কথা বলে মানুষকে বিভ্রান্ত করতে চায়।

আরও পড়ুন>>

>> প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্যের নিন্দা জানিয়েছে বিএনপি

বাংলাদেশ সময়: ১৪৪১ ঘণ্টা, আগস্ট ২৮, ২০২১
এমএইচ/আরআইএস

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।